আশাশুনি প্রতিনিধি : কথায় আছে কেশর লাগালেই কাক কখনো ময়ূর হয় না। ঠিক তেমনি কোট-টাই লাগালেই তিনি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী হতে পারেন না। কিন্তু মফস্বল পর্যায়ে সরল সোজা মানুষগুলো চিনতে পারেন না কে অফিসার, আর কে বা বাটপার। আর এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা বাজার সংলগ্ন একটি বেকারি প্রতিষ্ঠানে।
তাদের বহনে আছে একটি সাদা রংয়ের প্রাইভেট কার, পোশাক আশাকে অফিসার। তাতে আবার পরিহিত আছে কোর্ট-টাই। বেকারি মালিক নাসির উদ্দিন খোকন স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে সোমবার বেলা ১১টার দিকে কোট ও টাই পরিহিত অবস্থায় বুধহাটা বাজার সংলগ্ন ভাই ভাই সততা বেকারিতে একটি সাদা রংয়ের প্রাইভেট কারে দুইজন ব্যক্তির আগমন ঘটে। বেকারির বিভিন্ন পয়েন্টে স্থাপন করা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় দুইজন ব্যক্তি বেকারি প্রতিষ্ঠানের কারখানায় প্রবেশ করেন। বিভিন্ন ইভেন্টে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন তারা। একপর্যায়ে সব পরিদর্শন শেষে ক্যাশ কাউন্টারে এসে উপস্থিত হন তারা।
এ সময় নিরক্ষর বেকারি মালিকের হাতে ইংরেজি ও বাংলায় লেখা তাদের দুইটি ভিজিটিং কার্ড তুলে দেন। ভিজিটিং কার্ডের পরিচয় অনুযায়ী তাদের মধ্যে একজন ইগঋ টেলিভিশনের খুলনা জেলা প্রতিনিধি ও অন্যজন বাংলাদেশ সমাচার এবং দৈনিক অনির্বাণ পত্রিকার খুলনার সিনিয়র রিপোর্টার। একই সাথে তিনি দৈনিক অন্যদৃষ্টি পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদকও বটে।
বেকারি ভিজিট শেষে বেকারির কাগজপত্র সহ বেকারির বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন তারা। কোন আইনের ধারায় বেকারি মালিক নাসির উদ্দিনের নামে মামলা হবে তাও অনর্গল একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মত বলে যান তিনি। এ সময় বেকারি মালিক একটু ভীতু-সন্তস্ত হলে কথাবার্তার এক পর্যায়ে তাদের প্রাইভেট কারের তেল খরচ হিসাবে ১ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন তারা।
এই মন্দার বাজারে কেনাবেচা নেই বলে ৫শত টাকা নেওয়ার আকুতি জানালেও শেষ রক্ষা হয়নি। বেকারির কর্মচারীকে পাঠিয়ে পার্শ্ববর্তী এক ব্যবসায়ীর নিকট থেকে টাকা ঋণ করে তাদের দাবি কৃত তেল খরচ বাবদ এক হাজার টাকা দিতে বাধ্য হন বেকারি মালিক নাসির উদ্দিন। এই পুরো ঘটনা বেকারির সামনে ভিতরে ও ক্যাশ কাউন্টারে স্থাপন করা সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা হয়।
তথ্য অনুসন্ধানে জানাগেছে তারা একই সাথে বুধহাটা ইউনিয়ন ভ‚মি অফিস সহ বুধহাটা এলাকার কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কখনো সাংবাদিক কখনো ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে করেছেন চাঁদাবাজি। তাদের এই বাটপারির ঘটনা দেখে হতভম্ভ হয়ে যান স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং স্থানীয় সচেতন মহল। তাদেরকে চাঁদাবাজি অভিযোগে অতি দ্রæত আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।