ফজলুল হক, কালিগঞ্জ প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ সীমান্তবর্তী উপকূলীয় এলাকার অধিকাংশ মানুষের জীবন জীবিকার নির্ভর ও বেঁচে থাকার একমাত্র পথসহ আয়ের উৎস রেনুপোনা আহরণ করা। মধ্যবিত্ত ও নি¤œবিত্ত রোজগার করা খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের সংসারের চাকা ঘোরে নদীতে রেনু পোনা সংগ্রহ করে।
গত সোমবার ১৯ জুন বিকেলে উপকূলীয় সীমান্তবর্তী ভেড়িবাঁধ এলাকা ঘুরে জানা গেছে সীমান্তবর্তী উপকূলীয় মানুষের জীবন জীবিকার তাগিদে তারা প্রতিদিন প্রতিনিয়ত নদীর তীরে নৌকা বৈঠা নেটজাল দড়ি সহ আনুষঙ্গিক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে নদীর স্রোতের সাথে তাল মিলিয়ে নদীতে নেট জল ফেলে বাগদা চিংড়ির রেনু, গলদা চিংড়ি রেনু, হরিনা চিংড়ির রেনু, ভেটকিও বাঙাল মাছের রেনু সংগ্রহ করে নিজেরা অথবা আড়াঁতদারের মাধ্যমে ঘের মালিকদের কাছে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার উকসা গ্রামের বাবর আলী মন্ডল, হরিদাস পাল, ইব্রাহিম হোসেন, সন্তোষ কুমারসহ আরো অনেকের সাথে কথা বললে তারা জানান, তাদের জীবিকার তাগিদে লড়াই সংগ্রাম করে প্রতিনিয়ত বেঁচে থাকতে হয়।
যেমন একদিকে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবি অন্যদিকে নদীর ওপার ভারতের বাঁকড়া সীমান্তরক্ষী বিএসএফদের সাথে জবাবদিহিতা করে চলতে হয়। কারণ দুই দেশের আইনের বাধ্যকতা থাকায় দুই দেশের সীমান্ত এলাকায় নিয়োজিত সীমান্ত রক্ষী বাহিনীরা কেউ কারোর সীমানা অতিক্রম করতে দেন না। অন্যদিকে জলে কুমির, সাথে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝড়-বৃষ্টি জলোচ্ছ¡াস তুফান তো আছেই।
এত কিছুর পরেও তারা বর্তমানে কিছুটা শান্তিতে আছে বলে জানিয়েছেন। কারণ এই সময়টায় তারা নদীতে চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি রেনু সংগ্রহ করতে পারছেন। রেনুপোনা সংগ্রহকারী জেলেরা এবং ক্রয়-বিক্রয়কারী মহাজন বসন্তপুর এলাকার গোবিন্দপদ মন্ডল, ইসমাইল শেখ, হাবু মোল্লা জানান, বর্তমান এক হাজার বাগদা চিংড়ির রেনু বিক্রয় হচ্ছে ১২/১৩ শত টাকা, গলদা চিংড়ি রেনু বিক্রয় হয় হাজার প্রতি ১৭/১৮ টাকা দরে এবং হরিনা চিংড়ির রেনু বিক্রয় হচ্ছে ৩/৪ শত টাকা সিকে ওজনে।
প্রতিদিন এক একটি নৌকায় মাথাপিছু ৯শত থেকে ১ হাজারের অধিক জনপ্রতি রেনুপোনা সংগ্রহ করতে পারেন বলে মাছ ধরা ব্যক্তিরা জানান। বর্তমান সময়টা আয় রোজগারে খুবই ভালো কাটছে বলে এমনটি জানিয়েছেন সীমান্তবর্তী উপক‚লীয় রেনু পোনা সংগ্রহকারী জেলেরা। এ ব্যাপারে মথুরেশপুর ইউনিয়নের মেম্বার আরিজুল ইসলাম ও সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার জাহানারা খাতুনের সাথে কথা বললে তারা জানান, সীমান্তবর্তী ভেড়িবাধ উপক‚লীয় এলাকার অধিকাংশ সাধারণ মানুষ বড় ধরনের প্রাকৃতিক জলোচ্ছ¡াস বা দুর্যোগ না হলেই তারা স্বাভাবিকভাবে রেনু সংগ্রহ করে প্রতিনিয়ত আয় রোজগার করে ভালোভাবেই জীবিকা নির্ভর করতে পারে।