বিলাল হোসেন, শ্যামনগর ব্যুরো : ২০১৩ সালে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) ৫৯ নং আইনে বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় ২০ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে প্রকাশিত এবং পরবর্তীতে অধ্যাদেশ নং ০২/২০১৮ দ্বারা সংশোধিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, কৃষি জমি, এমন কোন জমি যাহা বৎসরে একাধিকবার কৃষিপণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়, প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা, মালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য, বাগান বা জলাভূমি, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভার উপজেলা সদর, আবাসিক, সংরক্ষিত বা বাণিজ্যিক এলাকায় ইটভাটা স্থাপন করতে পারবেন না।
এমনকি ছাড়পত্র অর্থাৎ এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন বা তদাধীন প্রণীত কোন বিধির অধীন ইস্যুকৃত কোন ছাড়পত্র আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, ইটভাটা যেখানে অবস্থিত সেখানের জেলা প্রশাসকের নিকট হতে লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতিরেকে কোন ব্যক্তি ইট প্রস্তুত করতে পারবে না। কতিপয় স্থানে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধকরণ আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন! এই আইন কার্যকর হওর পর নি¤œবর্ণিত এলাকার সীমানার অভ্যন্তরে কোন ব্যক্তি কোন ইটভাটা স্থাপন করিতে পারিবেন না।
এমন আইন কার্যক্রমে শ্যামনগরে সকল ভাটাই অবৈধ! এরপরও মানা হচ্ছে না বিধিনিষেধ। গত ১৩ নভেম্বর ২০২২ তারিখ রোববার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম এবং বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৩ অনুসারে লাইসেন্স ব্যতীত কোনো ইটভাটা স্থাপন ও পরিচালনা করা যায় না। জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহারের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এই মর্মে গত ১৩ নভেম্বর এইচআরপিবি হাইকোর্টে রিট করেন। অবৈধ ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দেন মহামান্য হাইকোর্ট।
তবে এখনো পযর্ন্ত শ্যামনগর উপজেলায় কোন প্রকার অভিযান পরিচালনা করতে দেখা যায়নি উপজেলা প্রশাসনের। জ্বালানি হিসেবে ইটভাটায় কাঠের ব্যবহার নিষিদ্ধ এমন বিধান থাকলেও শ্যামনগর উপজেলায় অবৈধ ইটভাটাগুলো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ অনুসারে লাইসেন্স ব্যতীত কোনো ইটভাটা স্থাপন ও পরিচালনা করা যায় না এবং জ্বালানি হিসেবেও ইটভাটায় কাঠের ব্যবহার নিষেধের বিধানও রয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের তৎপরতা না থাকায় ইট ভাটার মালিকেরা জ্বালানি হিসাবে কয়লার পরিবর্তে ব্যবহার করছে কাঠ যা আইনে নিষিদ্ধ।
ভাটা মালিকরা বলেন, কয়লার মূল্য বৃদ্ধির ফলে কাঠ পোড়াতে বাধ্য হতে হচ্ছে। না হলে মানুষ ইট পাবে কি করে? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইট ভাটার কিছু শ্রমিকের কাছ থেকে জানা যায় বিভিন্ন দপ্তর ম্যানেজ করে ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছে কাঠ। সচেতন মহলের বক্তব্য, এই ইটভাটা গুলো উপজেলার চার সাইটে প্রশাসনের একেবারে নাকের ডগায়। তাহলে জ্বালানি হিসেবে কাঠ যদি নিষিদ্ধ হয়ে থাকে তাহলে কাঠ কি ভাবে জ্বালানো হয় এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের।
শ্যামনগর ইট ভাটা সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও গাজী ব্রিকসের মালিক বকুল হোসেনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি দেখা করে ম্যানেজ করার আশ্বাস দেন।
শ্যামনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আক্তার হোসেন বলেন, আমি এই সর্বপ্রথম আপনার কাছ থেকে শুনেছি এবং দ্রæত ব্যবস্থা নেব।