শেখ বাদশা, আশাশুনি : দারিদ্রতার ভয়াবহ ছোবল থেকে মুক্তি পেতে বাংলাদেশে স্বামী, সন্তান, পিতা-মাতা সহ পরিবার-পরিজন রেখে সৌদি আরবে বাসা বাড়িতে শ্রমিকের কাজ করতে যান অসহায় পরিবারের গৃহবধূ স্বপ্না খাতুন। তিনি আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা গ্রামের আমিনুর রহমানের কন্যা। প্রায় বছরখানেক আগে পরিবারের সবার জন্য সুখ কিনতে বাসা বাড়ির শ্রমিকের কাজ নিয়ে সৌদি আরব যান স্বপ্না খাতুন।
কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস,প্রবাসে গৃহকর্ত্রীর হাতে চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে অন্ধত্ব আর পঙ্গুত্বকে সারথি করে দেশে ফিরেছেন স্বপ্না। চরমভাবে নির্যাতনের শিকার স্বপ্না খাতুন বলেন কারণে অকারণে সৌদির বাসা মালিক মাকসুদ আলম ও তার স্ত্রী তাকে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। সর্বশেষ তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে স্বপ্না খাতুনের হাতে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গরম আয়রণ মেশিনের তাপ দিয়ে ঝলসে দেয়। মাথায় মারাত্মকভাবে আঘাত করায় দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন স্বপ্না খাতুন।
জ্ঞান হারিয়ে ফেললে শরীরের বিভিন্ন স্থানে অমানুষিক নির্যাতনের ফলে কোমর থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত পঙ্গুত্ববরণ করেন স্বপ্না খাতুন। ঢাকার বনানী এলাকার নাও ভিশন এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি আরব যান স্বপ্না খাতুন। সৌদি আরবে স্বপ্না খাতুন আলহাদি গ্রামের ১৩নং রোডের ১৩নং বাসায় মাকসুদ আলমের বাড়ীতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন বলে জানান তিনি।
অসহায় স্বপ্না খাতুনের মা আশুরা বেগম জানান সৌদি থেকে বাংলাদেশ আসা এক যাত্রীর কাছে মেয়ের সাথে ঘটে যাওয়া বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানতে পেরে ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে গুরুত্বর আহত মেয়েকে বাড়ীতে নিয়ে আসি। তার এখন উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। আহত স্বপ্না খাতুনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান পিতা আমিনুর রহমান।
তিনি আরও বলে মেয়ের উন্নত চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে মেয়ের উন্নত চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন পরিবারটি। তাদের যোগাযোগের মোবাইল নং ০১৯১৬৭৬৭৬৬২. একই সাথে এ ঘটনার সাথে জড়িত এজেন্সি সহ সৌদি নাগরিক মাকসুদ আলমকে আইনের আওতায় আনতে এবং ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য সংশ্লিষ্ট এম্বাসি ও ইন্টারন্যাশনাল মানবাধিকার সংস্থার কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন অসহায় ভুক্তভোগী পরিবারটি।