খুলনা অফিস : সরকার তলে তলে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে অবৈধ সম্পদ রক্ষা করতে- বাংলাদেশের জনগণকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়ে পালানোর পথ খুঁজছেন। তাঁর দলের দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন জায়গার দেন-দরবার করছেন উল্লেখ করে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির সম্পদ নয়, তিনি সারা বাংলাদেশের মানুষের সম্পদ।
তাঁর চিকিৎসা কোন মানবিক বিষয় নয়, কোন রাজনৈতিক বিষয় নয়, তাঁর চিকিৎসা সভ্যতা ও ভদ্রতার ব্যাপার। সারা বাংলাদেশের মানুষ আজ অবৈধ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে একাট্টা হয়েছেন। তারা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করেই ঘরে ফিরবেন। সারাদেশে সনাতন ধর্মালম্বীদের পুজা শুরু হয়েছে। সরকার তলেতলে পুজামন্ডবে হামলা চালিয়ে দেশে জরুরীঅবস্থা জারি করে নির্বাচন পিছিয়ে নিতে চায়।
তিনি বলেন শেখ হাসিনার অধীনে-অবৈধ নির্বাচন কমিশনের অধিনে বাংলাদেশে কোন নির্বাচন হবে না। তত্ত¡বধায়ক সরকারের অধীনে- নিরপেক্ষ সরকারের অধীনের বাংলাদেশের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ডিসি ইউএনওদের গাড়ি ঘুষ দিয়ে নির্বাচনের বৈতরণী পাড় হওয়া যাবে না।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) বেলা ১১টায় থেকে ২টা পর্যন্ত কেডি রেঘাষ রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দেশনেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা ও মুক্তির দাবিতে অনশন কর্মসুচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। হেলাল বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে খালেদা জিয়ার অবদান অতুলনীয়।
তিনি কেবল সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রীই নন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সেনা প্রধানের স্ত্রী। মহান মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডারের সহধর্মিণী। দেশের সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। আজ তার জীবন সঙ্কটাপন্ন অবস্থায়। কিন্তু ফ্যাসিস্ট তাবেদার সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে রাজনৈতিক নোংরামি শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় সরকারি টাকা ব্যায় করে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী থাকাবস্থায় নির্বচনি তফসিল ঘোষনার আগে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে তিনি যে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন তার বিচার একদিন এদেশের মাটিতে হবে। বক্তারা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বয়স এখন ৭৮ বছর। প্রবীণ বয়সেও তিনি ফরমায়েশি রায়ে বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন। নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। দীর্ঘ চার বছর তার যথাযথ কোনো চিকিৎসা হয়নি। কারাগারে অমানবিক পরিবেশেও তিনি অনেক নতুন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। হার্টের সমস্যা, লিভারের সমস্যা, কিডনি ও চোখের সমস্যা ছাড়াও পুরনো আর্থ্রাইটিস এবং কভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়া ও কোভিড পরবর্তী জটিলতায় তার শারীরিক অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। খালেদা জিয়া দেশের তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। চার দশকের বেশি সময় ধরে তিনি এদেশের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিএনপির মতো দেশের অন্যতম বড় এবং জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের তিনি চেয়ারপারসন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, বহুদলীয়, গণতন্ত্র, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং এদেশের উন্নয়নে খালেদা জিয়ার অসামান্য অবদান রয়েছে। খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে অনশনে কর্মসুচিতে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু। মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন ও জেলা সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পির পরিচালনায় অনশন চলাকালে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহবায়ক আমীর এজাজ খান, সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান, আবু হোসেন বাবু, খান জুলফিকার আলী জুলু , স.ম আ রহমান, সাইফুর রহমান, বেগম রেহেনা ঈসা, এস এ রহমান বাবুল, অ্যাড. নরুল হাসান রুবা, কাজী মাহমুদ আলী, মো. রকিব মল্লিক, শের আলম সান্টু, মোস্তফাউল বারী লাভলু, আবুল কালাম জিয়া, মোল্লা মোশাররফ রহমান, বদরুল আনাম খান, অধ্যাপক মনিরুল হক, মাহাবুব হাসান পিয়ারু, শেখ তৈয়বুর রহমান, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, একরামুল হক হেলাল, আশরাফুল আলম খান, মাসুদ পারভেজ বাবু, শেখ সাদি, হাসানুর রশিদ চৌধুরী মিরাজ, এনামুল হক স্বজল, কে এম হুমায়ন কবির (ভিপি হুমায়ুন). হাফিজুর রহমান মনি, শেখ জাহিদুল ইসলাম, মোঃ মুরশিদ কামাল, কাজী মিজানুর রহমান, মোল্লা ফরিদ আহমেদ, সৈয়দ সাজ্জাদ আহসান পরাগ, শেখ ইমাম হোসেন, হাবিবুর রহমান বিশ্বাস, আবু সাইদ হাওলাদার আব্বাস, মোল্লা সাইফুর রহমান, এস এম, এনামুল হক, আব্দুল মান্নান খান, মোজাফফর হোসেন, আসলাম পারভেজ, বিকাশ মিত্র, হাবিবুর রহমান, সেলিম রেজা লাকি, মো. মোড়ল, ফকরুল আলম, শেখ আবদুর রশিদ, চৗধুরী কাওসার আলী, শাহিনুল ইসলাম পাখি, এ্যাড. মোমরেজুল ইসলাম, ডা. আবদুল মজিদ, খায়রুল ইসলাম খান জনি, অ্যাড. মাসুম রশিদ, এহতেশামুল হক শাওন, অসিত কুমার সাহা, একরামুল কবীর মিল্টন, এড. এ কে এম শহীদুল আলম, ইলিয়াস হোসেন মল্লিক, নাজির উদ্দিন নান্নু, নাজমুস সাকিব পিন্টু, আহসান উল্লাহ বুলবুল, মোল্লা এনামুল কবির, অ্যাড. মোহাম্মদ আলী বাবু, শেখ জামাল উদ্দিন, আফসার উদ্দিন, আনসার আলী, সুলতান মাহমুদ, নাসির খান, জি.এম.রফিকুল ইসলাম, আব্দুস সালাম, মনিরুজ্জামান লেলিন, আলমগীর হোসেন, কাজী শাহ নেওয়াজ নিরু, আব্দুর রহমান ডিনো, নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর, আরিফুর রহমান, তারিকুল ইসলাম, খন্দকার ফারুক হোসেন, খন্দকার হাসিনুল ইসলাম নিক, সেলিম সরদার, মো. জাহিদ হোসেন, মিজানুর রহমান মিলটন, সরোয়ার হোসেন, শফিকুল ইসলাম শফি, রফিকুল ইসলাম বাবু, আলী আক্কাস, শেখ ফারুক হোসেন, আজিজা খানম এলিজা, সরদার আবদুল মালেক, মাসুদ খান বাদল, রাহাত আলী লাচ্চু, মনির হাসান টিটু, শেখ আবুল বাশার, নুরুল আমিন বাবুল, দিদারুল হোসেন, হেলাল উদ্দিন, শামসুল বারিক পান্না, যুবদলে এবাদুল হক রুবায়েদ, কাজী নেহিবুল হাসান নেহিম , আব্দুল্লাহেল কাফি সখা, সাইফুল ইসলাম সান্টু, আব্দুল আজিজ সুমন, শেখ জাবির আলী, জাসাসের নুর ইসলাম বাচ্চু, শহিদুল ইসলাম, আজাদ আমিন, শ্রমিক দলের উজ্বল কুমার সাহা, খান ইসমাইল হোসেন, আঞ্চলিক শ্রমিক দলের আলমগীর হোসেন তালুকদার, ছাত্রদলে আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি, ইসতিয়াক আহমেদ ইস্তি, গোলাম মোস্তফা তুহিন, মোঃ তাজিম বিশ্বাস, তাঁতী দলের আবু সাঈদ শেখ, মেহেদী হাসান মিন্টু, মাহমুদ আলম লোটাস, মহিলা দলের এ্যাড.তসলিমা খাতুন ছন্দা, এ্যাড. কানিজ ফাতেমা আমিন, সেতারা সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিকুল ইসলাম শাহিন, আতাউর রহমান রনু, কৃষক দলের মোল্লা কবির হোসেন, আক্তারুজ্জামান তালুকদার সজীব, শেখ আবু সাইদ, ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মাহবুবউল্লাহ শামীম, মোঃ আলতাফ হোসেন খান, আসাদুজ্জামান আসাদ, কে. এম মাহাবুবুল আলম, কাজী কামরুল ইসলাম বাবু, মোঃ শহীদ খান, শফিকুল আমিন লাভলু, আব্দুল ওহাব, মোঃ মতলুবুর রহমান মিতুল, মোঃ শাহ্ জালাল, শেখ আব্দুল আলিম, মোস্তফা কামাল, অনশনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন নাগরিক অধিকার পরিষদের আহবায়ক মো. বেল্লাল হোসেন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এড. মাসুদ হোসেন রনি, খুলনা পেশাজীবী পরিষদের আহবায়ক অধ্যা. ডা, শেখ মো. আখতার উজ জামান, বিএফইউজের সহ সভাপতি সাংবাদিক রাশিদুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী হিন্দু আইনজীবী পরিষদের সভাপতি সত্য গোপাল ঘোষ, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড. আব্দুল আজিজ প্রমূখ।
বেলা ২টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সংসদ সদস্য এড. স ম বাবর আলী অনশনরত বিএনপি নেতাকর্মীদেও ফলের জুস পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান।
উল্লেখ্য, দুই মাসের বেশি সময় ধরে ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। গত ৯ আগস্ট তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিএনপি নেত্রীর মেডিকেল বোর্ড অনেক দিন ধরে তাঁর লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে আসছে। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী, খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা করানোর জন্য তাঁর ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন গত ২৫ সেপ্টেম্বর। কিন্তু সরকার সেই আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি।