নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা সদরে দুই মেয়াদে তিনি এমপি ছিলেন। আমরা তার কাছ থেকে অপমান ছাড়া কিছু পাইনি। তিনি কাউকে সম্মান দেননি। তিনি ও তার ভাই ছাড়া কাউকে মুক্তিযোদ্ধা মনে করেন না। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে গ্রæপটি এবং ভাগ করার চেষ্টা করছেন। নানা অপকর্ম-দুঃশাসনের মাধ্যমে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের কলঙ্কিত করেছেন।
সাতক্ষীরা সদরের মানুষ মীর মোস্তাক আহমেদ রবি’র দুঃশাসন থেকে মুক্তি চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিন তাকে মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন দেননি তিনটি কারণে। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন, দল গঠন না করে দলের মধ্যে বিভাজন এবং সরকারকে বেকায়দায় ফেলে দুর্নীতি অনিয়ম। আমলনামা বিশ্লেষণ করে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। মনোনয়ন না পাওয়ার খবরে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। এখন তিনি সবাইকে তার কাছে ডাকছেন। ভোট হয়ে গেলে আর কাউকে চিনতে পারেন না।
আমরা এবার সজাগ আছি, আমরা এবার আর ভুল করবো না। শনিবার দুপুরে শহরের পোস্ট অফিস মোড়ে সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে অনুষ্ঠিত মহাজোট প্রার্থী আশরাফুজ্জামান আশুর মতবিনিময় সভায় বক্তরা এসব কথা বলেন। বক্তরা আরও বলেন, এমপি রবি দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি করেছে। জেলার বেসিক সংগঠনগুলো নষ্ট করে দিয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছে। জেলা আইনজীবী, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব, ভোমরা স্থল বন্দর ধ্বংস করে দিয়েছে।
আইনজীবী সমিতি, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এবং ভোমরায় শ্রমিকদের মধ্যে আজ আর ভোট হয়না।
বক্তরা আরও বলনে, তিনি নিজেকে এক নম্বর মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবী করেন। কিন্তু শেখ হাসিনা তাকে বর্জন করে মহাজোটের প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আমারও তাকে বর্জন করলাম। জোটের কারণে ২৬ টি আসন থেকে নৌকার প্রার্থীকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। তার কন্যা শেখ হাসিনার স্বার্থ দেখবো। জেলা সব জায়গায় গ্রæপ করে দিয়েছে। নিজের ব্যক্তিগত কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছে। আমাদের উপর থেকে জগদল পাথর সরে গেছে।
আমরা তাকে ঘৃণা করি না, তার কাজকে ঘৃণা করি। মুক্তিযোদ্ধাদের তার দলে নেওয়ার চেষ্টা করছে। মুক্তেযোদ্ধারা তার ডাকে সাড়া দিচ্ছে না। মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে নষ্ট করে দিয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা এড.মোস্তফা নুরুল আলম বলেন, মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এমপি হওয়ার পর জেলার সব প্রতিষ্টান দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। লতিফের মতো একজন ব্যক্তিকে পিপি বানিয়েছে। লতিফের বাবা যুদ্ধের সময় শরণার্থীদের কাছ থেকে সোনদানা ছিনিয়ে নিতো। তার মতো মানুষকে, পিপি বানিয়ে বিচার বিভাগকে কলঙ্কিত করেছে।
একাধিক মুক্তিযোদ্ধা বলেন, এমপি রবির নাম লাল তালিকায় নেই। পরে সে কিভাবে তালিকায় নাম উঠিয়েছে আমাদের জানা নেই।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু আহমেদ বলেন, নেভাল কমান্ড হচ্ছে যারা পাকিস্তান বাহিনী থেকে বিদ্রোহ করে দেশের জন্য যারা যুদ্ধ করেছিলো। আমাদের সদরের এমপি কখনও নৌবাহিনীতে চাকরি করেছিলেন? তিনি নেভাল কামান্ড হন কিভাবে। কলকাতায় রানী সরকারের বাড়িতে থেকে কিভাবে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন। পাকিস্তান সরকার দিয়েছেন ০০০১।
ওনি মুক্তিযোদ্ধা হলে তো মুক্তিযোদ্ধাদের উপকার করার কথা। কিন্তু সবাইকে ক্ষতি করেছেন। শেখ হাসিনা না থাকলে এ দেশ আবারও পাকিস্তান হবে। সবাইকে চেষ্টা করতে হবে ভোট দিয়ে মহাজোটের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নৌকা প্রতিক প্রত্যাহারকৃত প্রার্থী আসাদুজ্জামান বাবু বলেন, গত নির্বাচনের আগে মুক্তিযোদ্ধারা আমাকে সমর্থনপত্র দিয়েছিলেন। সেজন্য তাদের অনেককে অপমান করেছিলেন সদর এমপি। দুইবার এমপি হয়ে নিজেদের জমিদারী, সকলকে প্রজা মনে করতেন। নানা অপকর্ম করে সাতক্ষীরার মানুষের মুখে চুনকালি লাগিয়েছে। যা করেছে তাতে অনেক এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না। মানুষ তার উপর ক্ষেপে আছে।
তিনি আরও বলেন, দলের প্রধান যা বলেন তাই হবে। বঙ্গবন্ধুর কন্যার সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমাকে মনোনয়ন দিয়ে প্রত্যাহার করিয়ে নিয়েছিলেন। এখন যাকে জোটের প্রার্থী করা হয়েছে তার পক্ষে কাজ করছি। দলের জন্য, নেত্রীর জন্য লাঙল জিতাতে হবে। নেত্রীর সিদ্ধান্ত ভুল বলছে। নেত্রীর কাছে সবার আমলনামা আছে। সেই অনুযায়ী মনোনয়ন দিয়েছেন।
তিনি বলে বেড়াচ্ছেন তিনি মনোনয়ন না পাওয়ায় সংখ্যালঘু স¤প্রদায়রা বিপদে আছে। এটির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ এবং প্রধানমন্ত্রীকে খাটো করছেন। অবৈধ টাকা দিয়ে ভোটারদের কিনে নিতে চাইছে। কিছু টাকায় বিবেক বিক্রি করবেন তো। ৫ বছর প্রজা হয়ে থাকতে হবে সেজন্য সবাইকে সজাগ হতে হবে। সব শেষে তিনি লাঙলের পক্ষে চাইলেই।
সাবেক জেলা কমান্ডার মোশারফ হোসেন মশু বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আমাদের জন্য কিছু করেননি। সবাইকে অপমান করেছে। কাউকে ডেকে ডেকে পাচ্ছেনা। ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। আশু এখন প্রধানমন্ত্রীর প্রার্থী। সেজন্য আমরা মহাজোটার প্রার্থী আশরাফুজ্জামান আশুর পক্ষে কাজ করবো এবং তাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবো।
জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও লাঙলের প্রার্থী আশরাফুজ্জামান আশু বলেন, আমি জোটের প্রার্থী। আপনাদের সবাইকে সাথে নিয়ে কাজ করবো। জেলার বেসিক সংগঠনগুলো নষ্ট করে দিয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছে। জেলা আইনজীবী, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব, আইনজীবী সমিতি, ভোমরায় শ্রমিকদের মধ্যে আজ আর ভোট হয়না।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের পরিবেশ নষ্ট করেছে। আমি মুক্তিযুদ্ধের সহযোগি ছিলাম। আমার সনদপত্র নেই। আমি আপনাদের জন্য কাজ করবো। এতোদিন আপনারা মূল্যায়িত হননি। আজ সবাইকে ডাকছেন। প্রধান শেখ হাসিনা আজ সবাইকে সুযোগ করেছিলেন সবাই ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দিতে হবে।
আগামী ৭ তারিখে ব্যালটের মাধ্যমে ১০ বছরের দু:শাসনের জবাব দিবেন। সাবেক জেলা কমান্ডার মশিউর রহমান মশুর সভাপতিত্বে অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, মহাজোটের লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মো. আশরাফুজ্জামান আশু। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান বাবু,বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু আহমেদ। বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিক আহমেদ মোল্লার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. মোস্তফা নুরুল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা জি এম আব্দুল গফুর, বীর মুক্তিযোদ্ধাা মো. কামরুজ্জামান বাবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রিয়াজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসানুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শহিদুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা বি এম আব্দুর রাজ্জাক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মোমিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসনে জাহিদ জাজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রফিকুজ্জামান খোকন প্রমুখ।