নিজস্ব প্রতিনিধি : তালা উপজেলাসহ সাতক্ষীরার আশে পাশের এলাকায় কনকনে হাড় কাঁপানো শীতের দাপটে কাহিল হয়ে পড়েছে মানুষ। উত্তরের শীতল হাওয়ায় প্রাণিক‚ল আড়ষ্ট হয়ে পড়েছে। প্রকৃতিতে বিরাজ করছে যবুথবু অবস্থা। সপ্তাহব্যাপী সারা দেশের ন্যায় সাতক্ষীরায়ও প্রবাহিত হচ্ছে শৈত্য প্রবাহ। ঘণ কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে উত্তরে হিমেল হাওয়ায় ষড় ঋতুর রঙ্গমঞ্চে শীতের আবির্ভাব। শীতের দাপটে গরীব-দুস্থ ছিন্নমূল মানুষ কাহিল হয়ে পড়েছে।
শুধু মানুষ নয়, গরু ছাগল, মহিষ ভেড়াসহ গৃহপালিত প্রাণি ও পাখি শৈত্য প্রবাহের ফলে কাবু হয়ে পড়েছে। কৃষক শ্রমিকরাও কাজ কর্ম করতে পারছে না। দিনভর সূর্যের লুকোচুরি খেলা শীতের তীব্রতা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এদিকে গ্রামে গ্রামে হেমন্তের ফসল ভরা মাঠ রিক্ত ও নিঃস্ব হয়ে গেছে। নতুন ধানের গন্ধে মেতে উঠেছে গ্রামের মানুষ।
খেজুরের রসের নলেন পাটালী আর নতুন ধানের নবান্ন উৎসবে মেতেছে বাঙালি। শীতের তীব্রতা সে আনন্দ কে মলিন করতে পারেনি। তবে আসন্ন বোরো মৌসুমের বীজ তলায় শীত বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। শীতের প্রভাব পড়তে পারে আমের মুকুলেও। হাঁস মুরগির খামারে তীব্র শীতের কারণে দেখা দিতে পারে নানা প্রকার রোগ ব্যাধি। এছাড়া কোল্ড ডায়রিয়া, আমাশয়, সর্দি কাশি জ্বরসহ শ্বাস কষ্টজনিত রোগ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশংকা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এজন্য কর্তৃপক্ষ মানুষকে সতর্ক থাকারও পরামর্শ দিচ্ছেন। শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে সূর্যের মুখ দেখা গেলেও তাতে কাজ হয়নি।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হওয়ার সাথে সাথে শীতের নিষ্ঠুর কামড়ে অসহায় ছিন্নমূল মানুষের জীবনে নেমে আসে চরম যন্ত্রণা। গরম পোষাকের কদর বেড়েছে। শহরের ফুটপাতের দোকানগুলোতে ধনী-গরিব, শিশু, কিশোর, যুবক, যুবতিসহ বিভিন্ন বয়সের ক্রেতাদের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। শহর ও গ্রামের অনেক জায়গায় আগুনের কু-লি তৈরি করে তার চারপাশে বসে তাপ পোহানোর দৃশ্য ছিলো চোখে পড়ার মতো। প্রচ- শীতে নিতান্ত প্রয়োজন না হলে কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। শৈত্য প্রবাহ জেলার বানভাসী এলাকার ছিন্নমূল মানুষের কষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে।
এ অবস্থায় সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস কোন সুসংবাদ দিতে পারে নি। আবহাওয়া অফিস বলছে, শীতের তীব্রতা সহসা কমছে না। শৈত্য প্রবাহ এখনো দুই তিন দিন থাকবে বলে ধারণা করেছে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মাজেদুল হক জানান, সাতক্ষীরায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ৯.৫ ডিগ্রি সেলিসিয়াস। বাতাসের গতিবেগ উত্তর থেকে দক্ষিণে ঘণ্টায় ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার। রাতে তাপমাত্রা আরো কমতে পারে বলে জানান তিনি। তালা উপজেলা কৃষি র্কমর্কতা হাজিরা খাতুন বলেন, শীত ও কুয়াশায় ধানের চারার মাথায় পানি জমে থাকা এবং একই সঙ্গে ঠান্ডাজনিত কারণে বীজতলা বিনষ্ট হয়। এ জন্য কৃষকদের পুরো বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে পরার্মশ দেওয়া হয়েছে। বোরোর বীজতলা রক্ষায় এখন পলিথিনই একমাত্র ভরসা।