আলতাফ হোসেন বাবু : সাতক্ষীরার কৃতি সন্তান, সাতক্ষীরার গর্ব খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক সার্জিক্যাল অনকোলজি বিশিষ্ট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মনোয়ার হোসেন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের কোটি মানুষের স্বল্প খরচে ক্যান্সারের মতো মরনব্যাধি থেকে সাধারণ মানুষের জীবন বাঁচাতে চাকরীর পাশাপাশি সেবার মাধ্যমে মানুষের মাঝে হাজারো বছর বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেছেন তিনি। ডাক্তার মনোয়ার হোসেন সাতক্ষীরা ক্যান্সার কেয়ার এন্ড ওয়েলফেয়ার সেন্টার এর মহাসচিব হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন।
তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে এবং কাঙ্খিত লক্ষে পৌছাতে তিনি সাতক্ষীরায় একটি ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মানের লক্ষে ইতোমধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিনেরপোতা (ঋশিল্পীর সামনে) ৪বিঘা জমি ক্রয় করেছেন। এবং ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণে তিনি ভবনের নকশার কাজ সম্পন্ন করেছেন। শনিবার সাতক্ষীরার এই কৃতি সন্তান বিশিষ্ট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. মনোয়ার হোসেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাশ্ববর্তি জমি সক্রান্ত বিষয়ে একটি আবেগঘন স্টাটাস দিয়েছেন।
ওই স্টাটাসটি পড়ে শনিবার সারাদিন সাতক্ষীরার হাজারো পাঠক জনৈক ব্যক্তির প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে পাঠকদের নিজ নিজ ফেসবুক আইডি থেকে ডা. মনোয়ার হোসেন কে সাহস যোগাচ্ছেন। একই সাথে ডা. মনোয়ার হোসন’র স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন সাতক্ষীরাবাসী। সাতক্ষীরার কৃতি সন্তান, সাতক্ষীরার গর্ব খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক সার্জিক্যাল অনকোলজি বিশিষ্ট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মনোয়ার হোসেন’র আবেগঘন স্টাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হলো…
“বিনেরপোতায় সাতক্ষীরা ক্যান্সার হাসপাতালের জন্য নির্দিষ্ট জমির রাস্তার দুই পার্শ্বে দুই পক্ষের কয়েকশতক জমি আছে, যেটা তারা আমাদেরকে বারবার ন্যায্যমূল্যে দেওয়ার কথা বলেও দিচ্ছিলো না। গতপরশু মিটিং শেষে সাইট পরিদর্শনে গিয়ে শুনলাম জমি বিক্রি হয়ে গিয়েছে। আমাদের না জানিয়ে পাচিল দেওয়ার কাজ শুরু করে দিয়েছে রাতরাতি।
জমির ক্রেতাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলাম, সারা সাতক্ষীরায় এতো জায়গা থাকতে এই ছয় শতক জমি কিনলেন কেনো? অবলীলায় জানাল, এখানে ক্যান্সার হাসপাতাল হলে জমির দাম বাড়বে তাই সে কিনেছে। বাড়ি কোথায় জানতে চাইলে, জানাল, পাইকগাছা, খুলনা। উনি সাতক্ষীরায় একটা এনজিও চালান। তাকে বললাম, সাতক্ষীরার লোক হলে এই কাজ আপনি করতে পারতেন না।
যাই হোক মনে খুব কষ্ট পেয়েছি। ২০০৮ সালে এফসিপিএস পাশ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসাবে কাজ করছি, আজও সাতক্ষীরাসহ দেশের কোথাও নিজের জন্য বাড়ি, ফ্লাট কিছুই করিনি। সামর্থ্য থাকা সত্বেও নিজেকে ঠিকানাহীন করে রেখেছি। আমার সমস্ত সঞ্চয় দিয়ে কয়েক বছর আগে এই জমি কেনা, আর এখন প্রস্তুতি নিয়ে হাসপাতালের কাজ শুরু করতে চাচ্ছিলাম, কিন্তু মনটা ভেঙে গেলো।
এই কাজটা করতে গিয়ে হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছি এদেশের জনগণের মনমানসিকতা। যেখানে পশ্চিমবঙ্গের ঠাকুরপুকুর ক্যান্সার হাসপাতালের পুরো জমিটাই দানে পাওয়া, সেখানে আমি ধান্দাবাজি সামলাতে অস্থির, একটু সহানুভূতি, সহযোগিতার বালাই নেই।
জেলা শহরে মূলতঃ নি¤œবিত্তের রুগিরা চিকিৎসা নেন, এখানে ক্যান্সার চিকিৎসার লাভজনক প্রতিষ্ঠান করা প্রায় অসম্ভব। সেই অসম্ভব মিশনেও এই উৎপাত।
সৎ, সচেতন সাতক্ষীরার জনগণ, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন সবার সহযোগিতা চাই।
গত দুই রাত ঘুমাতে পারিনি”।