আ: রশিদ, ঈশ্বরীপুর (শ্যামনগর) প্রতিনিধি : শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ধুনঘাট বিলে প্রতিবারের ন্যায় এবারও তরমুজ চাষে সফলতার মুখ দেখছেন চাষীরা। তবে লবনাক্ত এলাকা হওয়ায় মিষ্টি পানির সেচ নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটছেনা কৃষকদের। মিঠাপানির অভাবে এবং চলতি মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ায় এই এলাকায় চাষাবাদে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে কৃষকদের। চলতি মৌসুমে মোট কৃষি জমির সামান্য কিছু অংশ চাষাবাদ হলেও মিঠাপানির অভাবে সিংহভাগই চাষযোগ্য জমি পতিত থাকে।
এলাকার হাতেগোনা কয়েকটি পুকুর ও ডোবা থেকে মিঠা পানি নিয়ে সামান্য কিছু অংশে চলতি মৌসুমে ধান ও তরমুজ চাষ করে তাতে আশার আলো জ্বেলেছেন অত্র এলাকার কৃষকরা। কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তর শ্যামনগর এর তথ্যমতে এবছর ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নে তরমুজ চাষ হয়েছে ১০ হেক্টরের মত। যেখানে গতবছর ছিল প্রায় এর দ্বিগুণেরও বেশি। লবনাক্ত এলাকা হওয়ায় শুধুমাত্র সেচ পানির অভাবে এ এলাকায় চলতি মৌসুমে কয়েক শত হেক্টর চাষযোগ্য জমি পতিত রয়েছে।
সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, তরমুজে ভরে রয়েছে এ এলাকার চাষীদের ক্ষেত। একটু দেরিতে তরমুজ চাষ করাই বর্তমানে তরমুজ বাজারজাত করন শুরু করেছে চাষীরা। বিগটপ, জাম্বু গ্লোরি ও ড্রাগন জাতের তরমুজ চাষ করেছে কৃষকরা।
তরমুজ চাষী সুখদেব মন্ডল ও হাফিজুর রহমান, জানান গতবারের তুলনায় এবার তরমুজের ফলন অনেক বেশি। বৃষ্টির কারনে একটু দেরিতে জমি প্রস্তুত করাই তরমুজ চাষ এবছর একটু দেরিতে করা হয়েছে। এজন্য প্রথমদিকে আমরা ক্ষেত থেকে তরমুজ উঠাতে পারিনি। বর্তমানে তরমুজ উঠাতে শুরু করেছি। বাজারে এখন তরমুজের দাম বেশ কম। তবে আরও আগে উঠাতে পারলে দাম বেশি পেতাম এবং লাভ ও বেশি হত।
তরমুজ চাষাবাদের কাজে শ্যামনগর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আমাদের কে সার্বক্ষণিক তথ্য ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে আসছেন। বিঘাপ্রতি আমাদের খরচ হয়েছে ১৫থেকে ২০ হাজার টাকার মত। আর মৌসুমের শেষ পর্যন্ত বিক্রয় করে লাভ দাঁড়াবে বিঘাপ্রতি ৭০থেকে ৭৫ হাজার টাকার মত। তবে আমাদের এখানে কৃষিকাজে সব চেয়ে বড় সমস্যা হল সেচ দেওয়ার জন্য মিষ্টি পানির ব্যবস্থা করা। যদি মিষ্টি পানির ব্যবস্থা করা যায় তবে আগামীতে এ এলাকায় পতিত শত শত বিঘা জমিতে নানা মুখী কৃষি কাজ করা সম্ভব হবে।
তাই আমরা সরকার সহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার নিকট ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের ব্যবস্থা করা কিংবা এ এলাকায় খাল ও পুকুর খননের মাধ্যমে মিষ্টি পানির ব্যবস্থা করার জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর শ্যামনগর সর্বদা তরমুজ চাষীদের সাথে আছে। এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল মিষ্টি পানি। আমরা বিগত দিনে শ্যামনগর উপজেলার সমস্ত এলাকায় ছোট ছোট পুকুর, খাল, নালা, সেচ পাম্পের ব্যবস্থা করেছি ভবিষ্যতে আরও করার পরিকল্পনা আছে। যদি মিষ্টি পানির সরবরাহ করা যায় তবে তরমুজের আবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে। এখানে প্রধান সমস্যা হল মিষ্টি পানির ব্যবস্থা করতে হবে।