রাবিদ মাহমুদ চঞ্চল : খুলনাতে ‘খুলনার আলোকচিত্র চর্চা: ইতিহাসের পথ বেয়ে’ শিরোনামে পাঁচ দিনব্যাপী একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। গত শুক্রবার বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এর উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা জেলা শহরের আলোকচিত্র চর্চার ইতিহাস নিয়ে দৃক এর পক্ষ থেকে এর আয়োজন করা হয়। আয়োজকরা জানান, ঊনবিংশ শতাব্দীর আলোকচিত্র বাংলাদেশে আলোকচিত্র চর্চার বৈচিত্র্যময় ইতিহাসের অংশ। অগ্রপথিক আলোকচিত্রীদের অনবদ্য শৈল্পিক কাজের উদাহরণ।
আমাদের সামাজিক ইতিহাসের সাক্ষী। সর্বোপরি আমাদের দৃশ্যমান বা চাক্ষুষ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের (conservation of cultural tradition) অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়। বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের (পড়হংবৎাধঃরড়হ ড়ভ পঁষঃঁৎধষ ঃৎধফরঃরড়হ) ক্ষেত্রে ঐতিহ্যের এই অধ্যায়কে উপেক্ষা করা হয়। মোগল বা ব্রিটিশ আমলের প্রাসাদ, মসজিদ বা জমিদার বাড়ির মতো বিভিন্ন শাসনামলের স্মারক হিসেবে চিহ্নিত ঐতিহাসিক স্থাপত্যকর্ম সংরক্ষণই সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের মূল মনোযোগ আজ অব্দি। আলোকচিত্রের এই অলিখিত ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে আছে এই দেশের মানুষের দৃশ্যমান বা চাক্ষুষ স্মৃতি (ারংঁধষ সবসড়ৎু), এই স্মৃতি সংরক্ষণ ও লিপিবদ্ধ করার তাগিদ থেকে দৃক পিকচার লাইব্রেরি ২০১৭ সালে একটি মৌখিক ইতিহাস ভিত্তিক গবেষণার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ পর্যন্ত ৬টি জেলা সদর তথা খুলনা, বগুড়া, মানিকগঞ্জ, যশোর, রংপুর ও রাজশাহীতে আলোকচিত্রের ইতিহাস সম্বন্ধে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় আমরা আলোকচিত্রীদের জীবন ইতিহাস, অর্থনৈতিক সাফল্য ও সংগ্রাম, আর তাঁদের তোলা ছবির গল্পগুলো জানতে চেষ্টা করেছি।
খুলনা জেলা শহরের আলোকচিত্র চর্চার ইতিহাস সম্বন্ধে আমরা যৎসামান্য যা জানতে পেরেছি, তার ভিত্তিতেই সাজানো হয়েছে এই প্রদর্শনী। এই প্রর্দশনীতে খুলনা শহরে আলোকচিত্র চর্চার দীর্ঘ ইতিহাসের যাঁরা অগ্রপথিক বিমল কুমার দে, তুষার কান্তি রায় চৌধুরী, নুরুল হক লাভলু, সিমসন এস অধিকারী, সোহেল মাহমুদ, আব্দুল বাদি টুলু এবং রেটিনা ও অভিসার স্টুডিও সংগ্রহ থেকে বাছাইকৃত ছবি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলার প্রবীণ আলোকচিত্রীগণ, খুলনা ফটোগ্রাফিক সোসাইটি (কেপিএস), ইমেজ ঘর ফটোগ্রাফিক সোসাইটি (আইজিপিএস), বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, খুলনা শাখা এবং খুলনা টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং দৃকের পক্ষ থেকে ড. শহিদুল আলম। উদ্বোধনীতে স্বাগত বক্তৃতা করেন দৃক এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. শহীদুল আলম। আরও বক্তৃতা করেন আলোকচিত্র শিল্পী তুষার রায় চৌধুরীর ছেলে চন্দন রায় চৌধুরী, আলোকচিত্র শিল্পী সিমসন এস অধিকারী, নূরুল হক লাভলু, সোহেল মাহমুদ, খুলনা ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সভাপতি ড. আমিরুল খসরু এবং ইমেজঘর এর ড. গাজী মিজানুর রহমান। প্রদর্শনীটি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা অব্দি আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত চলবে এবং সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।