আতাউর রহমান, পাটকেলঘাটা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা জেলার প্রধান বানিজ্যকেন্দ্র পাটকেলঘাটায় নতুন করে একটি কাঁচামালের আড়ৎ গড়ে ওঠায় ৫ ইউনিয়নের ৫০ হাজার কৃষকদের মাঝে ব্যপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে। তাদের জমিতে উৎপাদিত বিভিন্ন কাঁচামাল পাইকারি বিক্রির জন্য আগে দূর দূরান্তে যাওয়া লাগতো। এতে করে পরিবহন খরচ সহ আনুষঙ্গিক অন্যান্ন ব্যয় বৃদ্ধি পেতো। এখন তাদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তবে এখনও পুরোপুরি জমে উঠেনি আড়তদারি ব্যবসা।
সূত্র জানায়, এলাকার হাজারো কৃষকের চরম দুর্ভোগ লাঘবের জন্য ইটভাটা ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক বাবলুর রহমান নিজ উদ্যোগে ভাইভাই কাঁচামালের আড়ৎ গড়ে তোলেন। খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশে পাটকেলঘাটা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিছনে জনবহুল স্থানে আড়ৎ স্থাপন করায় মালামাল পরিবহন করা অনেক সহজ হয়েছে। গত ১৫ই অক্টোবর তালা-কলারোয়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব আড়তের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
এই মার্কেটে ছোট-বড় মিলিয়ে ২৪টা দোকান রয়েছে। এতে শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। যারা এই মার্কেটে দোকান নিয়েছে তারা সবাই বাবলু রহমানের সময়উপযোগী এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে বাবলু রহমান বলেন, মার্কেট উদ্বোধনের পর থেকে খুব ভালোই চলছে। ব্যবসায়ী ও কৃষকদের মাঝে ব্যপক সাড়া পড়েছে। জমজমাট হয়ে উঠেছে কাঁচা বাজার। তবে এরই মধ্যে একটি কুচক্রী মহল তার কাঁচা মালের আড়োৎ নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। এই মার্কেটের কারণে নাকি পাটকেলঘাটা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘ্নো হচ্ছে। যেটি আদেও সত্যি নয়।
স্কুল কর্তৃপক্ষ উত্তর পাশের গেট নিয়ে অভিযোগ জানালে আমি নিজে দাড়িয়ে থেকে সেটি তালা মেরে বন্ধ করে দিয়েছি। যার চাবি আমার কাছে রয়েছে। আমি চাইনা আড়তের কারণে স্কুলের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার কোনো ক্ষতি হোক। তারা যেনো নির্বিঘ্নে পাঠদান করতে পারে তার জন্য আমি সার্বিক সহযোগিতা করবো। আর যদি অন্য কারো কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে আমাকে জানালে আমি যথাসম্ভব দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা নেবো।
এ বিষয়ে পাটকেলঘাটা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদক কে বলেন আমাদের কোনো শিক্ষার্থীর পড়াশুনায় বিন্দুমাত্র ক্ষতি হচ্ছে না। ভোররাত থেকে তাদের পাইকারি বাজার শুরু হয়। আর সকাল দশটার মধ্যে শেষ হয়ে যায়। এ কারনে আমাদের কোন শিক্ষার্থীর সমস্যা হবার কথা নয়। তবে আড়তের উত্তর পাশের গেটটা স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিলে ভালো হয়। টিফিনের সময় দুই একজন শিক্ষার্থী স্কুল ফাঁকি দিয়ে ওই গেট দিয়ে পালিয়ে যায়।
স্কুল রোডের কয়েকজন দোকানদার জানান, কাচামালের আড়তদার সহ দূর দূরন্ত থেকে আসা ব্যপারীদের আগমনে এলাকায় প্রানচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। আমাদের কেনাবেচাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
আড়তের চায়ের দোকানদার আকবর বলেন, আমার আগে দোকান ছিলো কলেজ রোডে। এখানে আড়ৎ উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে দোকানদারি করছি। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আমি ৪-৫ হাজার টাকা কেনাবেচা করি। আড়তের সুনাম এখন চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ায় বাইরে থেকে অনেক লোক আসছে। সিজান সামি বাণিজ্য ভান্ডারের মালিক শিমুল হোসেন, শেখ বাণিজ্য ভান্ডারের মালিক আব্দুল হালিম মন্টু, বিসমিল্লাহ আড়তের মালিক আশরাফুল ইসলাম, ভাই ভাই বাণিজ্য ভান্ডারের মালিক শেখ আব্দুল হালিম বলেন, অনেক আশা নিয়ে এখানে আড়ত করেছি। প্রথম দিকে ব্যবসায় একটু মন্দা ভাব দেখা দিলেও এখন মোটামুটি সন্তোষজনক। স্থানীয় কৃষক সহ অনেক দূর থেকেও ব্যবসায়ীরা এখানে কেনাবেচা করতে আসছেন। ধিরে ধিরে এই কাঁচাবাজারটি জমজমাট হয়ে উঠবে বলে আশাবাদী তারা।