শুক্রবার , ২২ মার্চ ২০২৪ | ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. আইন আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. আশাশুনি
  4. কলারোয়া
  5. কালিগঞ্জ
  6. কৃষি
  7. খুলনা
  8. খেলা
  9. তালা
  10. দেবহাটা
  11. বিনোদন
  12. যশোর
  13. শিক্ষা
  14. শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  15. শ্যামনগর

খাবার পানির সংগ্রহ করতে যেয়ে লেখাপড়া থেকে ঝরে পড়ছে সাতক্ষীরার উপকূলের শিক্ষার্থীরা

প্রতিবেদক
satkhirar sakal
মার্চ ২২, ২০২৪ ১২:১৬ পূর্বাহ্ণ

মেহেরুননেসা মিম : জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাতক্ষীরা উপকূলে বেড়েছে লবণাক্ততা। মিষ্টি পানির উৎস নষ্ট হয়ে সুপেয় পানির সংকট দিন দিন আরো তীব্র হচ্ছে। পরিবারের বড়রা বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় পানি সংগ্রহ করতে হয় শিশুদের। লম্ব লাইনে দাড়িয়ে পানি সংগ্রহ করতে যেয়ে স্কুলের সময় পার হয়ে যায় তাদের। সুপেয় পানির সংকটে সাতক্ষীরা উপকূলের এমন হাজারো শিশুকে প্রতিদিনই স্কুল বাদ দিয়ে যেতে হচ্ছে পানির সন্ধানে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শিশু শিক্ষার উপর। ফলে অনেকেই ঝরে পড়ছে প্রাথমিকের পড়াশোনা শেষ হওয়ার আগেই। এতে শিশু শিক্ষার্থীরা শিক্ষায় হয়ে পড়ছে অনিয়মিত।

সাতক্ষীরা শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের স্কুল শিক্ষার্থী আয়েশা খাতুন জানায়, আমি ক্লাস থ্রি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি। দুই বছর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। আমার দুটো ছোট ভাই আছে। আমার আম্মু তাদের নিয়ে সবদিকে সামলে পারে না। আমি পানি আনতে পারি বলে আমাকেই আসতে হয়। আম্মু পানি আনতে আসবে কখন? আর রান্না করবে কখন। সেজন্য আমিই পানি নিতে আসি। এসে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে পানি নিতে হয়। পানি নিতে এসে অনেক দেরী হয়ে যায়। ১টা/২টা বেজে যায়। সেই পরিস্থিতির জন্য আমি পড়াশুনা করতে পারিনি।

দূর-দূরান্ত থেকে সংগ্রহ করতে পারলেই পানির চাহিদা মেটে উপক‚লের মানুষের। সেটা সম্ভব না হলে বাধ্য হয়ে পান করতে হয় পুকুরের পানিও।
সাতক্ষীরা শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের শিক্ষার্থীর অভিভাবক রোজিনা বেগম বলেন, সুন্দরবন অঞ্চলে খাবার পানির খুবই সমস্যা। এই অঞ্চলের পানি লোনা। দুই কিলোমিটার দুরে পানি আনতে যেতে হয়। মহসিন সাহেবের পানির কলে। এক থেকে চার কলস পানি আনা লাগে।

সংসারের কাজ রান্না বান্না ও পরিবারের সদস্যদের খাওয়াতে গেলে পানি আনতে যেতে পারি না। সেজন্য বাধ্য হয়ে মেয়েকে পানি আনতে পাঠাতে হয়। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে পানি আসতে যেয়ে মেয়ের স্কুলের সময় চলে যাই। সে কারণে মেয়ের লেখাপড়া হলো না। পড়াশুনা না করলে আমরা বেঁচে থাকতে পারি, কিন্তু পানি না হলে বেঁচে থাকতে পারি না। যার কারণে মেয়েটার লেখাপড়া আজ বন্ধ হয়ে গেছে।

সুপেয় পানির কিনতে হলে আয়েরও একটি বড় অংশ ব্যয় করতে হবে উপক‚লের পরিবারগুলোকে। অনেকেরই নেই সে সামর্থ্য। অন্যদিকে, বিনামূল্যের পানি সংগ্রহে ব্যয় হয় দিনের বড় একটা সময়। ফলে সন্তানকে স্কুলে না পাঠিয়ে পানি সংগ্রহ করতে পাঠাতে বাধ্য হচ্ছেন অনেক অভিভাবক।

সাতক্ষীরা শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের মহসিন আলীর পানির কলে পানি নিতে আসা অভিভাবক সোনিয়া বেগম বলেন, বাচ্চারা পানি নিতে আসলে তাদের স্কুলে যাওয়া হয় না। সেজন্য আমাদের বাচ্চাদের যাতে সঠিক সময়ে স্কুলে পাঠাতে পারি সেজন্য অনেক সময় আমরা পানি নিতে আসি। পানি নিয়ে বাড়ি ফিরে বাচ্চার টিফিন গোছানো এবং পোশাক গুছিয়ে দিয়ে হয়। ৯টা থেকে স্কুল হলে পানি নিয়ে বাড়ি ফিরে রান্না করতে করতে সাড়ে ৮টা বেজে যায়। অনেক সময় বাচ্চারা না খেয়ে স্কুলে চলে যাচ্ছে।

সাতক্ষীরা উপক‚লের কয়েকটি স্কুলের শিক্ষার্থী হাজিরার তথ্য যাচাই করে দেখা গেছে, বর্ষা মৌসুমে উপস্থিতির হারের তুলনায় শুষ্ক মৌসুমে স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অর্ধেকে নেমে আসে।

বুড়িগোয়ালীনি স্কুলের প্রধান শিক্ষক উম্মে তাসলিমা ইয়াসমিন বলেন, আমাদের এলাকায় সুপেয় পানি তীব্র সংকট রয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে আমাদের পানির সংকট আরও তীব্র হয়। ফলে আমাদের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা তাদের পরিবারের পানির সংকট মোকাবেলার জন্য বিভিন্ন জায়গায় পানি আনতে যায়। ফলে তারা স্কুলে আসতে দেরী হয় কখন তারা স্কুল মিস করে। এভাবে তারা স্কুলের প্রতি অনাগ্রহী হয়ে পড়ে। বাড়ির কাজে প্রতি সংশ্লিষ্ট হয়ে পড়ে। সে কারণে ঝরে পড়ার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বে-সরকারি সংস্থা উত্তরণের শ্যামনগর উপজেলার প্রোগ্রাম অফিসার নাজমা আক্তার বলেন, শ্যামনগর উপজেলায় শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার ৩০শতাংশ। বিভিন্ন কাজের সাথে যুক্ত হয়ে এই সব শিশুরা ঝরে যাচ্ছে। এই এলাকার শিশু এবং নারীরা পানি সংগ্রহের ক্ষেত্রে বেশি সময় দেয়। কারণ এখানকার মানুষ সব সময় সুপেয় পানির সংকটে সবসময় ভোগে। এই কারণে পিএসএফের পানি নিতে গিলে লম্বা লাইন দাড়াতে হয়। যখন শিশুরা সেখানে যাই তাদের এসময় নষ্ট হওয়ার কারণে তাদের অনেক সময় স্কুলে যেতে দেরী হয়। এভাবে আস্তে আস্তে দুই দিন/দশ দিন স্কুল মিস করতে করতে ঝরে যাই। এভাবে ঝরেপড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

শ্যামনগর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা নাজিবুল আলম রাতুল বলেন, সুপেয় পানি প্রাপ্তি বৃদ্ধির জন্য সরকারি নানা ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। যেমন প্রকৃতিক আগে যে সাদু পানির জলাশয়গুলো ছিলো খনন করে সেগুলোর ব্যাপ্তি বৃদ্ধি করা হয়েছে। যেখানে নলকুপের মাধ্যমে স্বাদু পানি পাওয়া যায় সেখানে নলকূপ প্রদান করা। বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য প্রতিবছর অনেক পরিবারের মাঝে পানির ট্যাংক বিতরণ করা হয়ে থাকে। সুপেয় পানির সংকট কমাতে এলাকাভিত্তিক পুকুর খনন, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধে বিভিন্ন ধরনের উপবৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে দরিদ্র শিক্ষার্থীরা উৎসাহিত হয়।

সর্বশেষ - সাতক্ষীরা সদর

আপনার জন্য নির্বাচিত

কালিগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী দোলনের মতবিনিময়

ধুলিহর চাঁদপুরে সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাবু সানার ইফতার বিতরণ

দেবহাটায় উৎসবমুখর পরিবেশে কিশোরকন্ঠ মেধাবৃত্তি পরীক্ষা

সাতক্ষীরার সাবেক পুলিশ সুপার সাজ্জাত হোসেনসহ ৭ পুলিশ কর্মকর্তার নামে মামলা

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ থেকে পাউখালী মোড় মহাসড়কে মরণ ফাঁদ, দুর্ভোগ চরমে

সাতক্ষীরায় কনস্টেবল পদে নিয়োগে কাগজপত্র জালিয়াতির দায়ে এক যুবককে কারাদন্ড

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বদলি জনিত সংবর্ধনা

তালায় সরিষার মাঠ দিবস

কনকনে শীতে পাইকগাছায় উপজেলা চেয়ারম্যানের শীতবস্ত্র বিতরণ

প্রতীক বরাদ্দের পরপরই পাইকগাছায় নির্বাচনী আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র