বুধবার , ৫ অক্টোবর ২০২২ | ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. আইন আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. আশাশুনি
  4. কলারোয়া
  5. কালিগঞ্জ
  6. কৃষি
  7. খুলনা
  8. খেলা
  9. তালা
  10. দেবহাটা
  11. বিনোদন
  12. যশোর
  13. শিক্ষা
  14. শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  15. শ্যামনগর

দেখা হলো তবে কথা হলো না…

প্রতিবেদক
satkhirar sakal
অক্টোবর ৫, ২০২২ ৫:৪১ অপরাহ্ণ

বিসর্জনের জলতরঙ্গে ধুয়েমুছে সাফ দুই বাংলার বিভেদরেখা
বিশেষ প্রতিনিধি : এপারের আযানের ধ্বনী ওপারে যায়, ওপারের শংখ ধ্বনী আসে এপারে। এপারের পাখি যায় ওপারে, ওপারের পাখি আসে এপারে। সীমান্ত নদী ইছামতির এপারের মাছ যায় ওপারে, আবার ওপারের মাছ এপারে। এভাবেই আবহমান কাল থেকে চলে আসছিল সম্প্রীতির সংস্কৃতি। প্রতি বছর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে সীমান্ত নদী ইছামতির বুকে ভাসতো দুই বাংলার মিলন মেলার তরী।

কিন্তু আগের মতো আর দুই বাংলার মানুষ এখন একসঙ্গে বিজয়ার উৎসবে মাততে পারেন না। কিন্তু তাঁদের আবেগ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় আজও। তাই এপার বাংলার বিসর্জনের দিনে ওপার বাংলার মানুষ ভিড় জমান ইছামতীর ওপারে। আর ওপার বাংলার বিসর্জনেও এপার বাংলায় উপস্থিতি থাকে তাৎপর্যপূর্ণ। মাঝে বয়ে চলেছে ইছামতি।

এভাবেই দুই বাংলার মানুষের সম্প্রীতির সেতুবন্ধনের ঐতিহ্য তুলেধরে দেবহাটা উপজেলার বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওহাব বলেন, এপারে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা। ওপারে ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ। মায়ের বিসর্জন লগ্নে কাছাকাছি দুই বাংলা। প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতে ইছামতির পাড়ে ভিড় দুই বাংলার মানুষেরই। নৌকায় চড়ে বিসর্জন দেখলেন অনেকে। তবে এবার ওপার বাংলার মানুষের ইছামতিতে নামা নিষেধ ছিল। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে দুই বাংলার মানুষের আবেগ।

সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা: সুব্রত ঘোষ বলেন, ভৌগলিক গÐি দিয়ে কি রোখা যায় আবেগ। নদীর জল কাছে এনে দিয়েছে দুই বাংলাকে। ৩০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে দুর্গাপুজোর বিসর্জনের এই রেওয়াজ, তা কি এক নিয়মে বেঁধে রাখা যায়?

বিসর্জনেরই লগ্নেই মিলেমিশে একাকার সীমান্ত-পারের আবেগ। বিজিবি-বিএসএফ’র কড়া নজরদারি সত্তে¡ও বিসর্জনের জলতরঙ্গে একাকার দুই বাংলার মন। মনের মিলনে নজরদারি চালায় কার সাধ্যি!

তিনি আরও বলেন, ২০১১ সাল পর্যন্ত এই দিনটি ছিল দুই বাংলার মানুষের মিলেমিশে এক হয়ে যাওয়ার দিন। এই বিশেষ দিনটিতে দুই বাংলার মানুষ একত্র হতে পারতেন। কিন্তু ২০১১ সালে প্রচুর বাংলাদেশি নাগরিক এই সুযোগে ভারতে ঢুকে যায় বলে অভিযোগ ওঠে। তারপর থেকেই দুই বাংলার মানুষ এখন একসঙ্গে বিজয়া পালনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় তাই একসঙ্গে দুই বাংলার প্রতিমা বিসর্জনের দৃশ্য আর দেখা যায় না।

এদিকে বিজয়া দশমীতে শ্যামনগরের দুর্গাবাটি খোলপেটুয়া নদীর পাড়ে নামে হাজারো মানুষের ঢল। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঢাক, কাঁশের বাদ্য-বাজনা মধ্য দিয়ে রাত্রি উজ্জ্বল করা আরতি ও পূজারি-ভক্তদের পূজা-অর্চনায় কেবলই দেবী দুর্গার বিদায়ের আয়োজন।

বুধবার শুভ বিজয়া দশমীতে শ্যামনগর বুড়িগোয়ালিনী দুর্গাবাটি খোলপেটুয়া নদীর বুকে শতশত ট্রলার ভাসতে দেখা যায়। গত পাঁচদিন পূজা উদযাপন শেষে সব পূজামন্ডপেই নামে বিষাদের ছায়া।

সাতক্ষীরা নাগরিক কমিটির আহŸায়ক শিক্ষাবিদ মো: আনিসুর রহিম বলেন, বিগত কয়েক বছর সাতক্ষীরার দেবহাটায় ইছামতি নদীতে ভাসতো দুই বাংলার মিলনমেলার তরী। কিন্তু ২০১৩ সালের পর থেকে আর সেই তরী ভাসে না। নিজ নিজ দেশের সীমান্ত রেখায় সবাই প্রতিমা বিসর্জন দেয়। দুই বাংলার মানুষের একই নদীর মোহনায় দেখা হয় কিন্তু কথা হয় না।

তবে দু’দেশের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা থাকায় শুরু হয় শ্যামনগর উপজেলার দুর্গাবাটি খোলপেটুয়া নদীর বুকে ভাসে আনন্দ তরী। পাড়ে জমা হয় হাজার হাজার মানুষ। প্রতিমা বিসর্জনে মেতে ওঠেন মানুষ। বিজয়া দশমীতে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানোর দিন পার করেছে সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো মানুষ।

 

সর্বশেষ - সাতক্ষীরা সদর