খান আতাউর রহমান লিটন, পাটকেলঘাটা প্রতিনিধি : গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কাঠের ঢেকি এখন আর খোঁজ করেও সন্ধান পাওয়া যায় না। প্রাচীনকাল থেকে এই ঢেকির ব্যাপক প্রচলন ছিল প্রতিটি গ্রাম মহল্লায় এমনকি প্রায় বাড়িতেই দেখা যেত ঢেঁকি। সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে এই ঐতিহ্য গুলো আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে।
পাটকেলঘাটা থানার নগর ঘাটা গ্রামে হঠাৎ করে সামনে পড়ে গ্রাম বাংলার সেই ঐতিহ্য কাঠের ঢেঁকির। একটা সময় ছিল যখন চাল, ডাল, গম, ভুট্টা সরিষা ইত্যাদি পরিশোধনের একমাত্র উপায় ছিল এই কাঠের ঢেঁকি। আগে শীত আসলেই গ্রামের মহিলাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা তৈরি হতো কে আগে চাউলের গুড়া তৈরি করে বিভিন্ন বাহারি পিঠা তৈরি করবে। এই বাহারি পিটার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল চিতই পিঠা, ভাপা পিঠা, নকশি পিঠ, পাটিসাপটা পিঠা, পুলি পিঠা, জামাই পিঠ,পাকান পিটা ইত্যাদি। এখনকার সময়ে পিঠা তৈরির প্রচলন একেবারে তলানিতে। সখ করে ছাড়া এখন আর কেউ পিঠা বানাতে চায় না।
বর্তমানে এত প্রযুক্তি থাকার পরও কেন তারা কাঠের ঢেঁকিতে চাউল গুড়া করছে জানতে চাইলে স্থানীয়রা বলেন মেশিনে চাউল গুড়া করলে পিঠার আগের যে স্বাদ পেতো এখন সে স্বাদ আর পায়না। কাঠের ঢেঁকিতে চাউল গুড়া করলে তাদের শরীরও ভালো থাকে আবার খাবারের স্বাদটাও ভালো থাকে খরচ ও বেঁচে যায়। মুজিবর রহমান বলেন আমার বয়স ৭৫ বছর তারপরও আমি এখনও ঢেঁকিতে পাড় দিয়ে চাউল গুড়া করার কাজে তার বিবিকে সাহায্য করে।
তিনি আরো বলেন যত প্রযুক্তি এসে মানুষের কাজ সহজ হয়ে যাচ্ছে কিন্তুু মানুষের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। সকিনা বিবি বলেন আমরা অভাবের কারণে এ কাজ করি তবুও অনেক ভালো আছি। আল্লাহর রহমতে আমাদের ডাক্তার খরচ অনেক কম হয়। ঢেঁকিতে পাড় দিলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে।