হেলাল উদ্দিন, রাজগঞ্জ : মানুষ স্বভাবগতই সুন্দরের পূজারী। চুল-দাড়িমানুষের সৌন্দর্য বহন করে। এই চুল-দাঁড়ি নিয়ে যুগেযুগে মানুষের ভাবনার অন্ত নেই। এই কারণেই ‘নরসুন্দরদের’ কদর ও প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। চুল-দাঁড়ি কেটে মানুষকে দেখতে সুন্দও করাই যাদের কাজ তারাই হলেন ‘নরসুন্দর’। যারা আমাদের কাছে নাপিত হিসেবেও পরিচিত। যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ বাজারের নীমতলা নামক স্থানে কাঠের টুল-পিঁড়ি পেতে বসতেন নরসুন্দররা।
সেখানে বসেই মানুষের চুল-দাঁড়ি কেটে অর্থ উপার্জন করতেন তারা। কিন্তু সময়ের পরিবর্তে হরিয়ে গেছেন তারা। এখন হাটে-বাজারে খোলা জায়গায় টুল-পিঁড়িতে বসে নরসুন্দররা আর চুল-দাঁড়ি কাটেনা। আধুনিক সভ্যতার ক্রম বিবর্তনের ফলে আজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের গতি ধারায় এসেছে পরিবর্তন। লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া।
আধুনিক সভ্যতায় গড়ে উঠেছে আধুনিক মানের সেলুন। কদর বেশি হওয়ায় অনেকেই ঝুঁকছেন সেই সব সেলুন গুলোর দিকেই। রাজগঞ্জ বাজার এলাকার বাসিন্দা আমজেদ আলী(৬০) বলেন- আমরা দেখেছি রাজগঞ্জ বাজারের ধান পট্টির পাশের নীমতলায় মাটিতে হাঁটুগেড়ে বসতেন নরসুন্দররা। সেখানে এলাকার লোকজন এসে চুল-দাঁড়ি কাটাতেন। ছোট ছোট বাচ্চারাও চুলকাটাতেন এখানে বসে। সে সময়, সেই পরিবেশ ছিলো। সুন্দর দেখাও যেতো।
কিন্তু এখন এই দৃশ্য আর দেখা যায়না। নরসুন্দররা বাজারের খোলা জায়গায় বসলে সেখানে কাষ্টমার হয়না। তিনি আরও বলেন- সময়ের পরিবর্তন হয়েছে। খোলা জায়গায় বসে টুল-পিঁড়িতে বসে চুল-দাঁড়িকাটাতে লজ্জা বোধ করেন বর্তমার প্রজন্ম। কিন্তু এইটাই বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য। স্থানীয় হাসান আলী (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ বলেন-রাজগঞ্জ কিন্তু এখন আর গ্রাম নেই। এখন শহরে পরিনত হয়েছে। হাটুগেড়ে বসা নরসুন্দরদের বর্তমার প্রজন্ম দেখেনি। সেই নরসুন্দরদের কথা বর্তমান প্রজন্মেও কাছে গল্পই মনে হবে।