শুক্রবার , ২৩ জুন ২০২৩ | ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. আইন আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. আশাশুনি
  4. কলারোয়া
  5. কালিগঞ্জ
  6. কৃষি
  7. খুলনা
  8. খেলা
  9. তালা
  10. দেবহাটা
  11. বিনোদন
  12. যশোর
  13. শিক্ষা
  14. শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  15. শ্যামনগর

‘কবি-সাহিত্যিকদের চোখে স. ম আলাউদ্দীন’ শীর্ষক আলোচনা সভা

প্রতিবেদক
satkhirar sakal
জুন ২৩, ২০২৩ ১:০০ পূর্বাহ্ণ

সকাল ডেস্ক: দৈনিক পত্রদূতের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা স. ম আলাউদ্দীনের ২৮তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ‘কবি-সাহিত্যিকদের চোখে স. ম আলাউদ্দীন’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বিকেলে সাতক্ষীরার ম্যানগ্রোভ সভাঘরে বসেছিল এ উপলক্ষে বরেণ্য কবি-সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিজনদের মিলনমেলা।

আষাঢ়ের বৈকালিক আয়োজনে জেলার কবি-সাহিত্যিকগণ তুলে ধরেন দৈনিক পত্রদূতের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা স. ম আলাউদ্দীনের জীবন ও কর্মের আলোকিত নানা দিক। বক্তারা বলেন, স. ম আলাউদ্দীন ছিলেন একজন তুখোড় সৎ ও স্বচ্ছ রাজনীতিক, একজন দক্ষ সংগঠক, একজন আদর্শ শিক্ষক, একজন নিবেদিত মানবতার সেবক, একজন মুক্তিকামী বিপ্লবী যোদ্ধা, একজন কবি, একজন গীতিকার, একজন অভিনেতা, একজন সুবক্তা, একজন সমাজ সংস্কার লেখক, একজন সুচিন্তক, একজন ব্যবসায়ী, একজন শিক্ষাবিদ ও একজন অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ। স. ম আলাউদ্দীন নিরবে নিভৃতে সাহিত্যের সাধনা করে গেছেন।

তিনি কবিতা লিখেছেন, গান লিখেছেন। তাঁর লেখা ‘দেশের সীমানা নদীর ঠিকানা যেথা গিয়েছে হারিয়ে, সেথা সাতক্ষীরা রূপমায়া ঘেরা বনানীর কোলে দাঁড়িয়ে, সাগর বনানী মধুপ কুজনে সাতক্ষীরা মোহময়, পথিক সুজনে ডাকে নিরজনে প্রাণের বারতা কয়।’ কবিতাটি সাতক্ষীরার ইতিহাস-ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বক্তারা বলেন, সাতক্ষীরার সব তথ্য যদি হারিয়ে যায়-শুধু এই চার লাইনের কবিতাটি থেকেই আবার সব তথ্য ফিরে পাওয়া সম্ভব। এভাবে তাঁর লেখা অরুণ প্রাতের তরুণ প্রজন্মকে যুগ থেকে যুগান্তরে আলোর পথ দেখাবে। স. ম আলাউদ্দীন ছিলেন একজন সনেট লেখক।

তিনি একজন গীতিকারও ছিলেন। অসংখ্য গণসংগীত রচনা করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর সংরক্ষণের অভাবে পান্ডুলিপি হারিয়ে যায়। কিন্তু দু-একটি যা আছে তা থেকে বোঝা যায় তিনি কত বড় মাপের গীতিকার ছিলেন। ‘মোর ছখিনার কপালের টিপ মুইছা গেছে ঘামে’ গানটি অবিনাশী হয়ে থাকবে। বক্তারা বলেন, স. ম আলাউদ্দীন একজন দক্ষ অভিনেতা ছিলেন। তিনি ‘জয় বাংলা’ সিনেমায় নেতার চরিত্রে অভিনয় করে মহান মুক্তিযুদ্ধে চেতনাকে শাণিত করেছেন।

তার অভিনয় ও বক্তব্য যুব সমাজকে দেশ প্রেমে উদ্দীপ্ত করে। স. ম আলাউদ্দীন ছিলেন একজন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। ৬২-এর শিক্ষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে হাতেখড়ি স. ম আলাউদ্দীনের শিক্ষা ভাবনা ছিল অনন্য। শিক্ষার রূপরেখা নিয়ে আজ থেকে ৩০ বছর আগে তাঁর ভাবনা আজকের প্রেক্ষাপটে বাস্তব। তিনি বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করে সেই রূপরেখা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর যদিও বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক স্কুল এন্ড কলেজে সেই শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হয়নি। কিন্তু জেলার অনেক প্রতিষ্ঠানে পরবর্তীতে তা কার্যকর হয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একজন নির্ভেজাল কর্মী ছিলেন তিনি। যে কারণে পাকিস্তান সরকার তাকে সশ্রম কারাদন্ড ও ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি সেনাবাহিনীতেও যোগ দিয়েছিলেন। এমনই একজন প্রতিভাবান ব্যক্তিকে একটি বিশেষ গোষ্ঠী ১৯৯৬ সালের ১৯ জুন রাতে গুলি করে হত্যা করেছে। তাঁর হত্যাকান্ডের মধ্যদিয়ে সাতক্ষীরার উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বেঁচে থাকলে সাতক্ষীরা কৃষি, শিক্ষা, সাহিত্য, ব্যবসা-বাণিজ্য, যাতায়াত ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে যেতে পারতো। স.ম আলাউদ্দীনের লেখা সাহিত্যকর্ম পাওয়া গেলে তিনি জাতীয় পর্যায়ের একজন হতে পারতেন।

সাতক্ষীরা ইতিহাস-ঐতিহ্য আরও সমৃদ্ধ হতে পারতো। বক্তারা তরুণ প্রজন্মের মাঝে স. ম আলাউদ্দীনের কর্মময় জীবনালেখ্য ছড়িয়ে দেওয়ার আহŸান জানান। সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক জেলা শিক্ষা অফিসার বরেণ্য কবি কিশোরী মোহন সরকার, দৈনিক পত্রদূতের উপদেষ্টা সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, দৈনিক পত্রদূতের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক স. ম আলাউদ্দীন তনয়া লায়লা পারভীন সেঁজুতি, জেলা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি সাহিত্যিক শহিদুর রহমান, বরেণ্য সংগীত শিল্পী আবু আফফান রোজবাবু, অধ্যাপক মোস্তাক আহমেদ (শুভ্র আহমেদ), উদীচী সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান, বীরমুক্তিযোদ্ধা মুরারী মোহন সরকার, শিক্ষক খগেন্দ্র নাথ দাস, সংস্কৃতিজন মনজুরুল হক, শিক্ষক ও কবি গাজী মোমিন উদ্দীন, মনিরুজ্জামান মুন্না, অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, কবি নিশিকান্ত ব্যানার্জী, স. ম তুহিন, মুশফিকুর রহমান মিল্টন, সুদয় কুমার মন্ডল, ম. জামান প্রমুখ।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক পত্রদূতের বার্তা সম্পাদক এসএম শহীদুল ইসলাম, দীপ্ত আলাউদ্দীনের সম্পাদক শেখ তানজির আহমেদ, দৈনিক পত্রদূতের চীফ রিপোর্টর আব্দুস সামাদ, দৈনিক সাতক্ষীরার সকালের মফস্বল বার্তা সম্পাদক আলতাফ হোসেন বাবু, দৈনিক পত্রদূতের নিজস্ব প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান সরদার, শেখ আব্দুল আলিম, সেলিম হোসেন, শিক্ষক ও কবি অরুণ সন্যাল, সাংবাদিক এসএম হাবিবুল হাসান, কবি নাসরিন নাজরানা বেবিম আশরাফুল হক রাজ্জাক, কবি নুসরিকা অদ্রি প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দৈনিক পত্রদূতের সহকারী সম্পাদক (সাহিত্য) গাজী শাহজাহান সিরাজ।

সর্বশেষ - সাতক্ষীরা সদর