আলতাফ হোসেন বাবু : সাতক্ষীরায় মানবাধিকারের ক্ষেত্রে আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে অগ্রগতি হয়নি বরং অবন্নতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) এর এইচআরডি নেটওয়ার্ক সদস্যরা। গত তিন মাসে জেলায় ৯টি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে ৬১জনের। এর মধ্যে পুলিশ অপমৃত্যু সন্দেহে ১৯টি মরহেদ উদ্ধার করেছে। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে এ রিপোর্ট প্রস্তুত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে জানা গেছে, জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ১২জন, বজ্রপাতে ৪জন, বিদ্যুৎপৃষ্টে ৪ জন, পানিতে ডুবে মারা গেছে ১০জন শিশু। এছাড়া শ্বাস নালীতে খাদ্য আটকে ২ শিশু, ভুল চিকিৎসায় ও অবহেলায় দুই শিশু, ছাদ থেকে পড়ে ১ জন, সাপের কামড়ে ১, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অকেজো লিফটে আটকা পড়ে একজন মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নদী থেকে আরও দুটি মরহেদ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রবিবার (২৭ নভেম্বর) শহরস্থ ম্যানগ্রোভ সভা ঘরে এমএসএফ’র সহযোগিতায় এবং উত্তরণের আয়োজনে এমএসএফ’র জেলার সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা লিগ্যাল এইড অফিসার (সহকারী জজ) মো. মনিরুল ইসলাম। এড: মনিরউদ্দীনের পরিচালনায় মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন, এমএসএফ’র কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী টিপু সুলতান, সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল হামিদ, অধ্যক্ষ আশেক-ই এলাহী, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)’র সভাপতি পবিত্র মোহন দাশ, এমএসএফ সাতক্ষীরা যুগ্ম আহবায়ক ও সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ সদস্য এড: শাহনেওয়াজ পারভীন মিলি, আইডিয়ালের নির্বাহী পরিচালক ডা: নজরুল ইসলাম, এড: নাজমুন নাহার ঝুমুর, এনজিও কর্মী মরিয়ম মান্নান, জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জোৎন্সা দত্ত, সাংবাদিক গোলাম সরোয়ার, মোহনা টিভির আব্দুল জলিল, এড: খায়রুল বদিউজ্জামান, সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শেখ আফজাল হোসেন, এড: দিলিপ কুমার দেব, এড: হাবিব প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন, অধ্যক্ষ আনিসুর রহিম, এড: আসাদুজ্জামান দিলু, এনজিও কর্মী শরিফুল ইসলামসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বক্তরা বলেন, জনপ্রতিনিধিদের গ্রেপ্তার করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতে সোপর্দ না করে দুই দিন পরে বিস্ফোরক দ্রব্য এবং মাদকসহ বিভিন্ন হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে চালান দেওয়া হচ্ছে। জেলার হাসপাতালগুলোতে সঠিক সেবা দেওয়া হচ্ছে না। শ্যামনগরে আলোচিত নরেন্দ্র মুন্ডা হত্যার আসামীদের জামিন হচ্ছে। ঘুষ বাণিজ্য, এতিমখানায় শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে অহরহ। বিরোধী দলের রাজনৈতিক কার্যক্রমে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। সীমান্তে হত্যাসহ বিভিন্ন মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে।
ভয়ের সংস্কৃতির কারণে মানুষ আতঙ্কে। এই সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সচেতনতাই পারে মানবাধিকার লঙ্ঘন কমাতে। ফাউন্ডেশন থেকে বলা হয়, আগস্ট মাসে জেলায় খুন হয় ৩জন। এমাসে পুলিশ আত্মহত্যা সন্দেহ ৫টি মরদেহ উদ্ধার করেন। পানিতে ডুবে ৫ শিশু, সড়ক দুর্ঘটনায় ৫জন, বজ্রপাতে ১জন, ছাদ থেকে পড়ে ১জন, ভুল চিকিৎসায় ২জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে জেলায় খুন হয় ১জন। এ মাসে পুলিশ অপমৃত্যু সন্দেহে ৬জনের মরদেহ উদ্ধার করে।
এ মাসে পানিতে ডুবে ২জন, সড়ক দুর্ঘটনায় ৫জন, বজ্রপাতে ৩জন, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ১জন এবং আগুনে পুড়ে ১জনের মৃত্যু হয়। এমাসে (নভেম্বর) পুলিশ নদী থেকে অপমৃত্যু সন্দেহে আরও দুটি মরদেহ উদ্ধার করে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে জেলায় খুন হয় ১জন। এ মাসে পুলিশ আত্মহত্যা সন্দেহে ৬জনের মরদেহ উদ্ধার করে। এ মাসে পানিতে ডুবে ২জন, সড়ক দুর্ঘটনায় ৫জন, বজ্রপাতে ৩জন, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ১জন এবং আগুনে পুড়ে ১জনের মৃত্যু হয়।
এমাসে পুলিশ নদী থেকে অপমৃত্যু সন্দেহে আরও দুটি মরদেহ উদ্ধার করে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে জেলায় ৫টি হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। এমাসে অপমৃত্যু সন্দেহে পুলিশ ৮টি মরদেহ উদ্ধার করে। চলতিমাসে পানিতে ডুবে ৩জন, সড়ক দুর্ঘটনায় ২জন, সাপের কামড়ে ১জন এবং সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অকেজো লিফটে আটকে একজনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। এছাড়া এমাসে পুলিশ অপমৃত্যু সন্দেহে আরও ২জনের মরদেহ উদ্ধার করে।