বিলাল হোসেন : শ্যামনগর কৈখালীতে আশ্রয়ের অভাবে তালপাতার ছাওনি আর ছেড়া বস্তার বেড়ার ঘরে মানবেতায় দিন কাটাচ্ছেন অন্ধ রুপভান বিবি। সরকারের দেওয়া ভ‚মিহীনদের ঘর পেতে ঘুরে বেড়াচ্ছে দ্বারে দ্বারে। অনেকেই ঘর দেওয়ার আশ্বাস দিলেও বাস্তবায়ন হয়নি। খরচের টাকা না দিতে পারায় তালপাতা দিয়ে ছাওনির ঘরে বাস করে যাচ্ছে।
রোকেয়া (রুপভান) (৬০) উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের পূর্ব কৈখালী গ্রামের মৃত ছলিউদ্দিন শেখের স্ত্রী। নিঃসন্তান রুপভান স্বামীর মৃত্যুর পরে স্বামীর রেখে যাওয়া ১০শতক জমির উপরে বাস করেন। অন্যের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। বয়সের ভারে এক চোখ অন্ধ নিয়ে এখন আর কাজ করতে পারে না। দারুণ মানবতায় জীবন যাবন করছে তিনি।
রুপভান বিবি বলেন, জরাজীর্ণ ভাঙা ঘরে বসবাস করি আমার একটি চোখও নষ্ট হয়ে গেছে। তীব্র শীতের দিনে কুয়াশার পানি চুইয়ে পড়ে জরাজীর্ণ ঝুপড়ি ঘরে। প্রতিদিন ভিজে যায় কাঁথা, বালিশ, মশারী। বৃষ্টির দিনে তো কোন কথাই নেই! ঘরের ভিতর হাঁটু পানি জমে যায়। জরাজীর্ণ তাল পাতার ছাউনি দিয়ে দেখা যায় পুরো আকাশ। আমি টাকা দিতে পারি না বলে আমার ঘর হয় না।
কত মানুষের কাছে গিয়েছি একটা ঘর পাওয়ার জন্যে কিন্তু সবাই বলে খরচের টাকা লাগবে। কৈ পাব আমি টাকা। স্থানীয় কাওছার বলেন, সরকারি ঘর পাওয়ার মত যোগ্য মানুষ সে। তার দুনিয়ায় আপন বলতে কেউ নি। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাবো তার যেন থাকার একটা ঘরের ব্যবস্থা করে। পৃথিবীতে দেখার মত কেউ নেই আমার। চোখ হারানোর পর একজন ভাতিজা কোন রকমে একটু দেখে তাও সে অনেক দূরে থাকে।
সরকারি ভাবে যদি একটা ঘরের ব্যবস্থা করতো তাহলে খাই আর না খাই ঘুমাইতে পারতাম। কৈখালী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বলেন, দ্রæত তার ঘরের ব্যবস্থা করে দিবো। আমি তার খোঁজ নেওয়ার জন্যে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যকে বলে দিয়েছি। শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আক্তার হোসেন বলেন, তার যদি থাকার ঘর না থাকে। তাহলে তার থাকার ঘরের ব্যবস্থা করে দিবো।