বিশেষ প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা সদর উপজেলা সহ বিভিন্ন অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে জলবদ্ধতা শিকার লক্ষাধিক মানুষ। গত ১ মাস ধরে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। পানি নিষ্কাশনের সাথে সাথে জলবদ্ধতা এলাকায় পাকা ও মাটির রাস্তায় নষ্ট হয়ে গেছে। জলাবদ্ধতা ভয়াবহ ক্ষতচিহ্ন দেখা যাচ্ছে ফলজ গাছ সহ বিভিন্ন গাছ পালা মরে যাচ্ছে।
সাতক্ষীরা পৌরসভা সহ সাতক্ষীরার বেতনা তীরবর্তী অঞ্চলে বিশেষ করে সাতক্ষীরা, বিনেরপোতা, ঝাউডাঙ্গা লাবসা, ব্রহ্মরাজপুর, ধুলিহর, সহ আশাশুনি তালা ও পাটকেলঘাটা অঞ্চলে দীর্ঘ ৩মাসের অধিক ধরে জলবদ্ধতার কারণে এ সমস্ত এলাকায় বাড়িঘরসহ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা পানিতে ডুবে যায়। এ সমস্ত এলাকায় ফসলি জমি সহ মৎস্য ঘের পুকুর সহ পানিতে ভেসে গিয়েছিল।
দীর্ঘদিন পানিতে ডুবে থাকার কারণে পানিবন্দি মানুষগুলো কর্মহীন হয়ে পড়ে। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে গবাদি পশু ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদ জায়গায় চলে যায়। মানুষের জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। সরজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায় ধুলিহর ইউনিয়নের দামারপোতা, বাগডাঙ্গা, বড়দল, জিয়ালা, গোবিন্দপুর, বালুইগাছা, তালতলা, সানা পাড়া সহ একাধিক পানিবন্ধি এলাকায় কর্মহিন হয়ে পড়া শতাধিক নারী-পুরুষ তারা দিনভর মৎস্য শিকার, শামুক ঝিনুক ও শেওলা সংগ্রহ করতে দেখা যায়।
ধুলিহর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আমির হোসেন নামে এক যুবক জানান আমাদের এলাকা দীর্ঘদিন ধরে পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে কোন কাজকর্ম না থাকায় আমি মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করি, দিনে ও রাতে আমি মাছ শিকার করে ৫০০ টাকার মত পায়। একই গ্রামের হযরত আলী জানান আমার পোল্ট্রি ফার্ম আছে সেটি পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে আমি কর্মহীন হয়ে পড়ি, আমি মাছ ধরার জন্য বিভিন্ন ধরনের জাল কিনে সারারাত মাছ ধরি মাছ বিক্রি করে আমি ৪০০- ৫০০ টাকা আয় করি, বাবলু নামে এক ব্যক্তি জানান আমি ৪ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করে ছিলাম তবে কিছুদিন যেতে না যেতেই আমাদের এলাকা পানিতে ডুবে যায়।
আমার ধান সব নষ্ট হয়ে যায়। আমি জীবিকার সন্ধানে কোন কাজ না পেয়ে আমি মৎস্য শিকার করতে শুরু করি মৎস্য শিকার করে আমার সংসার চালায়। একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায় বিস্তীর্ণ এলাকায় জলবদ্ধতার কারণে পুকুর ও মৎস্য ঘের পানি ভেসে যাওয়ার কারণে মাছে মাছে ভরে যায় গোটা এলাকা আমরা মাছ মেরেই জীবিকা নির্বাহ করি। এছাড়া পানিবন্দী এলাকায় নারী-পুরুষ কুচুরিপানা ও শামুক শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করছে বলে জানা যায়।
ধলিহর গোবিন্দপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান, ছলেমান, ধীরেন সরকার, মারুফ, জিসান নামে একাধিক ব্যক্তি কে মাছের খাদ্যের জন্য কুচুরিপানা সংগ্রহ করতে দেখা যায়। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় জলবদ্ধতার কারণে এক ধরনের কচুরিপানা কাটাশেলা নামে পরিচিত ব্যাপক হয় জন্মায়। এই কচুরিপানা সাদা মাছ কাতলা গ্লাস কাপ সিলভার কাপ এ ধরনের মাছ কে বড় হয়।
কচুরিপানা এক ইঞ্জিনভ্যান ৩থেকে ৪ শত টাকা দরে বিক্রি হয়। কচুরিপানা তুলে পানিবন্দী এলাকার শত শত মানুষের জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে। এবং মাছের খাদ্য হিসেবে শামুক ব্যবহার করা হয়। শামুক সংগ্রহ করতে নারীদের দেখা যায় বেশি। অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায় প্রতি কেজি শামুক ১২ থেকে ১৩ টাকা বিক্রি হয়, সামুক ভেঙে বিক্রি করলে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হয় সারাদিনে পাঁচ থেকে সাত কেজি শামুক সংগ্রহ করতে পারে। জলাবদ্ধতা এলাকায় ইরি ধান চাষ নিয়ে শঙ্কায় আছে।