শেখ বাদশা, আশাশুনি : আশাশুনি উপজেলার কাদাকাটিতে বিস্ফড়ক দ্রব্য ও গুলি রেখে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেসে গেলো পুলিশের কাছে। বুধবার গভীর রাতে আশাশুনি উপজেলার কাদাকাটি ইউনিয়নের কাদাকাটি গ্রামের মফিজুল সরদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিন ও থানা সূত্রে জানাগেছে, বুধবার রাতে অজ্ঞাত মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন পেয়ে পুলিশ জানতে পারে কাদাকাটি একটি বাড়ীতে হাতবোমা ও রাইফেলের গুলি আমদানী করা হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে থানা পুলিশ ঐ রাতেই কাদাকাটি গ্রামের মফিজুল সরদার বাড়িতে তল্লাশী চালায়। মফিজুল সরদারের স্ত্রী পারভিন আক্তার জানান আমার স্বামী বাড়ীতে না থাকায় রাতে দরজা জানালা বন্ধ করে আমার শশুর, শ্বাশুড়ী এবং আমি পৃথক পৃথক ঘরে ঘুমিয়ে পড়ি। গভীর রাতে আমাদের বাড়িতে ৫ থেকে ৭জন পুলিশ আসে।
এসময় পুলিশের ডাকে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলে তারা আমাকে বলে আপনাদের বাড়ী সার্চ করবো। আপনাদের বাড়ীতে বিস্ফড়ক দ্রব্য ও অস্ত্র আছে। বিষয়টি শুনে আমরা হতভম্ব হয়ে যাই। এসময় থানা-পুলিশ বাড়ী ঘর তল্লাশি চালিয়ে কিছুই পায় না। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও যখন কোন কিছুই পাওয়া যায়নি, তখন থানা পুলিশ তথ্য দাতা মিকাইল ও ইসরাফিলকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে আসে।
এ সময় তাদেরকে চাপ প্রয়োগ করলে তারা নিজেরাই আগে থেকে লুকিয়ে রাখা বোমা ও বন্দুকের গুলি বের করে। পুলিশ সাথে সাথে বোমা পানিতে রেখে নিষ্ক্রিয় করে এবং পুলিশ মিকাইলকে আটক করলেও অবস্থার বেগতিক দেখে ইসরাফিল কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় বলে জানান গৃহবধু পারভীন। তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত মিকাইল ও ইসরাফিলের সাথে আমাদের জলমহল জমি নিয়ে দ্বন্দ রয়েছে।
কাটাকাটিতে সাড়ে চার শত বিঘা জলমহাল জমি আমার স্বামীর বড় ভাই ইজারা পেয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী সকলেই হারির টাকা পরিশোধ করলেও মিকাইল ও ইসরাফিল হারির টাকা না দিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা শুরু করে। তারই সূত্র ধরে তারা আমাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে আমাদের অজান্তে আমাদের বাড়িতে এসমস্ত অবৈধ জিনিস পত্র রেখে যায়। যা থানা পুলিশ তাদের মাধ্যমেই উদ্ধার করে এবং প্রকৃত আসামিদের আটক করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য বিপ্লব কুমার রায় জানান রাতে পুলিশ এসে মফিজুলের বাড়ি থেকে তল্লাশি করে প্রথমে কিছুই পায় না। পরে তথ্যদাতা মিকাইল ও ইসরাফিল বোমা ও গুলি উদ্ধার করে। সকালে মফিজুলের বাড়ীতে দুষ্কৃতিকারী কর্তৃক আর কোন অবৈধ মালামাল রেখেছে কিনা সে বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য, গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে তল্লাশি চালানো হয়। তবে আর কিছুই পাওয়া যায়নি বলে সরেজমিন দেখা যায়।
এ ব্যাপারে আশাশুনি থানায় পুলিশ বাদী হয়ে বিস্ফোরক ও অস্ত্র মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং ১৫. ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে আশাশুনি থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মমিনুল ইসলাম পিপিএম বলেন প্রতিপক্ষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে এঘটনা সাজানো হয়েছিলো। পুলিশ মিকাইল সরদারকে গ্রেফতার করেছে এবং অপর আসামী ইসরাফিল ও অজ্ঞাতরা পলাতক রয়েছে।
অতিদ্রæত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে এবং বৃহস্পতিবার গ্রেফতারকৃত আসামীকে বিচারার্থে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এহেন ঘটনায় একাবাসী হতভম্ব হয়ে পড়েছে। ঘটনাটি এলাকার টপ অবদা নিউজ এ পরিনত হয়েছে।