সোমবার , ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. আইন আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. আশাশুনি
  4. কলারোয়া
  5. কালিগঞ্জ
  6. কৃষি
  7. খুলনা
  8. খেলা
  9. তালা
  10. দেবহাটা
  11. বিনোদন
  12. যশোর
  13. শিক্ষা
  14. শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  15. শ্যামনগর

সাতক্ষীরার মরিচ্চাপ নদী খনন করে খাল বানানো হচ্ছে

প্রতিবেদক
satkhirar sakal
ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৪ ১০:৫৩ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিনিধি : এক সময়ের প্রবাহমান ও ¯্রােতাস্বিনী মরিচ্চাপ নদী খনন করে খালে পরিনত করা হচ্ছে। আর নিয়ে এলাবাসির মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তাদের দাবি মুল নদীর কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ বাদ দিয়েই মরিচ্চাপ নদী খনন করা হচ্ছে। এভাবে খনন করা হলে কোটি কোটি টাকার সরকারী অর্থ ব্যয় হবে। কিন্ত জনসাধারনের কোনো কাজে আসবেনা।

স্থানীয় গোয়ালডাঙ্গা গ্রাম ও মরিচ্চাপ নদী পাড়ের বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম, আজিজুল ইসলাম ও আব্দুল হান্নান গাজী জানান, যে ভাবে মরিচ্চাপ নদী পুনঃখনন করা হচ্ছে তা জনসাধারনের জন্য কোনো উপকারে আসবেনা। মুল নদীর ৭৫ শতাংশ বাদ দিয়ে খনন করা হচ্ছে। তাছাড়া কোথাও কোথাও ঘুরিয়ে ইচ্ছামত খনন করে চলেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন। তারা আরো জানায়, নদীর মাঝ বরাবর বাদ রেখে স্থানীয়দের বাড়িঘর ও কবরস্থান ভেঙ্গে দিয়ে খনন করছে। যা তারা মারত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানান।

স্থানীয় আশাশুনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অসিম বরন চক্রবর্তী জানান, মরিচ্চাপ নদী পুনঃখননে ডিজাইন করার সময় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সুশীল সমাজকে বাদ রাখা হয়। ফলে মরিচ্চাপ পুনঃখননে এখন নানা অনিয়ম ও ত্রæটি দেখা দিচ্ছে। সিএস রেকর্ড অনুযায়ী মরিচ্চাপ নদীর যে প্রস্থ ছিলো তার অধিকাংশ বাদ দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে খনন কাজে।

তিনি আরো বলেন, এক সময়ের প্রবাহমান ও ¯্রােতাস্বিনী মরিচ্চাপ নদীতে বড় লঞ্চ ও স্টীমার চলতো। তবে নদীটি পুনঃখননে অন্তত সিএস অনুযায়ী ৫০ শতাংশ প্রস্থ করে খনন করা হতো তাহলে অনেক উপকারে আসতো। নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির নেতা অধ্যক্ষ আশেক ই-এলাহী জানান, শুধু মরিচ্চাপ নদীই নয়, আদি যমুনা ও বেতনা নদীসহ জেলার সকল নদী ও খাল পুনঃখননে অনিয়ম করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকার যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে সাতক্ষীরার নদী ও খাল পুনঃখনন করছে তা পূরণ হবে না।  কেবল কোটি কোটি টাকা নষ্ট হবে। কিন্তু জনগনের কোনো কাজে আসবেনা না। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ৬৪ টি জেলার অভ্যন্তরীণ ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের অধিনে আশাশুনি উপজেলা সদর দিয়ে বয়ে যাওয়া মরিচ্চাপ নদীর মধ্যচাপড়ার খোলপেটুয়া নদীর সংযোগ থেকে শুরু হয়ে উপজেলার তেতুলিয়া বেতনা নদী সংযোগ পর্যন্ত ৫ দশমিক ৫০ কিলোমিটার পুনঃখননের জন্য ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহন করা হয়। টেন্ডার অনুযায়ী প্রকল্পটির কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পটুয়াখালী জেলার এমএ জেভি। যার কার্যাদেশ দেয়া হয় গত ৮/১০/২০২৩ তারিখে। ওই কার্যাদেশ অনুযায়ী চলতি বছরের ২০ জুনে শেষ করার কথা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে আরো জানা গেছে, সিএস রেকর্ড অনুযায়ী আশাশুনির মরিচ্চাপ নদী ৬০০ ফুট কোথাও ৫৫০ ফুট প্রস্থ ছিলো। কিন্তু প্রকল্পটির ডিজাইন অনুযায়ী মরিচ্চাপ নদী পুনঃখনন করা হচ্ছে ৯০ থেকে ১৮০ ফুট। যা গড়ে ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশই বাদ দিয়ে পুনঃখনন হচ্ছে। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এম এ জেভি‘র স্বত্তাধিকারী মো.অলিউল্লাহ জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিজাইন অনুযায়ী মরিচ্চাপ নদী পুনঃখনন করা হচ্ছে।

এখানে ঠিকাদাদের কিছুই করার নেই। এলাকার লোকজন পক্ষে-বিপক্ষে অভিযোগ বা কথা বলবে এটাই স্বাভাবিক। তবে মরিচ্চাপ খনন কাজে কোনো অনিয়ম করা হচ্ছে না। ইতি মধ্যেই প্রায় ৫০ শতাংশ খনন সম্পন্ন হয়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামী জুনেই কাজ শেষ হবে। এব্যাপারে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুর রহমান জানান, মরিচ্চাপ নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে যে পরিমান পুনঃখনন করা দরকার সে অনুযায়ী প্রকল্পের ডিজাইন করা হয়েছে।

তবে সিএস রেকর্ড অনুযায়ী মরিচ্চাপ নদীর প্রস্থ কোথাও ৬০০ ফুট বা কোথাও ৫৫০ ফুট ছিলো। তবে একটি নদী পুনঃখনন করে পূর্বের স্থানে ফিরে আনা যায়না। তবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে খনন কাজ সঠিক সময়ে সিডিউল অনুযায়ী বুঝে দিতে হবে বলে জানান তিনি। এব্যাপারে আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নুর জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিডিউল ও ডিজাইন অনুযায়ী মরিচ্চাপ নদী পুনঃখনন করতে হবে। কোথাও কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করে ব্যবস্থ নেয়া হবে। তবে এখনো পর্যন্ত তার কাছে লিখিত কোনো অভিযোগ আসেনি বলে জানান।

সর্বশেষ - সাতক্ষীরা সদর

আপনার জন্য নির্বাচিত