শুক্রবার , ২ আগস্ট ২০২৪ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. আইন আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. আশাশুনি
  4. কলারোয়া
  5. কালিগঞ্জ
  6. কৃষি
  7. খুলনা
  8. খেলা
  9. তালা
  10. দেবহাটা
  11. বিনোদন
  12. যশোর
  13. শিক্ষা
  14. শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  15. শ্যামনগর

পরিকল্পিত ভাবে লবণপানি অনুপ্রবেশ-ভারীবর্ষণে আমন চাষের লক্ষাধিক বিঘা জমি পানির নিচে

প্রতিবেদক
satkhirar sakal
আগস্ট ২, ২০২৪ ১১:৪৫ অপরাহ্ণ

এ. মাজেদ : সাতক্ষীরার কৃষিতে উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রধান অভিশাপ জলাবদ্ধতা। প্রতি বছর এই অভিশাপের প্রভাব বিস্তার করে জাতীয় অর্থনীতিতে। খাদ্য সংকট মিটাতে চরম বিপাকে পড়ে স্থানীয় সাধারণ মানুষ। মরিচ্চাপ নদী খনন করা হলেও পানি সরবরাহ সঠিক ভাবে হচ্ছে না। পাশ্ববর্তী বেতনা নদীর খনন কাজ চলমান। গত চার বছর আগে নদীখনন করা শুরু হলেও শেষ হয়নি আজোঅব্দি। বেতনায় পানি সরবরাহ বা চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর, ধুলিহর, ফিংড়ী ,আলিপুর এবং আশাশুনি উপজেলার কুল্যা বুধহাটা কাদাকাটিসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে একশ্রেণীর অসাধু চিংড়ী চাষীদের সুবিধার জন্য মে ও জুন মাসে পরিকল্পিত ভাবে রাতারাতি লবণপানি অনুপ্রবেশ করিয়ে চিংড়ী চাষ করেই চলেছে। নেই কোন প্রশাসনিক ভ্রæক্ষেপ।চাষের জমি পানি বন্দী না হলেও এসমস্ত এলাকার খাল গুলো ছিল পানিতে পরিপূর্ণ।

৩১ জুলাই থেকে ২আগস্ট ভারী বর্ষণে ধুলিহর, ফিংড়ী, ব্রহ্মরাজপুর, কুল্যা, বুধহাটা ও কাদাকাটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক বিঘা চাষের জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আমন ধান চাষ করার স্বপ্ন ছেড়েছে এঅঞ্চলের কৃষকরা। কৃষিতে উপার্জন নির্ভর পরিবার প্রধানরা মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েছে। সন্তানের পড়াশোনা খরচ, পরিবারের চিকিৎসা ব্যয়, দ্রব্য মূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতির বাজারে কি হবে তাদের পরিবারের উপায়? শংকিত হয়ে পড়েছে- গবাদি পশুর খাদ্য ঘাটতি মিটাবে কোথা থেকে?

আমন ধানের চারা রোপণ উপযোগী হওয়ার মূহুর্তে ভারী বর্ষণের ফলে পানির নিচে তলিয়ে গেছে বীজতলার সব চারা। কান্না ভেজা কন্ঠে কুল্যা গ্রামের আক্কাস আলী জানান তার ১৮ বিঘা জমিতে চাঁদপুরে আব্দুর রশীদ ও কামরুজ্জামান জানান তাদের যৌথ ভাবে ৩০ বিঘাসহ অন্যকৃষকদের কোন জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে আমন ধানের চাষ করা সম্ভব হবে না। তাঁরা জানান এলাকার কৃষকরা এখন হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে।

প্রতি বছর বৃষ্টি হলেই সাতক্ষীরা সদরের কয়েকটি ইউনিয়নের ২৫/৩০ টি গ্রামে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। গত তিনদিন ভারী বর্ষণের কারণে সাতক্ষীরার ধুলিহর, ব্রহ্মরাজপুর ও ফিংড়ী ইউনিয়নের ২৫/৩০টি গ্রামে, ধুলিহর ইউনিয়নের দামারপোতা, বাগডাঙ্গা, বড়দল, জিয়ালা, গোবিন্দপুর, নাথপাড়া, কাজিরবাসা, তালতলা, বালুইগাছা, ধুলিহর সানাপাড়া, জাহানাবাজ, কোমরপুর, দরবাস্তিয়া, চাঁদপুর গ্রামের অধিকাংশ জায়গায় জলাবদ্ধতা ভয়াবহ রুপ নিয়ে স্থায়ী জলবদ্ধতা দেখ দিয়েছে।

এছাড়াও ফিংড়ী ইউনিয়নের ফয়জুল্যাপুর, বালিথা, শিমুলবাড়ীয়া, এল্লারচর, ফিংড়ী, গাভা, ব্যাংদহা, জোড়দিয়া, গোবরদাড়ী, সুলতানপুর, মজলিসপুর, হাবাসপুর ও কুলতিয়াসহ ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের মাছখোলা, নুনগোলা, রামচন্দ্রপুর, চেলারডাঙ্গা, বড়খামার, মেল্লেকপাড়া, উমরাপাড়া, বাঁধনডাঙ্গা, আশাশুনি উপজেলার কুল্যা, বুধহাটা ও কাদাকাটি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে সৃষ্ট হয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। গত দু’যুগ ধরে এসব এলাকায় প্রতি বছর জুলাই মাস আসতে না আসতেই সামান্য বৃষ্টিতে সাতক্ষীরার বেতনা পাড়ে অবস্থিত গ্রামগুলো পানির নিচে তলিয়ে যায়। এসব গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি মানুষের মধ্যে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়া, আমাশা জ্বরসহ বিভিন্ন ব্যাধি। পানি বন্দি এলাকার হতাশাগ্রস্থ সাধারণ মানুষ জলাবদ্ধতা নিরসনে জেলা প্রশাসনের জরুরী সহযোগিতা কামনা করেছেন।

সর্বশেষ - সাতক্ষীরা সদর