শতবর্ষী বড়দল ইউনিয়ন ভূমি অফিসটি মুখ থুবড়ে পড়েছে
শেখ বাদশা, আশাশুনি ব্যুরো : আশাশুনি উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ বড়দল ইউনিয়ন ভ‚মি অফিসটির নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। ভবনটি ছাদের পরিবর্তে টিনসেড হওয়ায় সরকারি ও মালিকানাধীন বিভিন্ন জমির মূল্যবান কাগজপত্র সংরক্ষণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। বর্ষার মৌসুমী ভারী বৃষ্টি হলে জীর্ণশীর্ণ টিনেরসেডের নষ্ট জায়গা দিয়ে ভবনটির ভিতরে পানি পড়তে থাকে।
ফলে নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন মূল্যবান কাগজপত্র। ভূমি অফিসটি পার্শ্ববর্তী লোকালয় ছাড়া নিচু হওয়ায় জলাবদ্ধতাসহ নানা সমস্যার সৃষ্টি হতে দেখা গেছে। দীর্ঘদিন যাবৎ শতবর্ষী পুরাতণ এ সরকারি অফিসটি সংস্কার না করায় বর্তমানে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় শত বছর আগে আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নে বড়দল বাজারের পাশ ঘেষে এ ভ‚মি অফিসটি স্থাপন করা হয়। উপজেলা বড়দল ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি মৌজার ভূমি মালিকরা এই অফিসে ভূমি সংক্রান্ত সেবা পেয়ে থাকেন। শতবর্ষী অফিসটির কোন সংস্কার না হওয়ায় ভবনের জানালা, দরজা ভঙ্গুর অবস্থায় পরিণত হয়েছে। ভূমি অফিসের আশপাশের স্হাপনার তুলনায় অন্তত তিন/চার ফুট নিচু হওয়ায় প্রায়ই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
এছাড়া রাতের অন্ধকার অজ্ঞাত লোকজন অফিসের প্রবেশ দ্বারে প্রতিনিয়ত ময়লা ফেলে আবর্জনার স্তুপ সৃষ্টি করেছে। ফলে বদ্ধপানি ও ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে একদিকে যেমন মারাত্মকভাবে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে অন্যদিকে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে অফিস পরিচালনা করতে হচ্ছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। একই সাথে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে ভ‚মি অফিসের সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষের। জানাগেছে, ভুমি উন্নয়ন কর ও সরকারের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে বিগত কয়েক শত বছর সুনাম করিয়। কয়েক শত বছর পূর্বে সরকারি ৬৬ শতাংশ জমিতে এ ভূমি অফিসটি স্থাপিত হয়।
সেই থেকে এ অফিসের অধীনে ইউনিয়নের ভ‚মির মালিকগণ তারা যথাযথ ভূমি উন্নয়ন কর ও রাজস্ব প্রদান করে আসছেন। তাছাড়া ভূমি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাদি নথিপত্র প্রাথমিকভাবে সংরক্ষণের জন্য ভ‚মি অফিসটি যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে থাকে। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ পুরাতন ওই অফিসটি জরাজীর্ণ অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে কাজকর্ম করতে হচ্ছে দায়িত্বরত তহসীলদার এবং সহায়কদের। এ কারণে চলতি বর্ষা মৌসুমে সামন্য বৃষ্টিতে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে অফিস চত্বর এলাকায়। ফলে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন এলাকা থেকে কর প্রদান করতে আসা সাধারণ মানুষ নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
এবিষয়ে ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান জানান, জরাজীর্ণ অফিসটির সংস্কার,মাটি দ্বারা মাঠ ভরাট, ময়লার স্তুপ অপসারণ করা জরুরি। একটি পাকা ভবন নির্মাণ করা অতি জরুরি, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ভূমি অফিসে আগত ভুমি সবা নিতে আসা আব্দুস সালাম, তকিম উদ্দিন জোয়াদ্দার, সালাহ উদ্দীন, শেখ সোরয়ার হোসেন, জিএ ফিরোজসহ অনেকেই জানান, ভবন নির্মান জরাজীর্ণ তহসিল অফিস পুন:সংস্কার, অফিস চত্বরে মাটি দ্বার উন্নয়ন এবং ময়লা আবর্জনার স্তুপ অপসারণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রনি আলম নুর বলেন সমগ্র বাংলাদেশের যতগুলো জরাজীর্ণ তফসিল অফিস আছে, তার অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় আশাশুনি উপজেলার একাধিক তফসিল অফিসের অবকাঠামো গত উন্নয়নের জন্য তালিকা করা হয়েছে এবং মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে।