শেখ বাদশা, আশাশুনি : স্মার্ট পুলিশ, স্মার্ট দেশ, শান্তি ও প্রগতির বাংলাদেশ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আশাশুনি থানা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। আশাশুনি উপজেলা একটি দুর্গম ও রিমোর্ট এরিয়া হলেও প্রত্যেক দুর্গম এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে।
স্থানীয়রা জানান আশাশুনি থানায় ওসি বিশ্বজিৎ কুমার অধিকারীর যোগদানের পর থেকে অপরাধমূলক কার্যক্রম ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। দিনে ও রাতে প্রত্যেক ইউনিয়নের পুলিশের বিট এরিয়ায় থানা পুলিশের বিট অফিসারদের নিয়মিত টহল জোরদার থাকায় অপরাধমূলক কার্যক্রম একেবারেই কমে এসেছে বলে ধারণা করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
থানা সূত্রে জানাগেছে ওসি বিশ্বজিৎ কুমার অধিকারী আশাশুনি থানায় যোগদানের পরে থানা এলাকার ছোট বড় হাটবাজার ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও রাতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহায়তায় নিয়মিত পাহারাদারের ব্যবস্থা করেছেন তিনি। ফলে রাতে চুরি, ছিনতাই এর মতো ঘটনা বর্তমানে নেই বললেই চলে।
কুল্যার মোড়ের ঔষধ ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম বলেন, আশাশুনি থানা এলাকার কুল্যার মোড় হচ্ছে আশাশুনির প্রবেশদ্বার। ওসি বিশ্বজিৎ কুমার অধিকারীর সু-পরামর্শে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহায়তায় কুল্যার মোড়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। কুল্যার মোড়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার স্বার্থে নিয়মিত নৈশ প্রহরীর ব্যবস্থা করাসহ আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার উন্নয়নে আশাশুনি থানা এলাকায় পুলিশের নিরাপত্তার চাদরে জড়িয়ে রেখেছেন ওসি বিশ্বজিৎ কুমার অধিকারী।
কাদাকাটি বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সাজ্জাদুল হক টিটুল বলেন, প্রায় দিন সকালে শুনতে হতো কাদাকাটি বাজারের কোন না কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি সংগঠিত হয়েছে। আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিশ্বজিৎ কুমার অধিকারীর সু-পরামর্শে বর্তমানে কাদাকাটি বাজারে রাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার কারণে নিয়মিত পাহারাদারের উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
এছাড়া থানা এলাকার বিভিন্ন হাট ও বাজারে আশাশুনি থানা পুলিশের তত্ত¡াবধানে নিয়মিত পাহারাদারের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানাগেছে। কুল্যা ইউনিয়নের মাদারবাড়িয়া গ্রামের আফিল উদ্দিন সরদার (৬০) এ প্রতিবেদককে বলেন আমি আমার বয়সে কোনদিন থানায় গমন করিনাই। সামান্য একটি বিষয় নিয়ে সাধারন ডায়েরি করতে আশাশুনি থানার ওসি বিশ্বজিৎ কুমার অধিকারীর সাথে কথা বলেন তিনি।
আলাপকালে ওসি বিশ্বজিৎ কুমার অধিকারীর ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে বাংলাদেশ পুলিশের ভ‚য়সী প্রশংসা করেন আফিল উদ্দিন সরদার। আশাশুনি থানা এলাকার নওয়াপাড়া-মহেশ্বরকাটি বিলের ঘের মালিক আব্দুল জলিল ঢালী এ প্রতিবেদককে বলেন থানা এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকায় বর্তমানে ছিচকে চোরের উপদ্রব কমেছে।
রাতে এখন মৎস্য ঘেরে না থাকলেও রাতে মাছ চুরি হওয়ার ভয় নেই। আশাশুনি উপজেলা গ্রাম ডাক্তার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ কামরুজ্জামান এ প্রতিবেদককে বলেন বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং, মাদক ও সন্ত্রাস দমনে ওসি বিশ্বজিৎ কুমার অধিকারী নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তার এ মহতী কাজের জন্য উপজেলা গ্রাম ডাক্তার কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি।
স্থানীয় একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা এ প্রতিবেদককে বলেন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে কোন দুষ্কৃতিকারী ব্যক্তিকে আশাশুনি থানা এলাকায় কোন নাশকতামূলক বা অপরাধমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে দেননি ওসি বিশ্বজিৎ কুমার। ফলে সাধারণ মানুষ স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা ও নির্বিঘেœ ব্যবসা-বাণিজ্য করে গেছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্রীক জ্বালাও পড়াও হলেও আশাশুনি থানা এলাকায় ওসি বিশ্বজিৎ কুমার নিরাপত্তার চাঁদরে ঢেকে রেখেছিলেন বলে জানান স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে আশাশুনি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিশ্বজিৎ কুমার অধিকারী বলেন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মশিউর রহমান সিদ্দিকীর দিক নির্দেশনায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদন্নোতি প্রাপ্ত) (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ সজীব খানের তত্ত¡াবধানে ও সহকারি পুলিশ সুপার (দেবহাটা সার্কেল) এস এম জামিল আহমেদ এর নেতৃত্বে থানা এলাকার অপরাধমূলক কার্যক্রম দমন সহ যে কোন পরিস্থিতির মোকাবেলায় আশাশুনি থানা পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। জেলা পুলিশের দিক নির্দেশনা অনুযায়ী নিয়মিত ওয়ারেন্ট তামিল করা, মাদকবিরোধী সমাবেশ, বাল্য বিবাহকে রুখতে উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় রেখে সচেতনতা মূলক প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রাখা, সন্ত্রাস ও নাশকতা রুখতে প্রত্যেক বিট অফিসারদের মাধ্যমে বিট এরিয়ায় দিনে এবং রাতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।
এছাড়া থানা এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, এলাকা ভিত্তিক পুলিশিং কমিটি গঠন ও তদারকি, বিভিন্ন বাজারে কমিটি গঠনের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কোন অবস্থাতেই আশাশুনি থানা এলাকায় জুয়া, মাদকদ্রব্য বিক্রি বা সেবন, সহিংসতা, নাশকতা করা বা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না। সেদিকে আশাশুনি থানা পুলিশ সর্বদা সজাগ আছে এবং আগামীতেও থাকবে। বাংলাদেশের প্রতিটি থানায় ওসি বিশ্বজিৎ কুমার অধিকারীর মত সৎ ও নিষ্ঠাবান পুলিশ অফিসার থাকলে একদিকে যেমন আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটবে, অন্যদিকে সাধারণ মানুষ নির্বিঘেœ ব্যবসা বানিজ্য করা সহ শান্তিতে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করতে পারবেন বলে ধারনা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।