সেলিম হায়দার : সাতক্ষীরার তালায় মৎস্য ঘেরের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কোটি কোটি টাকায় নির্মিত সরকারি রাস্তা। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেসব সরকারি রাস্তা রয়েছে সেসব রাস্তা মৎস্য ঘেরের কারণে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। প্রতি বছর সরকারিভাবে রাস্তা গুলো সংস্কার করা হলেও সংস্কার কাজের স্থায়ীত্ব আসছে না মৎস্য ঘেরের কারণে। ফলে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ টাকা ও সরকারি সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসন পক্ষ থেকে জনসচেতনতার জন্য মাইকিং করা হলেও তা কোন কাজে আসছে না।
বেশীরভাগ ঘের মালিকরা ঘেরের পাশের সরকারি রাস্তাকে সীমানা বাঁধ ও রিং বাঁধ হিসেবে ব্যবহার করছে। চিংড়ি ঘের বছরের বেশীর ভাগ সময়ে পানিতে তলিয়ে থাকে। ফলে পানির চাপে ঘেরের পাশের রাস্তা গুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। কোথাও কোথাও রাস্তার ইট, বালি ভেঙ্গে ঘেরে চলে যাচ্ছে। রাস্তা গুলো হয়ে যাচ্ছে সরু। ফলে একদিকে যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারি রাস্তা, অপরদিকে ঘন ঘন সংস্কার করে অপচয় হচ্ছে বিপুল পরিমাণ সরকারি অর্থ। পাশাপাশি যাতায়াতে দুর্ভোগ বাড়ছে সাধারণ মানুষের।
জানা গেছে, ঘেরের বেড়ি হিসেবে সরকারি রাস্তা ব্যবহার করায় উপজেলার প্রধান সড়কসহ গ্রামীণ পাকা ও ইটের সড়ক হুমকির মুখে পড়েছে। উপজেলার ১ হাজার ২৭১টি ঘেরের এর মধ্যে রয়েছে খলিলনগর হাজরাকাটি-কাঠবুনিয়া, তেঁতুলিয়া,জালালপুর,খেরশা,ইসলামকাটি ইউনিয়নের অন্তত প্রায় ১০০টি সড়ক নষ্ট হয়ে গেছে। কাঠবুনিয়া গ্রামের উজ্জল কুমার মন্ডল জানান,কাঠবুনিয়া থেকে হাজরাকাটি সড়কে যান চলাচল বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আর এ কারণে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে এলাকার মানুষকে। সড়কে যান চলাচল বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
মৎস্য ঘের ব্যাবসায়ী কহিনুর ইসলাম মোড়ল বলেন, আমি প্রতি বছর ঘেরের ভেড়ি মেরামত করি পাশের অন্য ঘের মালিকরা রাস্তা সংস্কার না করায় রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। আগে রাস্তা দিয়ে মাছ পন্য পরিবহন করতাম এখন নৌকায় করে নিয়ে বহন করতে হয়। খলিলনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রণব ঘোষ বাবলু জানান, ঘেরের কারণে প্রতিবছর সরকারি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অপচয় হচ্ছে বিপুল পরিমাণ সরকারি অর্থ। সরকারি সম্পদ সংরক্ষণ করা প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। পরিষদ থেকে মৎস্য ঘের মালিকদের নোটিশ করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহ মধ্যে আমার ইউনিয়নের ঘের মালিক তার ঘেরের পাশে রাস্তা সংস্কার না করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাস্থা নেওয়ার প্রশাসকে অবহিত করবো।
এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলীর রথীন্দ্র নাথ হালদার জানান, কোন ঘের মালিকরা বাঁধ হিসেবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি, ত্রাণ বিভাগ সহ সরকারি ও বেসরকারিভাবে নির্মিত কোন সড়ক বা রাস্তা ব্যবহার করতে পারবে না। যদি এমন হয় তাহলে রাস্তা পাশে ১৫ ফুট ছেড়ে বেধে নিয়ে ঘের করতে হবে। তাছাড়া ঘের মালিকদের পুর্বে সতর্ক করা হয়েছে। খুব দ্রæত এসব ঘের মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।