মণিরামপুর প্রতিনিধি : নাম জাহিদুল ইসলাম। জন্মগতভাবে প্রতিবন্ধী না হলেও দুর্ঘটনায় তাকে প্রতিবন্ধীর ভাগ্য বরণ করতে হয়েছে। অদম্য মনোবল ও লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ তার। যে কারণে শত কষ্টের মাঝেও শিক্ষা জীবনকে ধরে রেখেছে সে। চলতি বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে অংশ নিচ্ছে। মণিরামপুর সরকারি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।
মণিরামপুরের আগরহাটি গ্রামের মাহবুবুর রহমান ও মাতা রাশিদা বেগমের ছেলে জাহিদুল। দুই ভাই ও এক বোনকে নিয়ে থাকে গ্রামের বাড়িতে। পিতা গুরুত্বর অসুস্থ। বড়ভাই ইজিবাইক চালিয়ে কোনো রকম সংসারের হাল ধরে রেখেছেন। দরিদ্র পরিবারের সন্তান জাহিদু ২০০৮ সালে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় প্রতিবেশীর ছাদে খেলতে গিয়ে পল্লীবিদ্যুতের হাইভোল্টেজ তারে হাত লেগে গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়ে।
চিকিৎসাকালীন তার বাম হাতের কনুইয়ের ওপর থেকে এবং ডান হাতের কনুইয়ে নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়। দুর্ঘটনার শিকার জাহিদুল দীর্ঘ চার বছর চিকিৎসা শেষে উপজেলার লাউড়ি রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুনরায় তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যায়। মাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ ৪ দশমিক ৬ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় সে। প্রতিবন্ধী জীবনের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়ে নিরন্তর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে সে।
অদম্য মনোবল ও লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ তাকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে অগ্রবর্তী করছে। মণিরামপুর সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জাহিদুল ইসলাম জন্মগত প্রতিবন্ধী নয়। দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আজ প্রতিবন্ধী হয়েছে। লেখাপড়ার প্রতি তার মনোযোগ রয়েছে যথেষ্ট। জাহিদুল মানুষের কাছে সাহায্য নয়, সফল হতে সকলের কাছে দোয়া চেয়েছে।