ফজলুল হক, কালিগঞ্জ প্রতিনিধি : কালিগঞ্জ উপজেলায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নদীর ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে মথুরেশপুর ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের ফজলুর রহমানের বাড়ির সামনে। এরই মধ্যে ওয়াপদা রাস্তার অর্ধেক ধ্বসে গেছে। তাৎক্ষণিক মেরামত না হলে জোয়ারের পানিতে ৫/৬ টি গ্রাম তলিয়ে যাবে। এলাকার বসতভিটাসহ ফসলি জমি, চিংড়ি চাষের মৎস ঘের নষ্ট হবে। এতে সাধারণ মানুষের জীবন যাপন ব্যহত হবে।
ইতিমধ্যে দায়িত্ব পালনে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে বিজিবি সদস্যদের। তাদের নিয়মিত চলাচলের রাস্তা ভাঙনের ফলে নিয়মিত চলাচলে বিঘ্ন হচ্ছে। ঝুঁকিতে রয়েছে একাধিক মসজিদ, দরবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্তত ১০ হাজার পরিবার। উপজেলার ৫নং পোল্ডারে একই এলাকার বসন্তপুর ও হাড়ৎদহ সীমান্তে কালিন্দী নদীর ওয়াপদায় ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে।
ইছামতি নদীতে মাছ ধরে, রোকেয়া, খাদিজা, মনিরুল, শরিফুল হোসেন বলেন, বেড়িবাঁধের ওয়াপদা অত্যান্ত ঝুকির মধ্যে আছে। এখনই মেরামত করা না হলে বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। পোর্ট বসন্তপুর গ্রামের ফজলুর রহমান বলেন, আমার বাড়ীর সামনে ভাঙন তৈরী হয়েছে। গত কয়েক বছর আমি ক্ষতির মধ্যে রয়েছি। বর্তমানে রাস্তার পাশে ঘর বেঁধে বসবাস করছি। সে রাস্তাটিও এখন ভাঙনের মুখে।
একই এলাকার বাসিন্দা বেলাল হোসেন বলেন, আমি আমার বাইক নিয়ে যাচ্ছিলাম। অনাকাঙ্টাক্ষিত ভাবে হঠাৎ আমার বাইকের সামনের চাকা গর্তের মধ্যে পড়ে। আমি বড় বিপদের হাত থেকে বেঁচে গিয়েছি। পথচারী আল আমিন হোসেন বলেন বলেন, নদীর সাথে ঘেঁষে থাকা সড়কটি দিয়ে দীর্ঘদিন যাতায়াত করি। যদি ভাঙন আরও বড় হয় তবে চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। বিকালে বসন্তপুর পোর্ট এলাকায় হাজার হাজার মানুষ ঘুরতে আসে। ওয়াপদা ভাঙ্গনের ফলে তাদের স্বাভাবিক চলাচল ব্যহত হবে।
এলাকাবাসীরা জানায়, ভাঙন শুরু পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন এবং উক্ত রাস্তা ভাঙ্গন রোধ করার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
মথুরেশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম বলেন, গত ২ বছর ধরে ভাঙন শুরু হয়েছে। তবে যে পাইপের তলা দিয়ে পানি সরে বর্তমান ভাঙন তৈরী হয়েছে তা আমরা বন্ধ রেখেছিলাম। কারা তা সচল করেছে তা আমাদের তদন্ত করে দেখতে হবে। মাত্র ১০ গজের ব্যবধানে ওয়াপদা ছিদ্র করে ২টি পাইপ বসানোর বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখ জনক।
ইতিমধ্যে কালিগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) অমিত কুমার বিশ্বাস ভাঙন কবলিত পোর্ট বসন্তপুর এলাকা পরিদর্শন করেছে। কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডল নিজে দুর্যোগ কবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে বলেন আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে অতিদ্রুত ভাঙন মেরামতের নির্দেশ দিয়েছি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী শুভ্র চন্দ্র বলেন, এই জায়গাটি আশংকাজনক ভাবে ভেঙে গেছে। আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনা স্থলে এসেছি। আমরা মেরামতের কাজ শুরু করে ও দিয়েছি। এর পাশাপশি ভাঙনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাছাড়া দ্রুত ওয়াপদায় অবৈধ পাইপ অপসারণ শুরু করা হয়েছে।
