শেখ সিদ্দিকুর রহমান : ফুটবলার হতে চাওয়া’ সাতক্ষীরার সাবিনা জয় করলেন দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ফুটবল কাপ। গতকাল সাবিনা সাতক্ষীরায় ফিরলো বিজয়িনীর বেশে। সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের বড় পারফরমেন্সে সাতক্ষীরার ক্রীড়াঙ্গনসহ জেলাবাসী গর্বিত।
এর আগে ক্রিকেটে যেমন সৌম্য-মোস্তাফিজকে নিয়ে আনন্দের জোয়ারে ভেসেছিল সাতক্ষীরাবাসী। তেমনি সাবিনার বাড়িতে চলছে আনন্দের জোয়ার। সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল এলাকায় বসবাস করেন সাবিনা খাতুন। তাঁর বাবার গ্রামের বাড়ি ছিল আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের নাসিমাবাদ গ্রামে।
তার জয়ের পরপরই তাদের বাড়িতে ফুল ও মিষ্টি নিয়ে গিয়েছেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির, পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান, জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আরিফ হাসান প্রিন্সসহ সাজেক্রী ও বিএফএ’র নেতৃবৃন্দ। সাতক্ষীরার সাবিনা-মাসুরাসহ সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে আগামী দিনের সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করেন। সাবিনার পরিবারে পাঁচ বোনের মধ্যে সাবিনা চতুর্থ।
এছাড়াও বাড়িতে রয়েছেন মা মমতাজ বেগম। বাবা সৈয়দ আলী গাজী মারা গেছেন প্রায় দুই বছর আগে। সাবিনার সাফ জয়ের প্রতিক্রিয়ায় তার বড় বোন সালমা খাতুন বলেন, আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। সাবিনা দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। সেরা গোলদাতা ও সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছে। সাবিনা সাতাক্ষীরার গর্ব, দেশের গর্ব। সাবিনার সেজো বোন শিরিনা খাতুন বলেন, ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলা করতো সাবিনা।
ইচ্ছা ছিল ফুটবলার হবে। প্রথম দিকে বাসা থেকে বাধা দিলেও পরে যখন ভালো খেলতে লাগলো তখন আর কেউ বাধা দেয়নি। এখন আমাদের মুখ উজ্জল করেছে। সাবিনার জন্য সবার কাছে আমরা দোয়া চাই। সাতক্ষীরা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ নাসেরুল হক ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আরিফ হাসান প্রিন্স বলেন, সাতক্ষীরার মানুষদের মাঝে ধর্মান্ধতা ছিল। মেয়ে মানুষ খেলবে কেনো!
আপনারা জাহান্নামে যাবেন- এসব বলে পিছিয়ে দেয়া হয়। অথচ আজ মুসলিম অনেক দেশগুলোতে নারী দলের ফুটবল দল রয়েছে তারা খেলছে। সাতক্ষীরার সাবিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দল চ্যাম্পিয়ান হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। সাতক্ষীরাবাসী এ জয়ে আনন্দিত।
তিনি আরও বলেন, সাবিনা দুটি হ্যাট্রিকসহ আটটি গোল করে সেরা গোলদাতা ও সেরা খেলোয়াড় হয়েছে। এটি ইতিহাস হয়ে থাকলো। আমরা মনে করি এটি ঐতিহাসিক বিজয়। সাবিনা গতকাল ২৩ সেপ্টেম্বর বেলা এগারোটা নাগাদ খোলা গাড়িতে সাতক্ষীরায় ফিরলে জেলা ক্রীড়া সংস্থার নের্তৃবৃন্দ ও ক্রীড়ানুরাগীরা প্রায় অর্ধ শতাধিক মটর বাইক নিয়ে তাকে প্রটোকল সহকারে সংবর্ধনা দিয়ে তার বাড়িতে পৌছে দেন। যেহেতু সাবিনা এখন শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে এখন সে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে খেলাধুলার সুযোগ পাবে বলে সরকার, ক্রীড়া সংস্থা ও তার পরিবারের প্রত্যাশা।