বিশেষ প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার বহুল আলোচিত স্ত্রী সন্তান নিয়ে ডিসি অফিসের সামনে সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধকারী খাদিজা খাতুনের কালিগঞ্জের বাড়ি এখনও অবরুদ্ধ করে রেখেছে ভ‚মিদস্যুরা।
খাদিজা খাতুন সাংবাদিকদের জানান, কালিগঞ্জে বহুল সমালোচিত ভূমিদস্যু মতিয়ার রহমান আদালতের নির্দেশ অমান্য করে আবারো খাদিজার বাড়ির প্রবেশ পথে ও দোকানের সামনে ইট ভর্তি করে এশটি খাদিজা খাতুনের অসহায় পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। গত ১২ এপ্রিল ভূমিদস্যুর হাত থেকে জান ও মালের নিরাপত্তার জন্য দুই অবুঝ শিশু সন্তানকে নিয়ে সাতক্ষীরা কালেক্টরেট অফিসের সামনে সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন।
বিষয়টি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের নজরে আসলে তিনি খাদিজার সাথে কথা বলে সমাধান হবে মর্মে আশ^স্ত করেন। জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবির বিষয়টি কালিগঞ্জ উপজেলা ইউ এন ও রহিমা খাতুন বুশরা’র উপর দায়িত্ব দেন। কালিগঞ্জের ইউ এন ও ভূমিদস্যু মতিয়ার রহমানকে ইট সরিয়ে নিয়ে খাদিজার বাড়ি অবমুক্ত করার নির্দেশ দেন। কিন্তু ভ‚মিদস্যু মতিয়ার রহমান ইউএনও’র নির্দেশ অমান্য করেন।
বাধ্য হয়ে খাদিজা খাতুন ২৬ ৪ ২৩ আদালতের শরণাপন্ন হন। আদালত স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ১৫১ ধারায় ভ‚মিদস্যু মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। খাদিজা খাতুন আদালতের নির্দেশ পেয়ে ৩ মে বাড়ির সামনে ভ‚মিদস্যুর রেখে যাওয়া ইট সরিয়ে ফেলেন। পরদিন খুব ভোরে পুনরায় আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ভ‚মিদস্যু মতিয়ার রহমান ৪/৫ জন মহিলা এবং ২০/২৫ জন পুরুষ ও অচেনা সন্ত্রাসীদেও নিয়ে পুনরায় ৪ ট্রাক ইট ফেলে বাড়ির রাস্তা সম্পুর্ণ অবরোধ করে রাখে।
বিষয়টি কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ-ওসি মামুন রহমানকে জানানো হয়। ওসি খাদিজা খাতুনকে বলেন ‘আমার কিছু করার নেই।’ বাধ্য হয়ে খাদিজা খাতুন পুনরায় আদালত কে পুরো বিষয়টি অবগত করেন।
মতিয়ার রহমান জানান, তিনি আদালতে হাজির হয়ে আদালতকে জানিয়েছেন খাদিজাদেও জায়গাটি তার(মতিয়ার রহমানের) নিজ সম্পত্তি এখানে আমি ২০১৪ সাল থেকে ইটের ব্যবসা করে আসছেন তিনি। বর্তমানে খাদিজার জায়গাটি তার দখলে বলে মতিয়ার দাবি করেন। অপরদিকে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ পায় এই বিষয়ে ১৬ এপ্রিল যাকাত দেওয়ার নাম করে ভিক্ষুকদের ডেকে নিয়ে ভ‚মিদস্যু মতিয়ার মানববন্ধন করেন এবং সেখানে উল্লেখ করেন যে খাদিজার পরিবার আমার জায়গায় ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করে।
১৭ এপ্রিল কালিগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন মতিয়ার রহমান উল্লেখ করেন যে খাদিজার পরিবার আমার জায়গায় ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করেন। আদালতকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেন। যার পরিপেক্ষিতে ১৮ মে তারিখে এই মামলার শুনানী হওয়ার কথা থাকলেও আদালত তা পিছিয়ে ২১ মে এই মামলার শুনানীর দিন ধার্য্য করেন।
খাদিজা খাতুন বলেন, ১৮ মে আদালত থেকে বাড়ি ফেরার পর ভ‚মিদস্যূ মতিয়ার রহমানের লোকজন জনসম্মুখে হুমকি দিচ্ছে যে, ২০ মে পর্যন্ত এই বসত ভিটায় খাদিজা খাতুনদের শেষ দিন। খাদিজা খাতুন জানান, ২০১৬ সালে আমার কালিগঞ্জ থানার বাজার গ্রাম মৌজাস্থ ২১৮ নং এস এ খতিয়ানে ২২৮ দাগে ০.২১৩ শতক সম্পত্তি আমার খরিদকৃত যাহার দলিল নম্বর ৩৯৩৪।
অপরদিকে ভ‚মিদস্যু মতিয়ার রহমান ২০১৮ সালে একই দাগে ০.১০১৩ শতক সম্পত্তি ক্রয় করেন। যাহার দলিল নম্বর ২৯৫। খাদিজা খাতুন আরো জানান ভ‚মিদস্যু মতিয়ার রহমানের নিজ দলিলে আমার(খাদিজা) জমির চৌহদ্দি ঠিক থাকার সত্বেও আমার সম্পত্তি জবর দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে আমি আমার স্বামী ও অবুঝ সন্তানদের নিয়ে আমাদের জীবন এখন নিরাপত্তাহীন অবস্থায়। এখন তার পরিবারের নিরাপত্তা সহ ক্রয়কৃত একমাত্র বসতভিটাতে যেন শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারে সে বিষয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
