শেখ মনিরুল ইসলাম : বর্ষবরণে শোভাযাত্রা করে জেলা প্রশাসনের বিচারে এবারও প্রথম স্থান অধিকার করলো উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী সাতক্ষীরা জেলা সংসদ। প্রতিবারের ন্যায় এবারো সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের অংশগ্রহণে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে পহেলা বৈশাখ। কর্মসূচির শুরুতে এক বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
শোভাযাত্রায় প্রাইমারী, মাধ্যমিক ও সকল সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের মানুষের স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ও বাদ্যের তালে তালে গ্রামবাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যের লোকজ উপকরণ পালকি, পরী, ময়ুর রঙিন প্ল্যাকার্ড মঙ্গল শোভাযাত্রায় যোগ করেছে অনন্য মাত্রা। নববর্ষ উপলক্ষ্যে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ন কবির, পুলিশ সুপার মতিউর রহমান সিদ্দিকী, সঙ্গীত শিল্পী আবু আফফান রোজবাবু, কালচারাল অফিসার ফাইজা হোসেন অন্বেষা প্রমুখ। জেলা প্রশাসক প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, পৃথিবীর যেকোন দেশে দেখবেন ঐতিহ্যকে লালন করা হয়।
বিভিন্ন দেশে তাদের পুরোনো দালান-কোঠাকে প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়। যদি কোন সংষ্কার পরে, সেটা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে করা হয়, কারণ তারা বুঝে পুরোনো জিনিসের কদর। আমাদের দেশে কিছু মানুষ আছে যারা স্বাধীনতা বিরোধী, বাঙালি সত্তা বিরোধী, তারা পহেলা বৈশাখকে অপসংস্কৃতি বলে অভিহিত করে। এ পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতির অভিন্ন অংশ। যতদিন পৃথিবীতে বাঙালি থাকবে ততদিন পহেলা বৈশাখ এভাবে পালন করা হবে।
এটা এমন একটা অনুষ্ঠান যেখানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল স¤প্রদায়ের সা¤প্রদায়িক স¤প্রতি। সকাল থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে সকলের উপস্থিতি এটাই প্রমাণ করে পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রানের উৎসব। আলোচনা শেষে শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহনকারিদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
নববর্ষের আনন্দ আয়োজন উপলক্ষ্যে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে ছুটে এসেছে সর্বস্তরের জনসাধারণ। এসময় জেলা শিল্পকলা একাডেমি সংগীত দল, বর্ণমালা একাডেমি, শিশু একাডেমি, দীপালোক একাডেমি, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, শিল্পায়ন, আরাধনাসহ অসংখ্য সাংস্কৃতিক সংগঠন সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেয়। শিল্পীরা ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ গানে গানে বরণ করে নেন বাংলা নববর্ষকে। নাচে-গানে জমজমাট ছিল শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক। বর্ষবরণের অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শেখ মোসফিকুর রহমান মিলটন।