অবসরপ্রাপ্ত মেজর আসাদ : ওর মৃত্যুর পর ওকে নিয়ে লেখার একটা তাগিদ আমি মনে মনে নিদারুণ ভাবে অনুভব কোরছিলাম। ওর স্মরণসভার পোস্টার দেখে একটা ভীন কিসিমের তাড়ন ও অন্ত:পীড়ন উভয়ই অনুভব কোরছিলাম। তাড়ণ ছিলো কারণ, ও আমার খুব কাছের মানুষ তথা ভালো বন্ধু ছিলো; আর পীড়ণ ছিলো, ওর জন্য অনেক আগেই আমার লেখা উচিৎ ছিলো বোলে। পোস্টারের নামটা চমৎকার হয়েছে।
‘আযহার পরিষদ’কে তাই সাধুবাদ আর কৃতজ্ঞতা। তাই হুবুহু ওই ‘অনন্য আনিস’ নাম দিয়েই আমার লেখাটা শুরু কোরলাম। ওর চেহারাটাই ছিলো একটা ‘অনন্য কাব্য’। সবসময় ওর মুখে একটা লাগাতার হাসি বা তার মিষ্টি রেষ লেগেই থাকতো। কোন কোমতি, কোনোখানে আমি খুঁজে পাইনি। “ফেস ইজ দা ইন্ডেক্স অফ মাইন্ড”; সত্যিই তাই। ওর চেহারার সৌম্যতাই যেন সারল্যের প্রতীক, ফজরের আযানের মূর্ত ছবি। স্কুল জীবনে ওকে পিএনহাই স্কুলে পেয়েছিলাম। এরপর তার পিতার চাকুরির সুবাদে আমরা কিছুদিন শারিরীক দূরুত্বে বিচ্ছিন্ন থাকলেও মনের দূরুত্বে, বিন্দুত্বে সন্নিবেশিত ছিলাম।
কর্মজীবনে আমি কৃষি ছেড়ে সামরিক জীবনকে বেছে নিলাম আর আনিস নিলো শিক্ষকতা, সম্পাদিকতা ও সমাজসেবা। এককথায়, ও ছিলো এক সাদামনের আলোকিত মানুষ। তার চিন্তা, চেতনা আর কর্মে কোন বৈপরীত্য আর ভেজাল ছিলোনা। আগাগোড়া খাঁটি সোনার মোড়ক ছিলো। ভাবীও ছিলেন তদীয় শিক্ষিতা এবং অনন্যা (পিএইচ ডিগ্রীধারী) ও সম্ভ্রান্তীয়। আনিস একাধারে ছিলো, ১টি নামকরা কিÐারগার্টেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল, ১টি স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদক ও সমাজসেবী। তার রাজনৈতিক মতাদর্শ ছিলো কিনা জানিনা, তবে কোন সক্রিয় রাজনীতি সে কোরতোনা। তাই সে ছিলো সর্বজন নন্দিত এক প্রিয় ব্যক্তিত্ব ও আদর্শ।
‘বন্ধন-৭০’ ফোরাম খোলার পর আমি অনুধাবন কোরলাম আনিসের ততোটা সম্পৃক্ততা নেই। ব্যক্তিগত ভাবে পোস্ট দিলে ও Interact বা মিথস্ক্রিয়া দেখাতো, কিন্তু ফোরামে সম্পৃক্ত হতোনা। বন্ধনের কোন কোন সদস্যের তাতে নাকি আপত্তি ছিলো। কথাগুলো আমার তার মুখ থেকেই শোনা। পরবর্তীতে আমি বন্ধনের কয়েকজন থেকে তা নিশ্চিৎ হই। ব্যাপারটা ছিলো, ও আমাদের সাথে পড়তো ঠিকই কিন্তু ৭০ এ আমাদের সাথে ম্যাট্রিক দিতে না পেরে সম্ভবতঃ ৭১ এ দেয়। তাই বন্ধন ৭০ তে সে অঘোষিত অযোগ্য ছিলো।
আমি ‘বন্ধন-৭০’এর এডমিন হিসেবে তা না জেনে তাকে সদস্য বানিয়েছিলাম। (অবশ্য এটা জানা থাকলেও আমি তাকে সদস্য বানাতাম)। পোস্টারটি তাই সম্ভবতঃ বন্ধনের ব্যানারে হয়নি। শেখ আজহার হোসেন (তার পরবর্তী ক্লাসমেট), আহব্বায়ক; “নাগরিক স্মরণ সভার তরফ থেকে দেয়া হয়েছে। তাই আমার লেখাটি আমি ‘বন্ধন-৭০” এর ফোরামে পোস্ট না দিতে মনস্থ কোরেছি (জীবনে যারে তুমি দিলেনা মালা, মরণে কেন তারে দিতে এলে ফুল”? কাজেই এ ভুল আমি কোরবোনা; ওর বিদেহী আত্মাকে অতৃপ্ত রাখবোনা)। তবে এটা আমি ফেসবুক, অন্যান্য সামাজিক মিডিয়া ও বন্ধনের প্রতিটি সদস্যের ব্যক্তিগত একাউণ্টে পোস্ট কোরবো। মহান রাব্বুল আলামিন তার ‘বরযুখে’র যাপিত ‘ইল্লিয়ীনের’ জীবনকে সুখময় করুক; আমিন!!!