নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় শিশুদের মাঝে ঠান্ডা জনিত ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে ব্যাপক হারে। এক মাসে ৭ শতাধিক ডায়রিয়া আক্রন্ত শিশু ভর্তি হয়েছে সাতক্ষীরা সদর হাসাপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। প্রতিনিই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
এদিকে শয্যা সংকটের কারনে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেঝেতে রাখা হচ্ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন শয্যা ব্যবস্থার আটগুন বেশি ভর্তি ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু রোগী। ফলে এসব শিশুদের চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মরত নার্স ও চিকিৎসক। গতকাল সকালে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি শীতজনিত ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু মালিহা (১৬) মাস, রামিছা জান্নাত (১৪) মাস, নাইমা (১১০ মাস ও জানাতুল ফেরদৌস (১৩) মাস। প
র্যাপ্ত শয্যা না থাকায় এসব ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের রাখা হয়েছে হাসপাতালের বারান্দার মেঝেতে। এদিকে আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা গ্রাম থেকে আসা শিশু নাইমা খাতুনের মা মোসলেমা খাতুন জানান, শীতজনিত কারনেই তার শিশু মেয়ের ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে। কিন্ত হাসপাতালের মেঝেতে প্রচন্ড ডান্ডা। এখানে তার কোলের শিশুকে রেখে নতুন করে চিন্তায় পড়েছেন। তিনি বলেন, এখানে শয্যা সংকট জানতে পারলে অন্য কোথাও চিকিৎসা করাতেন তার শিশু মেয়েকে।
একই ধরনের কথা বললেন, ভর্তি ডায়রিয়া শিশু রোগী মালিহা ও রামিছা জান্নাতের স্বজনরাও। তারা বলনে, ডায়রিয়া ওয়ার্ডটির চারিদিকে অপরিচ্ছন্ন নোংরা অবস্থা। তার পর এখানে নেই পর্যাপ্ত শয্যা ব্যবস্থা। ফলে তাদের শিশুদের ভর্তি করে বিপাকে পড়েছেন বলে জানান তারা।
অন্যদিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের শিশু ডায়রিয়া ওয়ার্ড থেকে জানা গেছে, গত এক মাস ৭ দিনে শীতজনিত ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু ভর্তি ৪০৩ জন। এরমধ্যে গত ডিসেম্বরে ৩৭৬ জন এবং চলতি জানুয়ারী মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত ভর্তি ৭৬ জন। সুত্রটি জানায়, প্রতিদিনই বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা।
সদর হাসপাতালের শিশু ডায়রিয়া রোগ বিষেশজ্ঞ ডাক্তার মোঃ আরশাফুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে শিশু ডায়রিয়া ওয়ার্ডটি ৫ শয্যা বিশিষ্ট। কিন্ত প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হচ্ছে ৪০ জন শিশু। ফলে শয্যা সংকটের কারনে ওয়ার্ডের মেঝেতেই রাখতে হচ্ছে আক্রন্ত শিশুদের। তবে হঠাৎ শিশুদের মাঝে ডায়রিয়া বেড়ে যাওয়ার কারন হিসেবে তিনি বলেন, সম্প্রতি শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার জন্যেই এর অন্যতম কারন। তিনি শিশুদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য পাশাপাশি ঠান্ডা বা খাওয়ার না খাওয়ার জন্য মায়েদের বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ দিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মোঃ সামছুর রহমান জানান, গত এক মাসে ৩ শতাধিক ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু হয়েছে মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে। শুধু সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালেই জেলার অন্যান্য উপজেলা বা বেসরকারী হাসপাতালেও শীতজনিত শিশু ডায়রিয়া দেখা দিচ্ছে। তবে শিশুদের ডায়রিয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তাদের মায়েদের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি শিশুদের ঠান্ডা না লাগানোর মরামর্শ দেন।
