খুলনা অফিস : রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে যান্ত্রিক ত্রæটির কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। গেল ১৫ এপ্রিল শনিবার রাত থেকে কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে বলে জানাগেছে। সোমবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে বাংলাদেশ ইন্ডিয়া পার্টনারশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিঃ (বিআইএফপিসিএল) উপ-মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গেহল ১৪ জানুয়ারি কয়লা সংকটে বন্ধ হয়েছিল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। এদিকে হঠাৎ করে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হওয়ায়, প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহের উপর। বাগেরহাটসহ এই অঞ্চলে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। উপ-মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম বলেন কারিগরি ত্রæটির কারণে ১৫ এপ্রিল রাত থেকে কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। আশাকরি খুব দ্রæত সময়ের মধ্যে আবারও উৎপাদন শুরু করা হবে।
এছাড়া কয়লা সংকট নেই দাবি করেন তিনি আরও বলেন, বর্তমানে কেন্দ্রে কোন কয়লা সংকট নেই। কেন্দ্রে পর্যাপ্ত কয়লা মজুদ রয়েছে। বেশকিছু কয়লা আমদানি করা হয়েছে। যা এখন পথে রয়েছে। দ্রæততম সময়ের মধ্যে সমুদ্র পথে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এসে পৌঁছাবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের এনটিপিসি লিঃ এর মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাঃ) লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) নামে কোম্পানি গঠিত হয়।
এই কোম্পানির অধীনে ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল) নামে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। রামপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈ-গর্দ্দাশকাঠি মৌজায় ১ হাজার ৩৪ একর জমি অধিগ্রহন শেষে ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়।
২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই শুরু হয় জমি ভরাট ও সড়ক নির্মাণের কাজ। প্রায় ৯ বছর বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে গেল প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে এ বছরের ১১ জুলাই বয়লার স্টিম বেøায়িং স্থাপন করা হয়। এক মাস পরে ১৪ আগস্ট টারবাইন-এ স্টিম ডাম্পিং এবং একদিন পরে ১৫ আগস্ট জাতীয় গ্রীডের সাথে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ (ট্রান্সমিশন) শুরু করা হয়।
পরে ১৭ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় গ্রীডে বাণিজ্যিকভাবে যুক্ত হয় এখানের বিদ্যুৎ। পরে ১৪ জানুয়ারি কয়লা সংকটে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানটি। এর প্রায় একমাস পরে কয়লা প্রাপ্তি সাপেক্ষে ১৫ ফেব্রæয়ারি দিবাগত রাত ১২টায় আবারও প্রথম ইউনিটের উৎপাদন শুরু হয়।