খুলনা অফিস : খুলনা জেলা ও মহানগর বিএনপির সমাবেশ চলাকালে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ঘটনা ঘটেছে। দলীয় নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে এ সময় পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ সহ ব্যাপক ভাবে লাঠি চার্জ করেছে বলে জানিয়েছেন খুলনা জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এ ঘটনায় বিএনপির অন্তত অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় পুলিশ ১০ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে বলেও জানা গেছে। পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। শুক্রবার বিকাল ৪টায় খুলনা প্রেসক্লাবে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় পুলিশ গুলি ছুড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা। তাদের দাবি, দিঘলিয়া সেনহাটি ইউনিয়ন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মুজিবুর রহমান, যুবদল নেতা জাহিদুর রহমান, পাইকগাছা চাদখালী ইউনিয়ন বিএনপির শেখ আসাদুজ্জামান ময়না সহ বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
সরকারের পদত্যাগ, মামলা ও গণগ্রেপ্তার বন্ধ, সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদ এবং ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে প্রেস ক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ আহŸান করে বিএনপি। সমাবেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের একটি মিছিলে বাঁধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘাত শুরু হয়।
খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন অভিযোগ করেন, বিনা উস্কানিতে পুলিশ সমাবেশে পন্ড করতে গুলি, টিয়ারগ্যাস ও লাঠিচার্জ করেছেন। অসংখ্য নেতাকমী আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হচ্ছে। পরে নামসহ বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে। এবিষয়ে বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করছে। কিন্তু খুলনায় কেন প্রত্যেকবার শান্তিপূর্ণ সমাবেশে এইভাবে পুলিশ উস্কানি দিয়ে টিয়ারশেল মারবে। পুলিশ আমাদের উপরে টিয়ারশেল রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। আজকে আমাদের ১২ জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ, অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বক্তব্যর শুরু করা মাত্র মুহুর্মুহু টিয়ারশেল নিক্ষেপ। এই ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করছিলাম। হঠাৎ করে টিয়ারশেল-গুলি নিক্ষেপ করা হয়েছে। বেশকিছু নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আমাদের গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক অধিকার আছে সভা-সমাবেশ করার।
শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাঁধা কেন আসবে। এবিষয়ে খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এস এম মনিরুল হাসান বাপ্পি বলেন-পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আচমকা আমাদের নেতাকর্মীদের উপর টিয়ারগ্যাস, রাবার বুলেট নিক্ষেপ সহ ব্যাপক হারে লাঠি চার্জ করেছে। মুজিবুর রহমান নামের একজনকে ইতোমধ্যে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। শাহনাজ নামের এক মহিলা দলের নেত্রীর অবস্থা আশংকা জনক তাকে সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে রাখা হয়েছে সব মিলিয়ে অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলেন জানান তিনি।
অপরদিকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (সাউথ) মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, আজকে বিএনপির একটি কর্মীসভা ছিল। তারা খুলনা প্রেসক্লাবে প্রোগ্রাম করছিলো। কিন্তু তাদের নেতৃস্থানীয় নেতারা আসার পর বেশকিছু নেতা-কর্মী রাস্তায় বসে যায়। রাস্তা বন্ধ করে প্রোগ্রাম শুরু করে। আমরা পেছনে সরে গেলে কিছু উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মী আমাদের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। আমরা বাধ্য হয়ে টিয়ারসেল এবং গ্যাসগান নিক্ষেপ করি। এ পর্যন্ত আমরা ১০ জনকে আটক করেছি। আমাদের বেশ কিছু সদস্য আহত হয়েছে। পরে জানতে পারবো।