শেখ বাদশা, আশাশুনি : আশাশুনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রকিবের বিরুদ্ধে ‘ছন্দ ছড়ায় রাসেল সোনা’ বই বিক্রিতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ অনিয়ম দুর্নীতিতে অত্র উপজেলার শিক্ষক মন্ডলী ক্ষোভে ফুসে উঠেছেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানাগেছে, দূযোর্গ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয় কর্তৃক ‘ছন্দ ছড়ায় রাসেল সোনা’ নামের একটি চটি বই সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করেন। প্রকাশিত বই প্রত্যেক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য এক পত্রে সংগ্রহ ও সংরক্ষনের বিষয়ে বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে এসকল প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষাকদের বইটি কিনতে বাধ্য তা কোন পরিপত্র দূযোর্গ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয় বা প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় জারি করেননি।
এদিকে প্রকাশিত বইটি সংগ্রহ ও সংরক্ষনের বিষয়ে বিবেচনার জন্য অনুরোধের পরিপত্রকে হাতিয়ার বানিয়ে আশাশুনি উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রকিব বই বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছেন পাঁচ লক্ষাধিক টাকারও বেশী।
দূযোর্গ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের পরিপত্র সূত্রে জানাগেছে শিশুদের পাশাপাশি বড়দের রাসেল সোনার জীবনি সম্পর্কে ধারণা রাখতে ৩টি করে বই সংগ্রহ ও সংরক্ষনের বিষয়ে বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। এদিকে আশাশুনি উপজেলার ১৬৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছে ৩টি করে বইয়ের পরিবর্তে ৬টি করে ‘ছন্দ ছড়ায় রাসেল সোনা’ বই বাধ্যতা মূলক বিক্রি করা হয়েছে।
যেখানে কিনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র লেখা ‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’ বইটি মাত্র ১৫০টাকায় মার্কেটে বিক্রি হচ্ছে, সেখানে ৫২ পৃষ্ঠার ১০৪ পাতার ‘ছন্দ ছড়ায় রাসেল সোনা’ বইয়ের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচ শত টাকা। বইয়ের পাতায় দেখা গিয়েছে মূল্যের পাশাপাশি নিচের লাইনে কালো কালিতে নির্ধারিত মূল্য লেখা হয়েছে। যা অতিরিক্ত ভাবে লেখা হয়েছে বলে দাবী করেন শিক্ষকরা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে আগরদাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম আলাউদ্দীন, বুধহাটা পশ্চিম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলহাজ হোসেন জানান, পরিপত্র অনুযায়ী ‘ছন্দ ছড়ায় রাসেল সোনা’ বইটি কোন নির্দিষ্ট কোন মূল্য ও বাধ্যতা মূলক ক্রয়ের জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে নির্দেশনা না থাকলেও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ইচ্ছেমত বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষদের কাছে চড়া দামে বই বিক্রয় করেছেন।
প্রতিটি বই পাঁচ শত টাকা করে ৬টি বইয়ের মূল্য তিন হাজার টাকা দরে ১৬৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের নিকট থেকে সর্বমোট পাঁচ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। উপজেলার একাধিক শিক্ষকরা এর প্রতিবাদ করলেও শেষ রক্ষা করতে পারিনি।
তবে অভিযুক্ত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রকিব বলেন, বই গুলো দীর্ঘদিন আমার দপ্তরে পড়ে ছিলো। জেলা প্রাথমিক অফিসের চাপে আমরা বই গুলো প্রতিটি স্কুলে বিক্রয় করতে বাধ্য হয়েছি। তবে অতিরিক্ত মূল্য নেওয়া হয়নি।