দেবহাটা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমানে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন চেয়ারম্যান, সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদের প্রার্থীরা। দিনভর সভা-সমাবেশ, মতবিনিময়, গণসংযোগের পাশাপাশি প্রার্থীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রæতি। ইতোমধ্যেই স্ব স্ব প্রতীক চিহ্ন বরাদ্দ পেয়েছেন জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিন’টি পদে প্রতিদ্বন্দীতায় অংশ নেয়া ৪০জন প্রার্থী।
সাত’টি উপজেলা, দু’টি পৌরসভা এবং আটাত্তর’টি ইউনিয়ন জুড়ে বেষ্টিত সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের নির্বাচনী এলাকায় এখন অব্যহতভাবে চলছে প্রার্থীদের পদচারণা। এরইমধ্যে নির্বাচনের প্রার্থীতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষনা দিলেন নির্বাচনী এলাকা ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দীতায় অংশ নেয়া তালা প্রতিকের প্রার্থী ও দেবহাটা সদরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম ?
হাতি প্রতীকের প্রার্থী এবং ওই ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য আলহাজ্ব আল ফেরদাউস আলফা’র সাথে প্রতিদ্বন্দীতায় নেমেছিলেন তিনি। রবিবার নজরুল ইসলাম প্রার্থীতা থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে তার স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতি দেবহাটা প্রেসক্লাবে প্রেরণ করা হয়েছে। বিবৃতিতে প্রার্থীতা থেকে সরে দাঁড়ানোর কারন হিসেবে শারিরীক অসুস্থতা, বয়সের ভারসম্যহীনতা ও গতবারের তুলনায় এবারের বৃহৎ নির্বাচনী এলাকাকে তুলে ধরেছেন তিনি।
একইসাথে প্রার্থীতা থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য তার নির্বাচনী এলাকা ভোটারবৃন্দ অর্থাৎ সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভোমরা, আলীপুর, দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া, পারুলিয়া, সখিপুর, নওয়াপাড়া, দেবহাটা সদর, কালীগঞ্জের নলতা, আশাশুনীর ফিংড়ি, ধুলিহর ও ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিগণের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
নজরুল ইসলামের স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘গেল ২৫ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার শেষ তারিখ ছিল কিন্তু আমি সময়মতো উক্ত অফিসে হাজির হতে পারিনি। সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য ও আমার প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী আলহাজ্ব আল ফেরদাউস আলফা আমার ছোট ভাই। তার প্রতি ¯েœহ রেখে তার সাথে প্রতিদ্বন্দীতা করা আমার উচিৎ হবেনা।’ এদিকে রাতারাতি সদস্য পদের প্রার্থী আল ফেরদাউস আলফাকে প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী নজরুল ইসলাম তার ভাই আখ্যা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষনা দেয়ায় নির্বাচনী এলাকায় ভোটার সহ সর্ব মহলে তাকে নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
কেউ কেউ বলছেন, টাকায় বিক্রি হয়েছেন তিনি; তাও আবার নাকি মাত্র এক লাখ বিশ হাজারে! এব্যাপারে জানতে নজরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি কিছুটা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় প্রতিপক্ষ প্রার্থীর থেকে অর্থ লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে ইতস্তত স্বরে ‘স্বাক্ষাতে কথা হবে’ বলে তড়িঘড়ি করে ফোনটি কেটে দেন তিনি।
এদিকে প্রতীক বরাদ্দের পর অর্থ লেনদেনের বিনিময়ে প্রার্থীতা থেকে সরে আসার বিষয়ে জানতে চাইলে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে আসার ঘোষনা দিলেও সরকারী ভাবে তার প্রতীক বাদ রেখে ভোট করার সুযোগ নেই। নিয়ম অনুযায়ী ওই পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটাররা কাকে ভোট দিবে সেটা তাদের ব্যাপার। প্রার্থীতা থেকে সরে আসার ঘোষনা দেয়ার পরও যদি ওই প্রার্থী বেশি ভোট পান তাহলে তাকেই বিজয়ী ঘোষনা করা হবে। পরে তিনি যেকোন সময়ে পদত্যাগ করতে পারেন।