শেখ বাদশা, আশাশুনি ব্যুরো : আশাশুনি উপজেলার স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ বুধহাটা বাহাদুরপুর ভূবন মোহন কলেজিয়েট স্কুল স্বমহিমায় গৌরবোজ্জল ভাবে এগিয়ে চলেছে। স্কুলটি ১৯১৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এলাকার অনেকগুলো গ্রামের ছাত্রছাত্রীদেরকে শিক্ষার আলোয় উদভাসিত করতে পরিচালিত হয়ে আসছে।
দিনে দিনে বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার মান ভাল হওয়ায় উপজেলা পেরিয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলা, এমনকি বাইরের জেলার শিক্ষার্থীরাও বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে লেখাপড়ার সুযোগ করে নিয়েছে। তখন বিদ্যালয়ে নিজস্ব বডিং ব্যবস্থা, বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে বিদ্যালয়ের অবস্থানও ঈর্ষনীয় ছিল। অভিভাবকদের চাহিদা ও যুগের সাথে তাল মেলাতে এক পর্যায়ে কলেজিয়েট স্কুল হিসাবে চালু করা হয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিকে। এখানেও সফলতা এসেছে।
এমনকি জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি সকল পরীক্ষায় কলেজিয়েট স্কুলের ভাল ফলাফলের কারনে সুখ্যাতি বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে থাকে। নানাবিধ কারনে মাঝখানে কিছুটা পিছিয়ে পড়ে প্রতিষ্ঠানের সার্বিক ফলাফল। বডিং/ছাত্রছাত্রী হোস্টেল ব্যবস্থাও বন্ধ হয়ে যায়। স্কুলের সংখ্যা বেড়ে যাওয়াসহ অন্যান্য কারনে প্রতিষ্ঠানের সুপ্রাচীন ঐতিহ্য কিছুটা ম্লান হতে শুরু করে। ১/৮/২০২৩ তারিখে নতুন অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করেন মোহিত কুমার দাশ।
তিনি যোগদানের পর থেকে প্রতিষ্ঠানের পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে এনে আরও উন্নতভাবে প্রতিষ্ঠানকে প্রতিষ্ঠিত করতে নতুন উদ্যমে সকল শিক্ষকদের নিয়ে কাজ শুরু করেন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এবিএম মোস্তাকিম কমিটির সদস্যদের নিয়ে অধ্যক্ষ ও সকল শিক্ষকদের নানা পরামর্শ্ব এবং সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে প্রতিষ্ঠানের মানোন্নয়ন ও শিক্ষাদানের স্পৃহা সৃষ্টিতে কাজ করে আসছেন।
প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে প্রায় একহাজার দুই শত ছাত্রছাত্রী রয়েছে। ৩৭ জন শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত আছেন। যার মধ্যে ৩৩ জন এমপিওভুক্ত। বাকীদের এমপিওভুক্তির ব্যাপারে কার্যক্রম অব্যাহত আছে। নতুন অধ্যক্ষ যোগদানের পর একটি এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফলাফলও খুব ভাল হয়েছে। পরীক্ষায় ১৬২ শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে শতভাগ কৃতকার্য হয়েছে। যার মধ্যে এ+৫৭, এ ৯১, এ-১২ ও বি ২ জন। ফলাফলে প্রতিষ্ঠানটি উপজেলায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে।
বিদ্যালয়টির অতীত গৌরব পুনরুদ্ধারে কমিটি ও শিক্ষকমন্ডলীকে সাথে নিয়ে অধ্যক্ষ মোহিত কুমার দাশ নানা পরিকল্পনা মাথায় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন এবং ইতিমধ্যে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র পরিবর্তন, স্কুলের জমির সমস্যা সমাধান, শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস কার্যকর করা, স্কুলের আশপাশে বখাটেদের আনাগোনা রোধসহ বহু কাজ সম্পাদন করেছেন এবং স্কুলের সার্বিক উন্নয়নের চিন্তা বাস্তবায়নে এগিয়ে চলেছেন। তখন স্কুলের অভ্যান্তরে একটি ঘটনা ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষকমন্ডলী, কমিটিসহ সচেতনমহলকে হতবাক করে দিয়েছে।
এনিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব এবিএম মোস্তাকিমের নেতৃত্বে কমিটির সদস্যবৃন্দ ও শিক্ষকমন্ডলী বিশেষ সভায় মিলিত হন। সভায় অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক জাকির হোসেন কর্তৃক অধ্যক্ষের উপর অসৌজন্য মূলক আচরণের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। আলোচনাকালে বেরিয়ে আসে ঘটনাটা নিয়ে বিশেষ মহল মিথ্যা তথ্য নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকা ও অন লাইনে অপপ্রচারে উদ্যোগি হয়েছে।
এমনকি প্রতিষ্ঠান চলাকালীন স্কুল চত্বরের বাইরে কতিপয় শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে অবমাননাকর পরিবেশ সৃষ্টি করে। বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের জন্য পরিচালনা কমিটির প্রতি আস্থা রাখা উচিৎ ছিল, তা না করায় উপস্থিত সকলে দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সভাপতি সাহেব ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ ৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষক জাকির হোসেনের বক্তব্য শ্রবণ করেন।
এসময় অধ্যক্ষ মোহিত কুমার দাশের বিরুদ্ধে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় প্রভাষক জাকির হোসেন অধ্যক্ষের নিকট ভুল স্বীকার করেন। সভায় ভবিষ্যতে অনুরুপ আচরণ না করতে সতর্ক করা হয় এবং করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।