তাপস সরকার, তালা : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা আসন্ন। এ উপলক্ষে সাতক্ষীরার তালায় মন্দিরগুলোতে শুরু হয়েছে প্রতিমা তৈরীর কাজ। তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। জানাগেছে, এ বছর তালা উপজেলায় ১৯৫টি মন্দিরে পূজার প্রস্তুতি চলছে। এর মধ্যে ধানদিয়া ইউনিয়নে ১৭টি, নগরঘাটায় ৯টি, সরুলিয়ায় ২১টি, কুমিরায় ১৪টি, তেঁতুলিয়ায় ১০টি, তালা সদর ইউনিয়নে ১৯টি, ইসলামকাটিতে ২১টি, মাগুরায় ১২টি, খলিষখালী ২২টি, খেশরায় ১৪টি, জালালপুরে ১৩টি ও খলিলনগর ইউনিয়নে ২৩টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। পঞ্জিকা অনুসারে, আগামী ১৪ অক্টোবর মহালয়ার মধ্যে দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়বে।
২০ অক্টোবর ষষ্ঠী, ২১ অক্টোরর সপ্তমী, ২২ অক্টোবর অষ্টমী, ২৩ অক্টোবর নবমী, ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্যে দিয়ে ৫দিনব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা পরিসমাপ্তি ঘটবে। উপজেলায় মন্দির ঘুরে দেখে ও জানা গেছে, মন্দিরগুলোতে শুরু হয়েছে প্রতিমা তৈরীর কাজ। প্রতিমা শিল্পীরা প্রতিমা তৈরীর কাজে গভীর মনোনিবেশ করেছেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তারা দেবী মূর্তি তৈরী করছেন। ইতিমধ্যে মন্দিরগুলোর কাঠামে খড় ও মাটি দিয়ে পরম যতেœ প্রতিমা শিল্পীরা গড়ছেন প্রতিমা। প্রতিমা শিল্পী তারক দাস বলেন, প্রতিমা তৈরিতে পৌরাণিক কাহিনীকে নানা আদলে ফুটিয়ে তুলার চেষ্টা চলছে। কারুকার্যতা শেষ হলে রং তুলির নিখুঁত আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হবে।
প্রকৃত রূপ তোলা হবে নাক, কান, চোখ, মুখ ইত্যাদি দিয়ে। তবে এই কাজে পরিশ্রমের তুলনায় পারিশ্রমিক পর্যাপ্ত না হলেও দৃষ্টিনন্দন সুন্দর প্রতিমা তৈরি করতে মনের মাধুরী দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক প্রণব ঘোষ বাবলু বলেন, উপজেলায় ১৯৫টি পূজামন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। শান্তিপূর্ণভাবে পূজা অনুষ্ঠানের জন্য ইতোমধ্যেই পুলিশি তদারকি শুরু হয়েছে। প্রতিটি পূজা মন্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে।
উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার প্রতিবারের মতো এবারও প্রশাসনের সর্বাত্মক সহযোগিতা পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সরকারিভাবে যে অনুদান আসে তা অতিদ্রæত মন্ডপ কমিটির কাছে পৌঁছে দেয়া হবে। তালা থানার ওসি মোঃ মোমিনুল ইসলাম-পিপিএম জানান, দুর্গাপূজায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে। এ বছর থানার প্রতিটি মন্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। পূজামন্ডপগুলোয় সাধারণত তিন ভাগে বিভক্ত করে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে থাকে। এবারও পুলিশ সদস্য, র্যাব বাহিনীর সদস্য, আনসার ভিডিপিসহ গোয়েন্দা পুলিশের কঠোর নজর থাকবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের কঠোর হাতে দমন করা হবে বলে জানান তারা।