নিজস্ব প্রতিনিধি : পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারো সাতক্ষীরার খামারিরা সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছেন। অবৈধপথে ভারত থেকে গরু আমদানি করা না হলে লাভবান হওয়ার আশা করছেন খামারিরা।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, জেলায় এ বছর ১২ হাজার ৮৮৯জন খামারি কোরবানির জন্য গরু প্রস্তুত করেছেন। জেলায় মোট ১ লাখ ২৯ হাজার ৭০৮টি গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। বিপরীতে চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৫৭৭টি। ফলে অতিরিক্ত ২৯ হাজার ১৩১টি পশু থাকবে, যা চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার তালতলা এলাকার গরু খামারি মোঃ আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমি ৩০ বছর ধরে গাভী পালন করি। কিন্তু গাভী পালনে তেমন লাভ হয় না। একই সঙ্গে খাবারের দাম অত্যাধিক বেশি। এজন্য বর্তমানে কোরবানি উপলক্ষে দেশি ৩৫টি ষাঁড় গরু পালন করেছি। এগুলো কোরবানির বাজারে বিক্রির জন্য নেব এবং বাড়ি থেকে বিক্রি করবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আস্তে আস্তে খাবারের পরিমাণ বাড়াচ্ছি। খাবারের তালিকায় রেখেছি গমের ভ‚ষি, ভুট্টা, খুদ, ভাত, চিটা গুড়, খৈল, ঘাস ও বিচালি। আমার এখানে সব সাইজের দেশি গরু আছে। আকার ভেদে ৭০ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম হবে।’
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদরের খামারি মজনু মালি বলেন, ‘আমি অনেকদিন থেকে খামারে গরু পালন করে আসছি। এ বছর অল্প করে প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমার খামারে এখন ২২টি দেশি গরু রয়েছে। গরুগুলোকে প্রাকৃতিক সব খাবার খাওয়াচ্ছি। এখন সব জিনিসের দাম বেশি। একটি গরুর পালন করতে যে অর্থ খরচ করা হচ্ছে, বিক্রয় করে সেই তুলনায় লাভ করা যাচ্ছে না। এর কারণ হলো গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি। এমনকি ১ লাখ টাকার গরু ক্রেতারা ৬০-৬৫ হাজার টাকায় কিনতে চাচ্ছেন।’
ক্রেতা আবুল মাজেদ জানান, আগেভাগে গরু কিনতে এসেছি যাতে একটু কম দামে কিনতে পারি। হাটের গরুর রোগবালাই হতে পারে। তাই খামার থেকে গরু কিনতে এসেছি। তবে খামারে গরুর দাম অনেক বেশি। গত বছরের তুলনায় প্রতিটি গরুর দাম ২০ হাজার টাকা বেশি। মূলত গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে খামারিরা গরুর দাম বৃদ্ধি করছেন, তবে ক্রেতা মিলছে অনেক কম।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর হোসেন নামে এক খামারি বলেন, ভারত থেকে গরু না আসায় কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ভালো দাম পাওয়া যেতে পারে। গো-খাদ্যের দাম হাতের নাগালে থাকলে দেশে আরও খামারি বাড়বে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ এসএম মাহবুবুর রহমান বলেন, আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল আযহা উপলক্ষ্যে সাতক্ষীরা জেলায় ৫ হাজার ৩১৭ জন পারিবারিক ও বাণিজ্যিকভাবে খামার পরিচালনা করছে। এই খামারগুলোকে আমরা প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে ভ্যাকসিন এবং চিকিৎসা পরামর্শ দিয়ে থাকি।