মঙ্গলবার , ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. আইন আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. আশাশুনি
  4. কলারোয়া
  5. কালিগঞ্জ
  6. কৃষি
  7. খুলনা
  8. খেলা
  9. তালা
  10. দেবহাটা
  11. বিনোদন
  12. যশোর
  13. শিক্ষা
  14. শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  15. শ্যামনগর

ভুট্টা চাষে সাফল্য এনেছেন মাহমুদপুরের আমজাদ হোসেন

প্রতিবেদক
satkhirar sakal
ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪ ১১:২৭ অপরাহ্ণ

শেখ সিদ্দিকুর রহমান : ভুট্টা চাষে অসাধারাণ সাফল্য এনেছেন সাতক্ষীরা সদরের মাহমুদপুর গ্রামের আমজাদ হোসেন। তিনি তার দুই বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। ভুট্টা গাছগুলো এখন বাড়ন্ত এবং ফলন্ত। ভুট্টা চাষে আমজাদ হোসেন’র সাফল্যে সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ তাকে এক বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষে ফসল উৎপাদন বাবদ ১৫০ কেজি সার বিনামূল্যে সরবরাহ করেন।

সদর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আমজাদ হোসেন ভুট্টা ক্ষেত পরিচর্যা করছেন। ভুট্টা চাষ মাহমুদপুরের মাটিতে খুবই উপযোগি বলে মনে করেন তিনি। তিনি প্রতি বছর তার জমিতে ভুট্টা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। তবে এবারই তিনি বেশি পরিমাণ জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। গত বছরগুলোতে তিনি ১০ কাঠার বেশি জমিতে এ চাষ করতেন না। গত বছর তিনি প্রতি মণ ভুট্টা ১২০০-১৩০০ টাকা দরে বিক্রি করেছিলেন। এতে অনেক লাভ হয়েছে।

প্রতি বিঘা জমিতে ৩৫-৪০ মণ ভুট্টা উৎপন্ন হয়। প্রতি বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষে খরচ হয় ১০-১২ হাজার টাকা । ভ‚ট্টা চাষ পদ্ধতিঃ ভ‚ট্টা ফসল সারাবছর চাষ করা যায, তবে রবি মৌসুমে সর্বাধিক ফলন পাওয়া যায়। ভ‚ট্টা চাষবাদে কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থাপনা নি¤েœ বর্ণিত হলো-জমি নির্বাচন, তৈরী ও বীজ বপন পদ্ধতিঃ সাধারণত পানি জমে থাকেনা এমন বেলে দো-আঁশ বা দো-আঁশ মাটি ভুট্টা চাষের জন্য সবচেয়ে ভাল। জো থাকা অবস্থায় মাটির প্রকারভেদে ৩-৪টি আড়াআড়ি চাষ দিতে হবে। ৮-১০ ইঞ্চি গভীর করে চাষ দেয়া ভাল। চাষের পর মই দিয়ে মাটি সমতল করা প্রয়োজন। সারি টেনে বীজ বোনা উত্তম।

সারি থেকে সারির দূরত্ব: ৫৫-৬০ সেমি (২২-২৪ ইঞ্চি) বীজ থেকে বীজের দূরত্বঃ ২২.৫-২৫ সেমি (৯-১০ ইঞ্চি) বপনের গভীরতা: ৩-৫ সেমি (প্রায় দেড় ইঞ্চি) প্রতি গর্তে বীজের সংখ্যাঃ ১টি বপনের সময়ঃ অক্টোবর থেকে জানুয়ারি।

সার প্রয়োগ : ভুট্টা সার-প্রিয় ফসল। ভুট্টা চাষে সাফল্যের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ সার দেওয়া অত্যন্ত জরুরী। জমির উর্বরতাভেদে সারের মাত্রার কিছুটা তারতম্য হতে পারে। নিচের ছকে সারের মাত্রা দেয়া হলঃ একর প্রতি সারের পরিমাণ ও প্রয়োগের নিয়মঃ ভুট্টাতে সার ভুট্টা গাছের সুষ্ঠ পরগায়নে এবং পরগায়িত ভুট্টার মোচায় সঠিকভাবে দানা গঠনের জন্য গাছের বৃদ্ধি পর্যায়ে ভাল মানের বোরণ স্প্রে করতে হবে। উপরিপ্রয়োগের সময় মাটিতে পরিমিত রস থকা দরকার, না থাকলে হালকা সেচ দিতে হবে। সেচ

ব্যবস্থাপনা : জলাবদ্ধতা ভুট্টার জন্য খুবই ক্ষতিকর। ভুট্টার জমিতে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা থাকতে হবে। জলবায়ু, জমির পানি ধারণ ক্ষমতা, শিকড়ের গভীরতা ইত্যাদির উপর সেচ ব্যবস্থাপনা নির্ভর করে। তবে পানির অভাবের প্রতি লক্ষ্য রেখে গাছের সংবেদনশীল বৃদ্ধি পর্যায়সমূহের ভিত্তিতে সেচ প্রয়োগ করা অত্যন্ত জরুরি। রবি মৌসুমে ভুট্টার ভাল ফলন পেতে হলে জমি ও মাটির প্রকারভেদে ৪/৫ বার সেচ দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

প্রথম সেচ : বীজ বপনের ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে (৪-৬ পাতা পর্যায়) দ্বিতীয় সেচঃ বীজ বপনের ৫৫-৬০ দিনের মধ্যে (৮-১২ পাতা পর্যায়) তৃতীয় সেচঃ বীজ বপনের ৮০-৮৫ দিনের মধ্যে (মাথার ফুল আসা পর্যায়) চতুর্থ সেচঃ বীজ বপনের ১০০-১০৫ দিনের মধ্যে (মোচা নরম দুধ অবস্থা পর্যায় পঞ্চম সেচঃ বীজ বপনের ১১৫-১২০ দিনের মধ্যে (মোচা দানা শক্ত হওয়া পর্যায়)

পোকা-মাকড় দমন : কাটুঁই পোকা, মাজরা পোকা এবং ফল আর্মিওয়ার্ম দমনের জন্য অনুমোদিত বালাইনাশক অনুমোদিত মাত্রায় সঠিক সময়ে প্রয়োগ করতে হবে।

রোগ-বালাই দমন : ভুট্টা ফসলে খুব একটা রোগ বালাই দেখা যায় না, তবে প্রয়োজনে অনুমোদিত মাত্রায় সঠিক বালাইনাশক (ব্যাকটেরিয়ানাশক) সঠিক সময়ে প্রয়োগ করতে হবে। ফসল সংগ্রহ ও উৎপাদন ক্ষমতাঃ সম্পূর্ণ পরিপক্ক (উপরে ২-৩ পাতা বাদ দিয়ে অবশিষ্ট পাতা সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলে) হওয়ার পর ফসল সংগ্রহ করতে হবে।

বিশেষ নির্দেশনা : মোচা থেকে ছাড়ানো বীজের গোড়ায় কালো দাগ দেখা গেলে নিশ্চিতভাবে বোঝা যাবে মোচা পেকেছে। পাকা মোচাগুলো গাছ থেকে সংগ্রহ করতে হবে। অতি বৃষ্টির সময় গাছ থেকে মোচা সময়মত সংগ্রহ করতে না পারলে চাপ দিয়ে গাছ আলতোভাবে নুয়ে মোচাগুলো মাটির দিকে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। এতে মোচার ভিতরে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করে দানাগুলো নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। পরে মেঘমুক্ত দিনে গাছ থেকে মোচা সংগ্রহ করতে হবে। মোচা সংগ্রহের সময় মোচাগুলোর খোসা ছাড়িয়ে নেয়া ভাল। সংগৃহীত মোচা রোদে ৩-৪ দিন খুব ভাল করে শুকিয়ে মাড়াই যন্ত্রের সাহায্যে বা হাত দিয়ে দানা খসাতে হবে। দানা আলাদা করে আবার রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য : গাছে ফুল আসার পর খেয়াল রাখতে হবে, যেন পরবর্তী ৩০-৩৫ দিন জমিতে কখনো রসের ঘাটতি না হয়। তথ্যসূত্র : কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ, সাতক্ষীরা।

সর্বশেষ - সাতক্ষীরা সদর