নিজস্ব প্রতিনিধি : জলাশয় বা পুকুর ভরাট করার অভিযোগে সাতক্ষীরায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর সাতক্ষীরা কার্যালয়ের দায়িত্বরত সহকারি পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ সংশোধিত ২০১০ এর ৬ (ঙ) এবং ৪ এর (১) (২) ১৫ (১) ৮ ও ১ ধারা মোতাবেক সোমবার সাতক্ষীরা সদর থানায় এই মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামী করা হয়েছে সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর গ্রামের মৃত মীর গোলাম মোস্তফার স্ত্রী নাজনীন বেগমকে (হ্যাপি)। বাদী পরিবেশ অধিদপ্তর সাতক্ষীরা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম এজাহারে উল্লেখ করেছেন, সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর এলাকার সুলতানপুর মৌজার জেএল নং ১০০, ২৪১ খতিয়ানের ৮৭ ও ৮৮ দাগের ৪৯ শতক জমিতে বহু প্রাচীন পুকুর ভরার করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিগত ২০২২ সালের অক্টোবর হতে ১৪ মে ২০২৩ পর্যন্ত বিভিন্ন সময় মাটি ভরাট করা হয়। বাদী এজাহারে আরো উল্লেখ করেছেন, মিসেস নাজনিন বেগমের পিতা মৃত শেখ মাহবুবর রহমান ও চাচা মৃত মুজিবর রহমান নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যাওয়ায় তিনি উক্ত পুকুর ও বাড়ির মালিক হন। পুকুরটির গভীরতা অন্তত ৩০ থেকে ৪০ ফুট।
গত বছরের ১৬ অক্টোবর পুকুরটি ভরাট কার্যক্রম শুরু করলে এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিন পরিদর্শন পূর্বক ঘটনার সত্যতা পাই এবং ভরাট কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দেই। পর্যায়ক্রমে ওই বছরের ১৯ অক্টোবর, ২১ ডিসেম্বর ও ১২ মার্চ ২০২৩ তিনটি নোটিশের মাধ্যমে পুকুরটি ভরাট না করাসহ পূর্বের স্থানে ফিরিয়ে আনার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু নোটিশ পেয়ে আসামী সাময়িক কাজ বন্ধ রাখলেও রাতের আধারে মাটি এনে পুকুর ভরাট কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।
বর্তমানে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে পুকুরটির ভরাট কার্যক্রম প্রায় শেষ করেছেন। এরআগে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ ঘটনাস্থলে পৌছে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ অন্যদের কাউকেই তোয়াক্কা করেননি উক্ত পুকুর মালিক। এমনকি বিভিন্ন সময় খারাপ ব্যবহারও করেছেন। আসামী নাজনীন বেগম বহু প্রাচীন পুকুরটি ভরাট করে পরিবেশ আইনের উপরোক্ত ধারা সমুহ লংঘনসহ জলাশয়ের জীববৈচিত্রও ধ্বংস করেছেন।
একই সাথে রাতের আধারে ট্রাক্টর যোগে মাটি ভরাট কার্যক্রমে ব্যবহৃত ট্রাক্টর আটকের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে।
এদিকে রাতে এক সাক্ষাৎকারে পরিবেশ অধিদপ্তর সাতক্ষীরার সহকারি পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম জানান, সুলতানপুরে পুকুর ভরাটের বিষয়ে বন্ধ রাখাসহ পূর্বের স্থানে ফিরিয়ে আনার জন্য পর পর ৩টি নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি তা অমান্য এবং সরকারি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর অভিযোগে উক্ত পুকুর মালিক নাজনীন বেগমকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যেকোন সময় আসামীকে গ্রেপ্তার করা হবে।
তিনি আরো বলেন, শহরের পাওয়ার হাউজের পেছনের একটি পুকুর ভরাট হয়েছে। সেটিও নিয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়াও কয়েকটি পুকুর ভরাট কার্যক্রম বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইন অমান্য করলে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি তদন্ত নজরুল ইসলাম জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়েরকৃত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্যকরা হয়েছে। মামলা নং-৩১।