সেলিম হায়দার : সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি। ১৯৫২ সালে মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য জীবন বিলিয়ে দেওয়ার ৭২ বছর পরও শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।
তালা উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৭০ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩৫ মাদ্রাসা, ১৩ মহাবিদ্যালয় ও ২১১ প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৫৯টি স্কুল ও মাদ্রাসা এবং ১৭১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই কোনো শহীদ মিনার।
তালা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দীন বলেন, ‘বাংলাদেশের সব আন্দোলন সংগ্রামের সূতিকাগার ভাষা আন্দোলন। আমাদের দুর্ভাগ্য যে ভাষা আন্দোলনের ৭২ বছর পার হলেও তালা উপজেলাসহ দেশের বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনও শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি।
কপোতাক্ষ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র হালদার বলেন, সরকারের কাছ থেকে অনুদান নিয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের চেষ্টা করা হবে। তবে শহীদ মিনার না থাকলেও সকল ধরণের জাতীয় দিবস বিধিমোতাবেক পালন করা হয়ে থাকে।
তালার আটারুই বারুইহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ ফরিদ উদ্দীন বলেন, কয়েক দফা সরকারের পক্ষ থেকে চাহিদাপত্র নিলেও কোনো বরাদ্দ আসেনি। সে কারণে শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়নি। তালা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গাজী সাইফুল ইসলাম জানান, ২১১টি প্রাইমারি স্কুলের মধ্যে শহীদ মিনার রয়েছে মাত্র ৪০টি। প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার তৈরী করার জন্য মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চিঠি দেওয়া আছে। কিন্তু কোন বরাদ্দ না থাকায় শহীদ মিনার করা সম্ভব হয়নি।
তালা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেখ ফিরোজ আহমেদ জানান, জায়গা সংকটের কারণে কিছু কিছু স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি। তবে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দ্রæত শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে। যেন স্কুল পর্যায় থেকেই শিক্ষার্থীরা মহান ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে। যে সকল প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সে সকল প্রতিষ্ঠানের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। শহীদ মিনার না থাকলেও সকল প্রতিষ্ঠানে যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়।