বৃহস্পতিবার , ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. আইন আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. আশাশুনি
  4. কলারোয়া
  5. কালিগঞ্জ
  6. কৃষি
  7. খুলনা
  8. খেলা
  9. তালা
  10. দেবহাটা
  11. বিনোদন
  12. যশোর
  13. শিক্ষা
  14. শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  15. শ্যামনগর

কালিগঞ্জে প্রধান শিক্ষক ও যুবলীগের সভাপতি সহ আট জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা

প্রতিবেদক
satkhirar sakal
সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪ ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার সদরে অবস্থিত কালিগঞ্জ পাইলট বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সাবেক সভাপতি সহ ০৮ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেছেন অত্র বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী উপজেলা গণপতি গ্রামের মৃত আদম আলীর ছেলে শেখ মাসুদ আলী (৫৮) গত সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরা বিজ্ঞ আমলী (২নং) আদালতে সি আর নং (৬৬৫/২৪কালি:) দন্ডবিধি ৩৮৪/৩৮৫/৩৮৬/৩৮৭/৫০৬ (২য় অনুচ্ছেদ) ১০৯ দঃ বিধি মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে এবং ভুক্তভোগী মাসুদ আলী সাংবাদিকদের জানান, গত ০১ফেব্রুয়ারি ১৯৯৪ইং তারিখে কালিগঞ্জ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। মামলার ১নং আসামী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্র নাথ বাছাড় এবং ২ নং আসামী অত্র বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ নাজমুল ইসলাম গত জুন মাসের প্রথমে ২০২৪ সালে সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দলীয় সাতক্ষীরা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম আতাউল হক দোলনের সহযোগী একান্ত আস্থাভাজন হওয়ার সুবাদে অন্যায় ভাবে ষড়যন্ত্র ও প্রভাব বিস্তার করে সভাপতি এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গত ১ জুলাই ২০২৪ তারিখে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে।

অন্যথায় চাঁদার টাকা না দিতে পারলে তাকে চাকুরী থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কোনভাবেই নৈশ প্রহরী চাঁদার দাবি কৃত টাকা সংগ্রহ করতে না পারার কারণে গত ১৩ জুলাই ২৪ইং প্রধান শিক্ষক মোবাইল ফোনে নৈশো প্রহরী মাসুদকে ডেকে সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষক তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জীবননাশের ভয় দেখাইয়ে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করে চাকরি থেকে ইস্তফা আবেদন স্বাক্ষর করে নিয়ে শারীরিক অসুস্থতা দেখাইয়ে তাকে চাকরি থেকে বহিষ্কার করে।

তার স্বাক্ষরকৃত সাদা কাগজে নিজেদের ইচ্ছামতো স্বেচ্ছায় পদত্যাগ লিখে নিয়ে সংশ্লিষ্ট মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে পাঠিয়ে দিয়ে তাকে আর স্কুলে ঢুকতে দেয় না। এই বিষয়ে কোথাও কোন প্রকার অভিযোগ করিলে খুন জখম সহ ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। মাসুদ জীবন ও পরিবারের ভয়ে কোথায় কিছু না বলে নিরুপায় হয়ে চাকুরী হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পথে পথে ঘুরতে থাকে। এরই প্রেক্ষিতে গত ০৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফ্যাসিবাদী স্বৈরাশাস শেখ হাসিনা সরকারের প্রধানমন্ত্রীর থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে মামলার বাদী মাসুদ আলী চাঁদার টাকা না দেওয়ায় কারণে তাকে খুন জখম অগ্নিসংযোগ সহ জীবননাশের ভয় দেখাইয়া তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে জোর পূর্বক স্বাক্ষর করে চাকুরী হইতে বহিষ্কার করার অভিযোগ এনে নিরুপায় হয়ে উল্লেখিত ব্যক্তিদের নামে অবশেষে সাতক্ষীরা জেলা বিজ্ঞ আদালতে হাজির হয়ে একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন।

সাতক্ষীরা জেলা বিজ্ঞ আমলী ০২নং আদালতের বিচারক সিনিয়র চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহিদুল ইসলাম, কাগজপত্র পর্যালোচনা করে মামলাটি আমলে নিয়ে সাতক্ষীরা জেলা পি,বি,আই পুলিশকে তদন্তপূর্বক চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রদান করার নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার আসামিরা হলেন কালিগঞ্জ সদর বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ বাছাড়া, অত্র বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মোঃ নাজমুল ইসলাম এছাড়া অত্র বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য বসন্তপুর গ্রামের ডাঃ মোঃ সিদ্দিকুল ইসলাম, অভিভাবক সদস্য মহৎপুর গ্রামের সুকুমার বৈদ্য, অভিভাবক সদস্য বাজার গ্রাম এলাকার আবুল খায়েরের ছেলে শেখ নাজিম উদ্দিন, বসন্তপুর গ্রামের মৃত শিবু মন্ডলে ছেলে বিশ্বজিৎ দাস, বাজার গ্রাম এলাকার শেখ সাইফুল বারী, এবং বাজার গ্রাম এলাকার মৃত হাজী মহিউদ্দিনের ছেলে সাকির আহমেদ প্রমুখ।

এ বিষয়ে অত্র স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ বাছাড়ের নিকট ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান স্কুলের মধ্যে একটি কক্ষে অসামাজিক কার্যকলাপের ঘটনা নিয়ে সে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছে। এখন সে উল্টো আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে বলে জানান। অত্র বিদ্যালয়ের সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগ সভাপতি নাজমুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি দায়িত্ব নেওয়ার কয়েকদিন পর স্কুলে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে নৈশ প্রহরী মাসুদ নাকি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছে বলে প্রধান শিক্ষক আমাকে জানিয়েছিলেন।

পরে সেটা বোর্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে অসামাজিক কার্যকলাপের ঘটনা নিয়ে তার বিরুদ্ধে তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটি কোন তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল কিনা? হলে তার কোন প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে কিনা? সে বিষয়ে প্রধান শিক্ষক কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। অন্যদিকে উল্লেখিত মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী নৈশ প্রহরী মাসুদ আলী এবং তার পরিবারের পক্ষ থেকে পুনরায় চাকুরী ফিরে পেতে বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উদ্ধাতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সর্বশেষ - সাতক্ষীরা সদর