শেখ মনিরুল ইসলাম : দুই যুগেও হয়না বিচার, এ লজ্জা ও অপমান কার ? যশোর উদীচীর সম্মেলনে বোমা হামলার ২৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এ হত্যাকান্ডের বিচার আজও হয়নি। দেশের প্রথম জঙ্গি হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করা যায়নি, এ দায়ভার সরকারের। ০৬ মার্চ সোমবার যশোর হত্যাকান্ড দিবসে উদীচী, কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন এসব কথা বলেন।
অমিত রঞ্জন দে আরও বলেন, রমনা বটমূলে হামলা, ছায়ানটে হামলা, সাতক্ষীরা গুড়পুকুরের মেলায় বোমা হামলাসহ অসংখ্য এসব রোমা হামলার সুষ্ঠু বিচার হলে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গন আবারও চাঙ্গা হতো। অমিত রঞ্জন দে আরও বলেন, আমাদের দোষটা কী, আমাদের সংগঠন সুষ্ঠু ধারার সাংস্কৃতিক চর্চা করে, কেন জঙ্গিরা আমাদের সমাবেশে হামলা চালায় ? তাহলে কি সাংস্কৃতিক চর্চা করা যাবে না ?
এই হত্যাকান্ডের বিচারের দাবীতে গত ০৪ মার্চ হতে যশোর টাউন হল ময়দানে তিন দিন ব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল ০৬ মার্চ ছিল কর্মসূচীর শেষ দিন ও যশোর হত্যাকান্ড দিবস। উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী খুলনা বিভাগীয় কমিটির আয়োজনে যশোর টাউন হল ময়দানে এই প্রতবিাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উদীচী কেন্দ্রীয় কমিটি ঢাকা হতে একদল প্রতিনিধিদল গতকালকের এ কর্মসূচীতে অংশ গ্রহণ করেন।
এছাড়া খুলনা বিভাগের, যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝিনাইদহা, নড়াইল, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া,মেহেরপুর, গোপালগঞ্জ ও বরিশাল বিভাগের উদীচীর কর্মীরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে, ঢোলে প্রতিবাদী বিশাল সমাবেশ ও হাজার হাজার কর্মীরা যশোর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এর আগে ১৯৯৯ সালে নিহত-নাজমুল হুদা তপন, সন্ধ্যা রাণী ঘোষ, নুর ইসলাম, ইলিয়াস মুন্সী, বাবুল সুত্রধর, শাহ আলম মিলন, মোহাম্মদ বুলু, রতন কুমার বিশ্বাস,শাহ আলম পিন্টু ও বাবু রামকৃষ্ণের স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় কমিটির নের্তৃবৃন্দ, জাসদ যশোর শাখা, যশোর মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন জেলার নের্তৃবৃন্দ।
উদীচী যশোর জেলা সংসদের সভাপতি তন্দ্রা ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে, সহ সভাপতি সুখেন রায়, জামশেদ আনোয়ার তপন, নাজমুল ইসলাম, সহ সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম, যশোর জেলা সংসদের সহ সভাপতি আমিনুর রহমান হিরু প্রমুখ। উদীচী সাতক্ষীরা হতে সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সুরেশ পান্ডে ও নাট্যশিল্পী মনিরুল ইসলাম সকল কর্মসূচীতে অংশ গ্রহণ করেন।
সন্ধ্যায়- ১৯৯৯ সালের ০৬ মার্চ ১০ জন নিহতের স্মরণে মশাল জালানো হয়। এরপর প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক গানে গানে আহতের পরিবার ও হাজার হাজার দর্শক শ্রোতার তপ্ত দীর্ঘশ্বাসে যশোর টাউন হল ময়দান ভারী হয়ে ওঠে।
