এ. মাজেদ : একই ব্যাক্তি একসাথে সবকিছু করবে, সরকারী বেতন নিবে, সাংবাদিকতায় কর্মরত প্রতিষ্ঠানেরও বেতন নিবে আজব ব্যাপার! একজন শিক্ষক স্কুল বা কলেজে গেছে, এমন সময় হঠাৎ তার পত্রিকা অফিস থেকে মোবাইল আসলো-যেমন, একজন লোকের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ পুলিশ মর্গে নিয়ে গেছে, সকল চ্যানেল নিউজ দেখাচ্ছে বা পত্রিকায় আসছে।
আপনি দ্রæত নিউজ কভার করেন। তাৎক্ষণিক শিক্ষক সবকিছু ফেলে চলে গেলেন মেডিকেলে। সাংবাদিকদের এরকম আরো অনেক ক্ষেত্রে সংবাদ সংগ্রহ করার জন্য দৌড়াতে হয়। এতে একদিকে যেমন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হচ্ছে পাশাপাশি পত্রিকায় নির্দিষ্ট সময়ে সংবাদ প্রচার হচ্ছেনা। অন্য দিকে বেকার সমস্যাও দূর হচ্ছে না। সরকারি কর্মচারী নিয়োগ ও বিধিমালা অনুযায়ী একজন ব্যক্তি দু’স্থান থেকে বেতন ভাতা বা অন্যান্য সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে না।
যদি এই বিধিমালার ব্যত্যয় ঘটে? সে ক্ষেত্রে উক্ত অভিযুক্ত ব্যক্তি সরকারি কর্মচারী আইন বিধি অনুযায়ী দন্ডিত হবেন। একজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পাশাপাশি একজন সাংবাদিক। এই নামীয় সুবাদে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় স্থানীয় বিডিএফ প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা সেজে সুকৌশলে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে একাধিক সুত্রে জানা গেছে।
সত্যতা যাচাইয়ে প্রাপ্ততথ্যে জানা গেছে, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর ইউনিয়নের জাহানাবাজ গ্রামের স্থায়ী নাগরিক ও স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃত আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র মো. আসাদুল ইসলাম। সুকৌশলে বিভিন্ন নামে নিজের পরিচয় গোপন করে স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করে থাকেন তিনি।
তার গোপনীয় এই পরিচয়কে শক্তি করে কৌশলে বিডিএফ প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা পরিচয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ সুযোগ সুবিধা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ যেন ‘ধরবো মাছ ছোবো না পানি’ কৌশল অবলম্বন করেছেন এই ভদ্র মানুষটি। বিডিএফ প্রেসক্লাবের একাধিকবার নির্বাচিত সভাপতি এম এ হাকিম জানান-চাকরির বাধ্যবাধকতা থাকায় তিনি বহুদিন যাবৎ পত্রিকায় নিজের নাম গোপন রেখে সাংবাদিকতা করে থাকেন।
প্রভাবশালী এই মানুষটি কৌশলে দীর্ঘদিন বিডিএফ প্রেস ক্লাবের উপদেষ্টার বসে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছে। বিডিএফ প্রেস ক্লাবের দীর্ঘদিনের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু সাঈদ জানান- ধুলিহর জাহানাজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আসাদুল ইসলাম সাতক্ষীরায় বহুল প্রচারিত দৈনিক সাতনদী পত্রিকার ধুলিহর ইউনিয়ন প্রতিনিধি পরিচয়ে প্রেস ক্লাবে সদস্যপদ গ্রহণ করে উপদেষ্টা পদে একাধিকবার আসীন হয়েছেন।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল গনির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান- প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক সাংবাদিকতা করতে পারবে না। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদেও সাংবাদিকতা করার জন্য সরকারী বিধি অনুযায়ী নিষিদ্ধ আছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় কোন শিক্ষক যদি সাংবাদিকতা করে, সেক্ষেত্রে তিনি আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানান। সদরের কোন শিক্ষক সাংবাদিকতা করেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আমার জানা নাই। কেহ থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।