মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি : যশোরের মণিরামপুরে রহিমা বেগম (৩৫) নামের এক বিধবা নারী অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে বরুন দত্ত (২৮) নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। রোববার সকালে ৪টার দিকে উপজেলার পোড়াডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় রহিমার ভাই আবদুল্লাহ বিশ^াস বাদি হয়ে মামলা করেছেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানাযায়, ঘটনার রাতে বিধবা নারীর ঘরে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা বরুন দত্তকে আটক করে। এ সময় বরুন দত্তসহ ওই নারীকে মারধর করা হয়। এক পর্যায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আক্তার হোসেন, গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গীর হোসেন, আবু হানিফা, আব্দুল মান্নান বরুন দত্তকে তাদের জিম্মায় নেয়।
অভিযোগ উঠেছে তারা পুলিশে খবর না দিয়ে বিষয়টি রফাদফা করতে রবীন দত্তের বাবার কাছে দেনদরবার শুরু করে। অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলে বরুন দত্তকে আক্তার হোসেনের বাড়িতে সারারাত আটকিয়ে রাখা হয়। অপরদিকে রহিমা বেগমকে তার নিজ বাড়ির ঘরে রাখা হয়। এর মধ্যে রাতের কোন এক সময় অপমান সইতে না পেয়ে রহিমা বেগম গলায় ফাঁস দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার ভোরে ওই নারীর সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙ্গে দেখতে পায় গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছে।
এ সময় স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেয় গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গীর হোসেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেন জানান, গভীর রাতে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান বরুন দত্তকে রহিমার ঘর থেকে বের করা হচ্ছে। পরে রবীন দত্তকে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আক্তার হোসেনের বাড়িতে সারারাত আটকিয়ে রাখা হয়। ভোরে জানতে পারেন ওই নারী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, বরুন দত্তকে ওই নারীর ঘর থেকে বের করার পর মণিরামপুর থানা পুলিশে খবর দেয়ার কথা তার স্মরনে ছিল না। বিষয়টি ভুল হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। এ ব্যাপারে আক্তার হোসেন জানান, বিষয়টি গোপনে মিমাংসার জন্য বরুন দত্তকে নিজ বাড়িতে আটকিয়ে রাখা হয়েছিল। কিন্তু পরে যখন জানতে পারেন ওই নারী আত্মহত্যা করেছে, তখন স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেয়া হয়। রহিমার ভাই আব্দুল্লাহ বিশ্বাস দাবি করেছেন, তার বোনকে মারধর করে হত্যা করা হয়েছে।
মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মনিরুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে বরুন দত্তকে আটক করা হয়েছে। ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত রহিমা বেগম একই গ্রামের মৃত. ইহছানুল ফকিরের স্ত্রী এবং আটক বরুন দত্ত ওই গ্রামের রবীন্দ্রনাথ দত্তের ছেলে।