শ্যামনগর ব্যুরো : সুন্দরবনে যাওয়া দুই জেলেকে চার লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করেছে বনদস্যুরা। সরকারিভাবে আত্মসমর্পণের পর আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মজনু বাহিনীর প্রধান মজনু সহ তার দল। দিনে দিনে জেলেদের আতঙ্ক হয়ে উঠছে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকালে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের মালঞ্চ নদীর সাতনলা দুনে নামীয় এলাকা থেকে তাদের অপহরণ করা হয়। অপহৃত দুই জেলে হলো খুলনার কয়রা উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের আতাহার হোসেন (৩৫) ও রফিকুল ইসলাম(৩৮)। ফিরে আসা জেলে রবিউল ইসলাম ও আছাদুল গাজীসহ অন্যরা জানায়, গত ৩০ নভেম্বর তারা চারটি নৌকায় আটজন জেলে বুড়িগোয়ালীনি স্টেশন থেকে পাশ নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে।
এক সপ্তাহেরও বেশী সময় ধরে ফিরিঙ্গি এলাকায় মাছ শিকারের পর গত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) তারা মালঞ্চ নদীতে পৌছায়। একপর্যায়ে সেখানকার সাতনলার দুনে এলাকায় মাছ শিকারের সময় ‘দয়াল বাহিনী’ পরিচয়ে চার সদস্যের বনদস্যু বাহিনী অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করে। এসময় চারটি নৌকা থেকে সমন্বয়ের ভিত্তিতে দুই জেলেকে উঠিয়ে নেয়। পরে তাদের কাছে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
ফিরে আসা এসব জেলে আরও জানায়, দুই সহযোগী জেলেকে অপহরণকারী বনদুস্যুরা আত্মসমর্পণকৃত বনদস্যু মজনু বাহিনীর সদস্য। কৌশল হিসেবে তারা দয়াল বাহিনীর নাম পরিচয় ব্যবহার করছে। অপহৃত জেলেদের সহযোগীরা আরও জানায় চার সদস্য প্রকাশ্যে এলেও সংখ্যায় তারা আট/নয় সদস্য।
স্থানীয় সুত্রমতে, গত ২০১৭ সালে মজনু তার বাহিনীর ১৮ জন সদস্যসহ র্যাব-৮ এর কাছে আত্মসমর্পণ করে। সে শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের চকবারা গ্রামের বাসিন্দা। তবে দস্যুতায় জড়ানোর পর থেকে খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকায় প্রাসাদসম বাড়ি নির্মান করে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে।
স্থানীয় নির্ভরযোগ্য একাধিক সুত্রের দাবি গত তিন সপ্তাহ পুর্বে বিপুল কোম্পানীর নৌকাযোগে বনদস্যু দলের সদস্যরা সুন্দরবনে প্রবেশ করে। দস্যুতার সাথে জড়িত অন্যরা কয়রা এলাকার বাসিন্দা।
এসব বিষয়ে সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এ.জেড.এম হাছানুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত কোন জেলের পরিবার বিষয়টি বনবিভাগকে জানায়নি। তবে খোঁজ নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে অপহৃত জেলেদের উদ্ধারে জনবল পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩ নভেম্বর পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সুন্দরবনের চুনকুড়িঁ নদীর তক্তাখালী এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে বনদস্যুদের কবল থেকে অপহৃত দশ জেলেকে উদ্ধার করেছে বন বিভাগের সদস্যরা। এর আগে গত ৩১ অক্টোবর পশ্চিম সুন্দরবনের কোষ্টাখালী খালে কাঁকড়া শিকারকালে শ্যামনগর ও কয়রা উপজেলার মফিজুর রহমান ও মৃনাল সরদার নামের দুই জেলেকে অপহরণ করে বনদস্যুরা।