বৃহস্পতিবার , ২৪ অক্টোবর ২০২৪ | ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. আইন আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. আশাশুনি
  4. কলারোয়া
  5. কালিগঞ্জ
  6. কৃষি
  7. খুলনা
  8. খেলা
  9. তালা
  10. দেবহাটা
  11. বিনোদন
  12. যশোর
  13. শিক্ষা
  14. শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি
  15. শ্যামনগর

উপকূলে বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসে মাটির বাঁধ নিরাপদ নয়

প্রতিবেদক
satkhirar sakal
অক্টোবর ২৪, ২০২৪ ১১:৫৯ অপরাহ্ণ

বিলাল হোসেন শ্যামনগর ব্যুরো : অতিরিক্ত বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে মাটি দিয়ে তৈরি বাঁধ দীর্ঘস্থায়ী ও নিরাপদ না বলে জানিয়েছেন বাঁধ বিশেষজ্ঞ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। ষাটের দশকে মাটি দিয়ে নির্মিত বাঁধ প্রতিনিয়ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। উপকূলের মাটি জমাট বাঁধা ক্ষমতা কম থাকে। বৃষ্টির পানি ও নদীর জলোচ্ছ্বাসে মাটির নির্মিত বাঁধে ধস নামতে ও ভাঙতে শুরু করে।

বেশিরভাগ প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে অতিরিক্ত বৃষ্টি ও নদীর পানি উচ্চতার ফলে বাতাসের ঢেউয়ের গতিতে বাঁধের সাথে পানির ধাক্কা লাগে। সেই ধাক্কায় বাঁধ ভেঙ্গে যায়। দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ না করায়। সাময়িক ভাবে মাটি দিয়ে নির্মিত বাঁধগুলোই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডিও ইমরান হোসেন জানান, মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণে দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ করে। বাঁধের সাথে ব্লক, জিও বস্তা দিয়ে দিতে হবে। যাতে করে বাঁধের মাটি জমাট থাকে। অতিরিক্ত বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতি করতে না পারে।

উপকূলের পরিবেশ নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা লিডার্সে নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে বেড়িবাঁধ ৩ ধারণের মাটি দিয়ে করা হয়। আঠাল মাটি,বেলেদোয়াস মাটি, বেলে মাটি। এ মাটিগুলোর বৈশিষ্ট্য হলে জমে যাওয়ার আগে পানির ধাক্কায় ধষে যায়। এ মাটি দিয়ে বাঁধ টিকিয়ে রাখতে হলে বাঁধের দুপাশে ১০০ মিটার দূরে ড্রেনেস ব্যবস্থা করতে হবে। কংক্রিটের ব্লক দিয়ে বাঁধ ঢেকে দিতে হবে।

দুর্গাবাটি গ্রামের বিধান মণ্ডল জানান, নদী ভাঙ্গনের পরে পানি উন্নয়ন বোর্ড বেলে দোয়াস মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে। পরবর্তীতে বড় কোন দুর্যোগ বা অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে সেখান থেকে আবার ভাঙ্গন তৈরি হয়। মাটি ঠিকমত জমাট না বাধার কারণে পানি লেগে পুনরায় ভেঙে যায়। গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, অভিজ্ঞতা দিয়ে যেটা বুঝলাম ষাটের দশকে নির্মিত বাঁধ এখনো জরাজীর্ণ অবস্থায় চলছে।

আমাদের উপকুলিয়া অঞ্চলে অধিকাংশ বাঁধ পানির কারণে নষ্ট হয়। বাঁধের পাশ দিয়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে পানি লেগে বেশিরভাগ বাঁধ নষ্ট হচ্ছে। টেকসই বাঁধ নির্মাণ করতে হলে কংক্রিটের ব্লক অথবা জিও বস্তা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। যাতে বাঁধের গায়ে পানি না লাগতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের শ্যামনগরের দায়িত্বে থাকা এসডিও ইমরান হোসেন জানান, মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণে দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ করে। বাঁধের সাথে কংক্রিটের ব্লক, জিও বস্তা দিয়ে বাঁধ ঢেকে দিতে হবে। যাতে করে বাঁধের মাটি জমাট থাকে। অতিরিক্ত বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতি করতে না পারে। শ্যামনগর উপকূলে ১৫১ কিলোমিটার বাঁধ আছে। এর মধ্যে ৯টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে।

এই বাঁধ গুলো মাটি দিয়ে তৈরীর কারণে প্রবাল ঘূর্ণিঝড় ও বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঝুঁকিপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেন। এছাড়া বাঁধ ভাঙ্গার পরে কোটি টাকার বেশি ও ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ গুলোর মধ্যে বুড়িগায়ালিনী ইউনিয়নের পশ্চিম দুর্গাবাটির দুইটি পয়েন্ট ২০০ মিটারের মত ঝুঁকিপূর্ণ, দাতিনা খালীর একটি পয়েন্ট গাবুরা ইউনিয়নের ৯ নং সোরা ও দৃষ্টিনন্দন ৩০০ মিটারের মতন ঝুঁকিপূর্ণ, মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের সেন্ট্রাল কালিনগর, হরিনগর বাজার, কদমতলা ৩৫০ মিটার মত ঝুঁকিপূর্ণ, রমজাননগর ইউনিয়নের গোলাখালি দ্বীপ গ্রামের সবই ঝুঁকিপূর্ণ কৈখালী ইউনিয়নের বৈশখালি ১৫০ মিটারের মতো ঝুঁকিপূর্ণ। চলমান ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ভেড়ি বাঁধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছে উপকূলের মানুষ। অতিরিক্ত বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে যেকোনো মুহূর্তে বাঁধ ধ্বস নিতে পারে।

সর্বশেষ - সাতক্ষীরা সদর

আপনার জন্য নির্বাচিত