শুক্রবার , ২৪ মে ২০২৪ | ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. আইন আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. আশাশুনি
  4. কলারোয়া
  5. কালিগঞ্জ
  6. কৃষি
  7. খুলনা
  8. খেলা
  9. তালা
  10. দেবহাটা
  11. বিনোদন
  12. যশোর
  13. শিক্ষা
  14. শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  15. শ্যামনগর

প্রচার বিমুখ ডাক্তার এম এ জলিল সমাজসেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন অনন্য উচ্চতায়

প্রতিবেদক
satkhirar sakal
মে ২৪, ২০২৪ ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এ এফ এম মাসুদ হাসান : জাতীয় অধ্যাপক ডাক্তার এম আর খানের স্নেহধন্য যশোর শিশু হাসপাতালের বর্তমান কর্ণধর ডাক্তার এম এ জলিল একজন সৎ অমায়িক, পরোপকারী দানশীল ও দয়ালু ব্যক্তির নাম। উচ্চ শিক্ষিত বনেদি পরিবারের সফল ও সুপ্রতিষ্ঠিত একজন মানুষ হওয়া সত্তে¡ও তাঁর মধ্যে নেই বিন্দুমাত্র অহংকারের চিহ্ন। প্রচার বিমুখ মানুষটি সমাজসেবা ও পরোপকারে নিজেকে উৎসর্গ করা সত্তে¡ও সবসময় নিজেকে আড়ালে রাখতে চান তিনি ।

সারাটা জীবন কাজ করে গেছেন নীরবে নিভৃতে থেকে। বিনয় সদাচরণ ও সৌজন্যবোধই মনে করিয়ে দেয় তাঁর ঐতিহ্য সমৃদ্ধ পরিবারের কথা। অত্যন্ত সরল, অমায়িক ও নরম মনের মানুষ হওয়া সত্তে¡ও ডাক্তার এম এ জলিলের চরিত্রে রয়েছে অত্যন্ত দৃঢ়তা। প্রাণবন্ত ও দীপ্তিমান এ সজ্জন মানুষটি মনে করেন ধৈর্য্য, সহনশীলতা, সততা ও নিষ্ঠা থাকলে মানুষকে সফল হতে সাহায্য করে। সমাজসেবায়, স্বাস্থ্যসেবায়, এবং দেশ ও জাতির উন্নয়নে যার মন-মানসিকতা উদার তিনি হলেন সুন্দরবনঘেষা দক্ষিণ জনপদের মানুষের প্রিয়জন,আপামর মানুষের একান্ত আপনজন ডা. এম এ জলিল ।

ডাঃ আব্দুল জলিল একজন সুচিকিৎসক, সদাহাস্য, নির্লোভ, কাজ পাগল, দায়িত্বসচেতন, প্রচারবিমুখ, সমাজসেবক, কর্মবীর, ধর্মভীরু, পরহেজগার একজন সফল সংগঠক, শ্যামনগর সর্বোপরি সাতক্ষীরার কৃতি সস্তান। তিনি ১৯৫২ ইং সালের ১লা ডিসেম্বর সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার হায়বাতপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত ও শিক্ষিত পরিবারের মাটির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা আলহাজ্ব আহমদ আলী ও মাতা আলহাজ্ব নূর আকতার নওবাহারের সাত সন্তানের মধ্যে তিনি তৃতীয়।

পিতা ছিলেন সমাজ সেবক। ছোট দাদা অ্যাডভোকেট তোফাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন শ্যামনগরের তৎকালীন প্রথম বিএ পাশ এবং সাতক্ষীরার প্রথম মুসলিম অ্যাডভোকেট। পরিবারে বাংলাদেশ সরকারের সচিব, উপসচিব, যুগ্মসচিব, বিমান চালক (পাইলট), এ্যাডভোকেট ৫ জন, চার্টার্ড এ্যাকাউন্টেন্ট, ৮ জন ডাক্তার, শিক্ষক, ফুটবল ও জাতীয় লন টেনিস প্লেয়ার, ব্যাংক ও বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং অন্যান্য উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষ জন্মগ্রহণ করে দেশের মানুষের সেবায় নিয়োজিত আছেন।

চিরসবুজ প্রকৃতির কোলে বেড়ে ওঠা গ্রাম বাংলার আরো দশ কিশোরের মত দূরন্তপনায় মেতে না উঠে তিনি ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় মনোযোগী ও অত্যন্ত মেধাবী ও শান্ত স্বভাবের ছিলেন। নিজ গ্রামের সরকারী প্রাইমারী স্কুল পাশ করে বড় ভাই উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা খোরশেদ আলমের এর কাছে থেকে ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল, রংপুর জিলা স্কুল, এরপর যশোর জিলা স্কুল থেকে ৪ টি বিষয়ে লেটার নাম্বারসহ ১৯৬৯( ইং) সালে কৃতিত্বের সাথে প্রথম বিভাগে মাধ্যমিক পাশ করে প্রথম বর্ষ কুষ্টিয়া সরকারি মহাবিদ্যালয় এবং দ্বিতীয় বর্ষ ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র মহাবিদ্যালয় থেকে স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭১ সালে ৩টি বিষয়ে লেটার নাম্বারসহ প্রথম বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক সাফল্যের সাথে পাশ করে ভবিষ্যৎ জীবন গড়ার লক্ষ্যে ঢাকায় আসেন।

ছাত্রজীবন থেকেই অদম্য ইচ্ছা ছিল ভবিষ্যতে ভাল মানুষ ও ভাল একজন ডাক্তার হয়ে জনকল্যান ও আত্মমানবতায় দেশের মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখবেন। ইংরেজি ১৯৭২ সালের ৮ই ফেব্রæয়ারি ভর্তি হলেন ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের প্রথম ব্যাচে। মেডিকেল কলেজ ছাত্র জীবনে শিক্ষক ও বন্ধুদের কাছে খুবই প্রিয় ছিলেন। কলেজের বার্ষিক বনভোজন ও অন্যান্য অনুষ্ঠান তার পরিকল্পনায় পরিচালিত হতো।

১৯৭৮ সালে এমবিবিএস পাশ করে, ডাক্তার নামের সার্টিফিকেট হাতে পেয়ে শুরু করেন ট্রেনিং ও পেশা জীবন। ইন্টার্ন ট্রেনিং অবস্থায় পার্ট টাইম মেডিকেল অফিসার পদে কাজ করতেন তৎকালীন দেশের প্রথম ও একমাত্র প্রাইভেট হাসপাতাল ঢাকার মালিবাগে অবস্থিত “আরোগ্য নিকেতনে”। এ সময়ে সুযোগ পেয়েছেন দেশের অনেক স্বনামধন্য ও দেশ বরেন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সান্নিধ্যে এসে হাতে কলমে কাজ শিখতে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নিউরোসার্জন অধ্যাপক রশিদ উদ্দীন, অধ্যাপক আহসান উল্লাহ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবদুল মান্নান, অধ্যাপক কাদরী, সার্জারী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ আছিরউদ্দীন, অধ্যাপক আলী আশরাফ, গাইনি অধ্যাপক জোহরা কাজী সহ অনেকের। ইন্টার্ন ট্রেনিং শেষ করার পর তিনি রেজিনা হকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ।

শশুর এনামুল হক ভ‚তপূর্ব চীফ কনজারভেটর অব ফরেস্ট। বিয়ের পরে কর্মজীবন শুরু করলেন তিনি। তৎকালীন বিসিএস পাশ ছাড়াই সকল ডাক্তারই সরকারী চাকুরীতে যোগদান করতেন কিন্তু তিনি সরকারী চাকুরীতে যোগদান না করে সাভার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিকেল অফিসার পদে নতুনভাবে কর্ম জীবন শুরু করেন। সেখানে ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে খুবই সুপরিচিত ও ভাল ডাক্তার হিসেবে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। এ

ক বছর পর প্রয়োজনের তাগিদে বড় ভাইয়ের সহযোগিতায় চলে যান জীবনে বৃহত্তর স্বার্থে সৌদি আরবে। বড় ভাই তখন সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব। সৌদি সরকারের অধীনে তায়েফ জোনে চাকুরীতে যোগদান করেন এবং খুবই সুনামের সাথে ৬ (ছয়) বছর কাজ করেন । চাকুরী চলাকালীন সৌদি সরকার, রোগী, প্রতিবেশী সহকর্মীদের মাঝে খুব সুনামের সাথে ছিলেন ও কর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ মন্ত্রণালয়ের প্রশংসা সার্টিফিকেট অর্জন করেন, যা খুবই বিরল। ৬ (ছয়) বছরে দুই বার পবিত্র আরাফাত ময়দান এবং মিনা ময়দানে হাজীদের চিকিৎসা সেবার সুযোগ পান এবং দুবারই পবিত্র হজ্ব পালন করেন।

সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে তিনি স্থায়ীভাবে সেখানে থাকারও প্রস্তাব পান । কিন্তু নিজের দেশের কথা চিন্তা করে সেই প্রস্তাবে রাজি হননি। তিনি সৌদি সরকার কর্তৃক বিশিষ্ট চিকিৎসক ও বিশেষ সনদপ্রাপ্ত। ১৯৮৮ সালে দেশে ফিরে ঢাকায় সমমনা ডাক্তারদের সাথে প্রতিষ্ঠা করেন মেডি এইড হাসপাতাল, গ্রীন লাইফ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, গ্রীন লাইফ নার্সিং ইনস্টিটিউট এন্ড কলেজ, বাংলাদেশ ইএনটি হাসপাতাল, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ইউনিকো হাসপাতাল (শীঘ্রই শুভ উদ্ভোধন) এবং ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট বারাকা স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণ করেন।

সর্বশেষ - সাতক্ষীরা সদর