ডেস্ক রিপোর্ট : বাগেরহাটের একটি পরিবার নয় সন্তানকে নিয়ে বিনা পাসপোর্টে ভারতে যাওয়ার প্রাক্কালে প্রশাসনের বাধার মুখে ভোমরা থেকে সাতক্ষীরা সদর থানায় নিয়ে আসা হয়।
সদর থানায় জিজ্ঞাবাদের পাশাপাশি তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করে ষাট গম্বুজ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান বাচ্চুর মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে, স্থানীয় চেয়ারম্যান নিজ এলাকায় ওই অসহায় পরিবারের সদস্যদের পাঠিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন। এসময় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তাদেরকে বাগেরহাটে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু এনামুল হকের কাছে কোন অর্থ না থাকার কারনে তিনি দিশেহারা হয়ে সাতক্ষীরার সুলতানপুর বাজারের একটি হলদি মিলের বারান্দায় স্ত্রী ও নয় সন্তানকে নিয়ে ৫ দিন মানবেতর দিন কাটান।
তাদের ওই মানবেতর দিন কাটানোর বিষয়টি সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড় বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মানবধিকারকর্মী ও সাতক্ষীরার সকালের বিশেষ প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম জানতে পেরে বড় বাজার কাঁচা ও পাকামাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বাবুকে সাথে নিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় নিয়ে অসহায় ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ান। পরে ব্যবসায়ী মানবধিকারকর্মী মনিরুল ইসলাম সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সজীব খান কে অবহিত করেন।
বিষয়টি পুলিশ কর্মকর্তা ব্যক্তিগত ভাবে মাথায় নিয়ে তাদেরকে এলাকায় নিরাপদে পৌঁছে দিতে নিজ তহবিল থেকে আর্থিক সহযোগিতা করেন। এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সজীব খান বাগেরহাট ষাট গম্বুজ ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেন এবং তাদের এলাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। গতকাল মঙ্গলবার তাদেরকে বাগেরহাটে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ অক্টোবর বাগেরহাট জেলার ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের সায়রা গ্রামের শেখ জহিরউদ্দীনের ছেলে মো: এনামুল হক(৫৫) জীবিকা নির্বাহের জন্য তার স্ত্রী ও নয় সন্তানসহ ভারতে যেতে ভোমরা স্থল বন্দরে পৌঁছালে আইন শৃংখলা বাহিনীর বাধার মুখে পড়েন। এবং তাদেরকে আটক না করে ফেরত পাঠালে তারা সাতক্ষীরা শহরের বড় বাজার এলে বাজারের ব্যবসায়ীরা একটি দোকানের পিছনে তাদের থাকার ব্যবস্থা করেন।
ইতোমধ্যে বিষয়টি সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জিহাদ মো. ফকরুল আলম খান কে অবহিত করলে তিনি এনামুল হক ও তার স্ত্রীর আইডি কার্ড দেখে বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ যোগাযোগ করেন এবং তাদেরকে সেখানে পাঠানো হচ্ছে বলে জানানো হয়।
এনামুল হক ও তার পরিবারের অসহায়ত্বের বিষয়টি সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সজীব খান গভীরভাবে অনুধাবন করে মানবিক দিক বিবেচনা করে ষাট গম্বুজ এলাকার ইউপি চেয়ারম্যানকে একটি খাস জায়গায় বসবাস করার সুযোগ ও সার্বিক সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান। গতকাল বিকেলে ষাট গম¦ুজ ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে মুঠো ফোনে নিশ্চিত হওয়া গেছে তারা বাগেরহাটে পৌছেছে এবং আগামীকাল তাদেরকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে উপস্থিত করিয়ে বাসস্থানের জন্য আবেদন জানানো হবে।